ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

ফতোয়া নিয়ে আপিল বিভাগের চূড়ান্ত রায়

‘ফতোয়া শুধু ধর্মীয় বিষয়ে শিক্ষিতরাই দিতে পারবেন’

মুফতি এনায়েতুল্লাহ, বিভাগীয় সম্পাদক, ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১৫
‘ফতোয়া শুধু ধর্মীয় বিষয়ে শিক্ষিতরাই দিতে পারবেন’

শুধুমাত্র ধর্মীয় বিষয়ে শিক্ষিত ব্যক্তিরা ফতোয়া দিতে পারবেন। যা স্বেচ্ছায় গ্রহণ করা যাবে।

কিন্তু কোনো অবস্থাতেই তা গ্রহণে কাউকে কোনো রকমের বল প্রয়োগ বা অনুচিত প্রভাব প্রয়োগ করা যাবে না। কোনো ব্যক্তির অধিকার, মর্যাদা বা সম্মান (যা দেশের আইনে গণ্ডির আওতায় আসে) বিনষ্ট করে এমন কোনো বিষয়েও ফতোয়া দেওয়া যাবে না। এ ছাড়া ফতোয়া ব্যবহার করে কোনো ধরনের শারীরিক বা মানসিক নির্যাতনও কোনো ব্যক্তির ওপর আরোপ করা যাবে না। ফতোয়া নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের দেওয়া পূর্ণাঙ্গ রায়ে এসব কথা বলা হয়েছে। ২০১১ সালের ১২ মে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে সংক্ষিপ্ত রায় ঘোষণা করেছিলেন। প্রায় পৌনে চার বছর অপেক্ষার পর গত রবিবার ‘ফতোয়া’ নিয়ে আপিল বিভাগ ঘোষিত চূড়ান্ত ওই রায় লেখা শেষে বিচারপতিদের স্বাক্ষরসহ জনসাধারণের জন্য প্রকাশ করা হয়।

বেঞ্চের অন্য বিচারপতিরা হলেন- বিচারপতি (সাবেক প্রধান বিচারপতি) মো. মোজাম্মেল হোসেন, বিচারপতি (বর্তমান প্রধান বিচাপতি) এস কে সিনহা, বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিঞা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি মো. ইমান আলী। ১৩৮ পৃষ্ঠার রায়ে ফতোয়া কারা দিতে পারবে, ফতোয়ার প্রেক্ষাপট ও পর্যবেক্ষণসহ বিচারপতিদের মতামত তুলে ধরা হয়েছে। সংখ্যগারিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে দেওয়া এ রায় লিখেছেন আপিল বিভাগের বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। এর সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক, সাবেক প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন, বর্তমান প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা ও বিচারপতি মো. ইমান আলী। রায়ের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করে অভিমত দিয়েছেন বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞা। গত রবিবারই সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে পূর্ণাঙ্গ এ রায় প্রকাশিত হয়।

বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক তার রায়ে লিখেছেন, একজন মুফতি, মাওলানা অথবা ইমাম ফতোয়া ঘোষণা করতে পারেন, যদি তাকে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু তিনি দেশের কোনো আইন ভঙ্গ করতে পারেন না। একই সঙ্গে তাকে অন্যদের ফতোয়া বা মতামতের ব্যাপারে শ্রদ্ধাশীল থাকতে হবে।

মামলার প্রেক্ষাপট
২০০০ সালের ২ ডিসেম্বর একটি জাতীয় দৈনিকে ফতোয়া সংক্রান্ত একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়, নওগাঁ জেলার সদর উপজেলার কীর্তিপুর ইউনিয়নের আতিথা গ্রামের এক গৃহবধূকে ফতোয়া দিয়ে হিল্লা বিয়ে দিতে বাধ্য করা হয়। বিষয়টি নজরে এলে হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করেন। রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০০১ সালের ১ জানুয়ারি বিচারপতি গোলাম রাব্বানী ও বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা নেতৃত্বাধীন তৎকালীন হাইকোর্ট বেঞ্চ সব ধরনের ফতোয়াকে অবৈধ বলে রায় দেন। রায়ে বলা হয়, একমাত্র আদালতই মুসলিম বা অন্য কোনো আইন অনুযায়ী আইনসংক্রান্ত কোনো মতামত দিতে পারেন। কেউ ফতোয়া দিলে তা ফৌজদারি কার্যবিধির ১৯০ ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য হবে। ওই রায়ের বিরুদ্ধে মুফতি মো. তৈয়ব এবং মাওলানা আবুল কালাম আজাদ আপিল করেন। এরপর আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) ও নারীনেত্রী মালেকা বেগমসহ অন্যরা মামলায় পক্ষভুক্ত হন। ১০ বছর পর অর্থাৎ ২০১১ সালের ১ মার্চ আপিলের শুনানি শুরু হয়। শুনানিতে অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে পাঁচ জন আলেমসহ নয়জন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী বক্তব্য রাখেন। এরপর ওই বছরের ১২ মে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে সংক্ষিপ্ত রায় ঘোষণা করেন। সর্বশেষ দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হলো। এ রায়ের ফলে ফতোয়া নিয়ে সমাজে বিভ্রান্তি দূর হবে বলে মনে করছেন ইসলামী চিন্তাবিদরা।

ফতোয়া পরিচয়
আরবি ফতোয়া শব্দটির বহুবচনিক রূপ ফাতাওয়া। অর্থ: মতামত, রায়, অভিমত, বিশেষজ্ঞ বা আইনবিদের পরামর্শ, সিদ্ধান্ত, প্রশ্নের বা সমস্যার জবাব-সমাধান ইত্যাদি। পরিভাষায় ফতোয়া হলো, সমসাময়িক মানব সমাজে উদ্ভূত নিত্য-নতুন সমস্যা সম্পর্কে সে যুগের চিন্তাশীল গবেষক আলেম কিংবা মুফতি কর্তৃক কোরআন-হাদিসের ভিত্তিতে ও পূর্বসূরী বিদগ্ধ সত্যাশ্রয়ী আলেমদের অনুসৃত নীতির আলোকে শরিয়তের বিধান বর্ণনা করা।
লক্ষণীয়, যিনি ফতোয়া দিবেন তিনি সময়ের সংশ্লিষ্ট বিষয়ে শরিয়ার বিধান বর্ণনা বা ব্যাখ্যা করবেন আর তা করবেন কোরআন-হাদিস থেকে আহরিত দলিল-প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে। তাই মুফতির দলিল-প্রমাণহীন কোনো মত বা ব্যাখ্যা শরিয়ার ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ বা বিধান হতে পারে না এবং তা ফতোয়া নয়। সেটা বক্তিগত অভিমত বলে মনে করা হবে।

ফতোয়ার অপরিহার্যতা
একজন বিশ্বাসী মানুষ জীবনের সবক্ষেত্রে আল্লাহর নির্দেশনা মেনে চলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। মানব জীবনের এমন কোনো পর্যায় নেই যেখানে তিনি তার নির্দেশের আনুগত্যশীল থাকার বাধ্যবাধকতা থেকে মুক্ত। তিনি বিশ্বাস করেন কারো সামনে যদি মাথা নতই করতে হয় তবে তিনি হলেন একমাত্র আল্লাহ। সেই আল্লাহই নির্দেশ দিচ্ছেন, ‘হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা আনুগত্য করো আল্লাহর আর আনুগত্য করো এই রাসূলের এবং তাদের তোমাদের মধ্যে যাদের নির্দেশের অধিকার রয়েছে, তোমাদের মধ্যে কোনো বিষয়ে মতভেদ হলে তা নিয়ে আল্লাহ ও এই রাসূলের দিকেই প্রত্যাবর্তন করো যদি আল্লাহ ও কিয়ামত দিবসের প্রতি তোমরা সত্যিকার ঈমান পোষণ করো, এটাই উত্তম ও উৎকৃষ্টতর ব্যাখ্যা। ’

জীবনের বিস্তৃত অঙ্গনে যে সমস্ত প্রশ্ন বা সমস্যার উদ্রেক হয় ইসলাম উপস্থাপিত জীবন দর্শন থেকে দ্বিধা ও সংকোচমুক্ত মনে তার সমাধান গ্রহণ করা ঈমানের অপরিহার্য দাবী। প্রথম যুগের মুসলিমদের জন্য তা যেমন অপরিহার্য ছিল আজকের মুসলিমদের জন্যও তা সমভাবে অপরিহার্য। সে যুগের মুসলিমদের অপরিহার্যতা পূরণের জন্য আল্লাহ নিজেই তা বর্ণনা করেছেন, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) আল্লাহর দেওয়া বিধান ব্যাখ্যা ও জারী করার মাধ্যমে সমকালীন মানুষের প্রয়োজন মিটিয়েছেন। পরবর্তীতে সাহাবারা অত্যন্ত সতর্কতা ও গুরুত্বের সঙ্গে ক্রমবর্ধশীল মুসলিম সমাজ ও রাষ্ট্রের চাহিদাপূরণে ইজতিহাদ (নতুন মূলনীতি, আবিষ্কার, গবেষণা) ও কিয়াসের (সাদৃশ্যমূলক সিদ্ধান্ত) মাধ্যমে ফতোয়ার ব্যাপক প্রসার ঘটিয়েছেন। তারই ধারাবাহিকতায় পদ্ধতিগত ভিন্নতার কারণে গড়ে ওঠেছে বিভিন্ন মাজহাব। তাই আজও ফতোয়ার অপরিহার্যতা বিদ্যমান এবং অনাগত ভবিষ্যত কাল ধরে কিয়ামত পর্যন্ত তা বিদ্যমান থাকবে।

ফতোয়ার অধিকারিক কে?
সমাজের সূধীজন হিসেবে পরিচিত কেউ কেউ মনে করেন ফতোয়া কাণ্ডজ্ঞানহীন ও সমাজ-বাস্তবতা বিবর্জিত কিছু কাঠমোল্লাদের বিষয়। কিন্তু ওপরের আলোচনা থেকে আঁচ করা যাচ্ছে যে, ফতোয়ার বিষয়টি ভিন্নতর। কোরআনের সূরা আন নিসার ১২৭ ও ১৭৬ নং আয়াতদ্বয়ে হজরত নবী (সা.)-এর কাছে সমকালীন মুসলিমদের ফতোয়া প্রার্থনার জবাবে আল্লাহতায়ালা নিজেই ফতোয়া প্রদানের ঘোষণা দিয়েছেন। এতে প্রমাণ হয় তিনিই এর মালিক। তার এই ঘোষণা ফতোয়ার মাহাত্ম্য ও মুফতির মর্যাদাকে অতি উঁচু মার্গে উন্নীত করেছে। কার্যতঃ তিনিই প্রকৃত মুফতি, ফতোয়ার মূল অধিকারিক।

আল্লাহর রাসূল (সা.) তার জীবদ্দশায় ফতোয়া প্রদানের দায়িত্ব পালন করেছেন। এটা ছিল তার নবুওয়তের দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত। সূরা আন নাহল এর ৪৪নং আয়াতে এ ব্যাপারে আল্লাহতায়ালা নবী (সা.)-এর ওপর বাধ্যবাধকতা আরোপ করে ইরশাদ করেন, ‘তোমার প্রতি কোরআন অবতীর্ণ করেছি যাতে মানুষের প্রতি যা অবতরণ করা হয়েছে তা তুমি তাদের উদ্দেশ্যে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করে বুঝিয়ে দাও এবং যাতে লোকেরাও চিন্তা-ভাবনা করে। ’ এ আয়াতে আরবি ‘তুবাইয়্যিনা’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। এর অর্থ ‘ব্যাখ্যা করে বুঝানো। ’ বিশেষজ্ঞ আলেমরা ফতোয়াকে এ শব্দটির বিশেষ্য পদ দিয়েই সংজ্ঞায়িত করেছেন।
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর পর যারা ফতোয়া দিয়েছেন, এখনও দিচ্ছেন বা ভবিষ্যতে দিবেন তারা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের দায়িত্ব পালনে তার প্রতিনিধি।

আল্লাহতায়ালা মুসলমানদের তাদের কাছ থেকে জেনে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা যদি নিজেরা না জেনে থাকো তাহলে যাদের কিতাবের জ্ঞান আছে তাদের কাছ থেকে জেনে নাও। ’ এ ব্যাপারে ইসলামের মূলনীতি হচ্ছে, যাকে জ্ঞানের অমূল্য নিয়ামতে ভূষিত করা হয়েছে তিনি তা গোপন করবেন না। অন্যদিকে যিনি আলেম নন তার জন্য ফতোয়া প্রদান বৈধ নয়। এ প্রসঙ্গে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি না জেনে ফতোয়া প্রদান করবেন, এ সংক্রান্ত পাপ তার ওপর বর্তাবে। ’

মুফতি কে?
মুফতি এমন একজন আলেম যিনি প্রশ্নকর্তার উদ্দেশ্যে তার প্রার্থিত বিষয়ে অন্ধ অনুকরণের ভিত্তিতে নয় বরং গভীর অন্তদৃষ্টির সঙ্গে স্বচ্ছ বিচারবোধকে কাজে লাগিয়ে শরিয়ার বিধি-বিধান সুস্পষ্ট ভাষায় ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করেন। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তিনি শুধুই অভিমত (ফতোয়া) প্রকাশ করেন তার সে মত কোনো কাজীর বিচারিক রায়ের ন্যায় অবশ্য পালনীয় নয়। দার্শনিক ইবনুল মুনজিরের ভাষায় তিনি হচ্ছেন স্রষ্টা ও সৃষ্টির মধ্যকার সেতুবন্ধন, সুতরাং তার উচিত লক্ষ্য রাখা এই দুইয়ের মাঝে তিনি কি অবস্থান গ্রহণ করছেন। তার বিচারবুদ্ধির মৌলিকত্ব ও স্বাতন্ত্রিকতা এতদূর উন্নত হতে হবে যে, তিনি শুধু অতীত পণ্ডিতদের কথা ও যুক্তির উদ্ধৃতিকার হবেন না বরং তাদের সম্পাদিত ইজতিহাদে অধিকতর সঠিক ও শক্তিশালী মত কোনটি তা চিহ্নিত করতে সক্ষম হবেন। তিনি ফতোয়া দিবেন আল্লাহর বাণীর ভিত্তিতে অথবা রাসূলের সুন্নাহর ভিত্তিতে অথবা এ দুইয়ের সঙ্গে তুলনার ভিত্তিতে অথবা এ দুই উৎস থেকে লব্ধ মনীষার মতামতের ভিত্তিতে। আদর্শ মুফতির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হলো- বাস্তবতা, সমসাময়িক জনজীবন ও এর সমস্যা সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান থাকা। শরিয়ার লক্ষ্য উপলব্ধি না করে কোনো মুফতির ফতোয়া ঘোষণা করা উচিত নয়।

মুফতিদের ব্যক্তিত্বের ক্ষেত্রে পার্থক্য থাকায় তাদের ফতোয়াও পরস্পর থেকে পৃথক হতে পারে। কোনো মুফতি স্বভাবের দিক থেকে নরম মানুষ বলে ‘সহজ’ ফতোয়া দিতে পারেন। অন্য একজন মুফতি কঠোর প্রকৃতির কারণে ‘কড়া’ ফতোয়া দিতে পারেন। এসব মতপার্থক্য ফিকাহর (ইসলামী বিধান) মূলনীতির ভিত্তিতে হলে সমস্যা হয় না। ফিকাহর যাবতীয় বিষয়ে পুরো ঐকমত্য সৃষ্টি হওয়া অসম্ভব। কারণ, মুফতি নানা দিক বিবেচনা করে ফতোয়া দিয়ে থাকেন। একটি দৃষ্টান্ত দেওয়া যায় এ ব্যাপারে। এক দিন এক লোক এলো হজরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.)-এর কাছে। সে জিজ্ঞেস করল, কোনো খুনির তওবা আল্লাহতায়ালা কবুল করেন কি না। ইবনে উমর (রা.) তার দিকে তাকালেন এবং বললেন, না এমন লোকের তওবা গ্রহণ করা হবে না। প্রশ্নকারী ব্যক্তি চলে গেলে ইবনে উমর (রা.)-এর বন্ধুরা তাকে জিজ্ঞেস করলেন এই ফতোয়া সম্পর্কে। তারা তার কথা শুনে অবাক হয়েছিলেন। কারণ, এর আগে ইবনে উমর (রা.) লোকজনকে বলতেন, খুন করে কেউ তওবা করলে তা কবুল হবে। তাই এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলো। তিনি জবাব দিলেন যে লোকটি এসেছিল, তার দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারলাম, সে ওই মুহূর্তে এতটাই ক্রুদ্ধ যে, হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে ফেলতে পারে। আমি তখন চেয়েছি তাকে এই অপরাধ থেকে বিরত রাখতে। সে জন্যই তাকে ‘না’ বলেছি।

সে হিসেবে বলা যায়, আলেমদের অভিমত, ফতোয়া স্থান, কাল ও পরিস্থিতির নিরিখে বদলে যেতে পারে। প্রত্যেক ক্ষেত্রেই মুফতির থাকা চাই বাস্তবতার সম্যক উপলব্ধি যাতে সঠিক মতামত প্রকাশ করা যায় ও জাতি উপকৃত হয় এবং সামাজিক বিশৃঙ্খলা এড়ানো সম্ভব হয়।

পূর্ণাঙ্গ রায় পড়তে এখানে ক্লিক করুন

বাংলাদেশ সময় : ১৩০৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।