ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

বই হোক জীবনের নিত্যসাথী

মুফতি এনায়েতুল্লাহ, বিভাগীয় প্রধান, ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১, ২০১৫
বই হোক জীবনের নিত্যসাথী

আজ থেকে শুরু হলো অমর একুশে বইমেলা। ফি বছর বইপ্রেমীরা এ মেলার আপেক্ষায় থাকেন।

আর লেখক প্রকাশকরাও পুরো বছর মেলার প্রস্তুতিতে কমবেশি সময় ব্যয় করেন নিত্যনতুন বিষয় ও বই নিয়ে পাঠকের সামনে হাজির হতে।

মানব সভ্যতার সূচনা থেকে মানুষের বই পাঠের তথ্য পাওয়া যায়। বই পড়ার অভ্যাস মানুষের নীরবে কিংবা সরবে হলেও কালের পরিক্রমায় মানুষ তথ্য জানার জন্য বারবার কিছু পড়ার প্রতি মনোনিবেশ করেছে। বই পড়া মানুষের এমন একটি দক্ষতা, যার কারণে মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থার দ্রুত উন্নতি সাধন হয়। পাঠ অভ্যাস থেকে বিরত থাকা একটি অনেক বড় ধরনের অদক্ষতার পরিচায়ক।

অনেক সমাজ ও রাষ্ট্রে দেখা যায়, পাঠ কিংবা বই পড়ার আগ্রহ তৈরি করার জন্য তাদের তেমন কোনো কর্মসূচি নেই। তারা বিষয়টিকে অনেকটা ঐচ্ছিক মনে করেন। কিন্তু ইসলাম ধর্ম এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। পবিত্র ধর্ম ইসলামও মানুষকে পাঠের প্রতি উৎসাহ প্রদান করেছে। এ প্রসঙ্গে কোরআনে কারিমে বলা হয়েছে, ‘যারা জানে আর যারা জানে না তারা সমান হতে পারে না। ’

বই পড়া মানসিক প্রক্রিয়াকে সক্রিয় রাখে। বই পড়লে মস্তিষ্ক চিন্তা করার খোরাক পায়, সৃজনশীলতা বাড়ে এবং তথ্য ধরে রাখার ক্ষমতা সৃষ্টি হয়। বই পড়লে মানুষ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আধুনিক মনস্ক হয়ে ওঠে। মানব জীবনে বইয়ের গুরুত্বের কথা স্মরণ করে টলস্টয় বলেছেন, ‘জীবনে মাত্র তিনটি জিনিসের প্রয়োজন বই, বই এবং বই। ’

জ্ঞানার্জনের প্রধান মাধ্যম হচ্ছে বই। জীবনকে সফলতার আলোয় আলোকিত করার প্রধান উপায় হচ্ছে বই। বই পড়েই জ্ঞানার্জন করতে হবে। পৃথিবীতে যারা বড় হয়েছেন, জগদ্বিখ্যাত সফল মানুষ হয়েছেন, তারাই বেশি বেশি জ্ঞান অন্বেষণে সময় দিয়েছেন। পৃথিবীর যে কোনো বরেণ্য মনীষীদের জীবন ইতিহাস ঘাঁটলে এ কথার সত্যতা ধরা পড়ে। বই হচ্ছে শেখবার, জানবার ও জ্ঞানার্জনের অন্যতম প্রধান মাধ্যম। দেশ ও জাতি গঠনে বইয়ের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। শিক্ষা ছাড়া কোনো জাতির অগ্রগতি সম্ভব নয়। আর সহজ উপায়ে মানুষের মধ্যে শিক্ষা ও জ্ঞানের আলো ছড়াতে সমাজের জন্য বই অপরিহার্য। বইয়ের বিকল্প আর কিছুই হতে পারে না।

একজন মানুষ যে পেশায়ই দক্ষ হোক না কেন তার পেশাদারিত্বে উৎকর্ষতা অর্জনের জন্য বারবার বইয়ের কাছে ফিরে আসতে হয়। কারণ জ্ঞানের সূচনা সেখান থেকে এবং সে জ্ঞানকে সামগ্রিকভাবে কাজে লাগানোর দক্ষতা মানুষ বই পড়ে পেয়ে থাকে। মানুষের মননশীল, চিন্তাশীল, সৃষ্টিশীল চিন্তার যাবতীয় সূচনার বিস্ফোরণ একমাত্র বইয়ের মাধ্যমে হতে পারে। আর সেই বইয়ের বিপুল যোগান দিতে বইমেলার কোনো বিকল্প নেই। আজ থেকে শুরু হওয়া বইমেলা চলকে পুরো একমাস। মনকাড়া প্রচ্ছদ, রুচিশীল উপস্থাপনা আর বিষয় বৈচিত্র্যে অনন্য হয় প্রতিবারের বইমেলা। প্রত্যাশা করি এবারের বইমেলা তার ঐতিহ্য অক্ষুন্ন রেখে দেশব্যাপী জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দেওয়ার কাজ অব্যাহত রাখুক। সফল ও স্বার্থক হোক এবারের বইমেলা। বই হোক মানুষের নিত্যসাথী।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০১, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।