ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

সবচেয়ে ছোট সিলভারের কোরআন

মুফতি এনায়েতুল্লাহ, বিভাগীয় সম্পাদক, ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২১ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০১৫
সবচেয়ে ছোট সিলভারের কোরআন

রেকর্ডময় পৃথিবীতে রেকর্ডের কোনো অভাব নেই। এবার ভিন্ন ধরনের একটি রেকর্ড গড়লেন, দুবাইভিত্তিক ইরানি শিল্পী রাইন আকবার খানজাদেহ।

তিনি পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট সিলভারের কোরআন শরীফ তৈরি করে এ বিশ্ব রেকর্ড গড়েন। খবর আল আরাবিয়া নিউজের।

খানজাদেহ এ-৪ সাইজের চেয়েও ছোট দেড় শিট সিলভারে পুর্ণ কোরআন শরীফ অঙ্কন করেছেন। ধরাণা করা হচ্ছে, এই পৃথিবীতে সবচেয়ে ছোট কোরআনে কারিমের কপি। এই কাজটি শিল্পীর সর্বশেষ কাজ পবিত্র কোরআন শরীফ নিয়ে।

এর আগে গত ১২ বছর তিনি বহু ডিজাইনে কোরআনের নকশা ও কপি তৈরি করেছেন। খানজাদেহ বলেছেন, ১২ বছর আগে তিনি সিদ্ধান্ত নেন পবিত্র কোরআন শরীফ ও ইসলামের খেদমত করে যাবেন। ৩৩ বছর বয়সী খানজাদেহ ২০ বছর বয়স থেকে কোরআনের বিভিন্ন শিল্পকর্ম তৈরি করছেন। তিনি খালি চোখে সাধারণ আকারের শব্দের চেয়ে ৩০ গুণ ছোট শব্দ লিখতে ও পড়তে পারেন। তার বিশ্বাস যত বেশি কোরআন নিয়ে কাজ করেন ততই তার চোখের আলো বৃদ্ধি পায়।

খানজাদেহের সর্বশেষ করা কোরআনের ডিজাইনটি দু’টি সিলভার শিটে খোদাই করা। এটি তিনি তৈরি করেছেন ২৫ হাজার ছোট পাথর (জেমস্টোন) দিয়ে। যাতে ২০ ক্যারেট ডায়মন্ডের সঙ্গে ১০ ক্যারেট রুবি ও সমপরিমাণ নীলকান্ত মণি ব্যবহার করা হয়েছে। এই কোরআন শরীফটির ওজন ৬ কেজি।

কোরআন শরীফটি তৈরি করতে তার সময় লেগেছে ১০ মাস। আর এ জন্য তিনি প্রতিদিন ১০ ঘণ্টা করেছেন। সবচেয়ে মজার বিষয় হলো, গণিত ও কোরআনিক স্টাডিজে সম্মান ডিগ্রি নেয়া খানজাদেহ এ কাজের জন্য কারো কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নেননি। তিনি স্ব-প্রশিক্ষিত।

তার এই কোরআন শরীফটি তৈরিতে খরচ হয়েছে দেড় লাখ দেরহাম (প্রায় ৩৩ লাখ টাকা), সব টাকা নিজের জমানো ফান্ড থেকে ব্যয় করেছেন তিনি। তিনি কোনো স্পন্সর নেননি। কারণ এতে ব্যবসায়িক মানসিকতা চলে আসে। যেটা শিল্পীর পছন্দ নয় আর শিল্পের জন্যও নয়।

এ কাজ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, আমাদের কোরআনকে সম্মান করা উচিত। একে টাকা বানানোর মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা ঠিক নয়। খানজাদেহ এ ছাড়া কোরআন শরীফকে ২/১.৫ মিটার মাপেও কপি করেছেন। আর এসব কাজ কারও কোনো রকম সহায়তা ছাড়া একাই করেছেন। খানজাদেহের এসব শিল্পকর্ম আরব আমিরাতের জেনারেল অথরিটি অব ইসলামিক অ্যাফেয়ার্স ছাড়াও অনেক মুসলিম দেশের স্বীকৃতি পেয়েছে। সিলভারে করা সর্বশেষ ক্ষুদ্র কোরআন শরীফটিও কুয়েতসহ একাধিক মুসলিম দেশে পর্যায়ক্রমে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হবে।

এ কথা অস্বীকার্য যে, খানজাদেহ এর এই কাজ অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আশা করা হচ্ছে, খানজাদেহ এর এই কাজ গিনেসবুকে জায়গা করে নিবে। খানজাদেহ এর আগে গিনেস বিশ্ব রেকর্ড বুকে পাকিস্তানের পদার্থবিদ সাঈদ বিভানীর কপি করা কোরআনের কপিটি ছিল। কিন্তু খানজাদেহ এর কোরআনের কপিটির আলাদা বৈশিষ্ট্য হলো- এটা বিভানীর কোরআনের চেয়ে কয়েক গুণ ছোট প্রতিলিপি। এই কপিটি এ জন্য বেশি চিত্তাকর্ষক যে, খানজাদেহ এটা প্রস্তুত করতে কোনো মাইক্রোস্কোপ ব্যবহার করেননি। দর্শকও এটা খালী চোখে দেখার সুযোগ পাবেন।  

অন্যদিকে কাগজে লিখিত পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট কোরআনের কপিটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের এক নাগরিকের কাছে রক্ষিত আছে বলে কিছুদিন আগে আল জাজিরার খবরে এমনই দাবী করা হয়েছে।

খবরে বলা হয়- প্রায় ৪০০ বছরের পুরাতন এই কোরআন শরিফ উচ্চতায় মাত্র ৫ দশমিক ১ সেমি এবং প্রস্থে ৮ সেন্টিমিটার। এতে পৃষ্ঠা আছে ৫৫০টি। পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট কোরআনের হেফাজতকারী আরব আমিরাতের সেই নাগরিক অবশ্য খ্রিষ্ট ধর্মের অনুসারী। আমিল ঈসা নামের সেই নাগরিক বংশ পরম্পরায় কোরআনের ক্ষুদ্রতম কপির মালিক হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, পবিত্র কোরআনের ক্ষুদ্রতম এই কপিটি পাওয়া গেছে জেরুজালেমের আল কুদসের কাছে।

ইসলাম ডেস্ক মেইল: [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ১৩২২ ঘন্টা, মার্চ ১২, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।