ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

আত্মার রোগসমূহ

তাযকিরা খাতুন, অতিথি লেখক, ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৭ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০১৫
আত্মার রোগসমূহ

ইসলামের কিছু বিধি বিধানের সম্পর্ক যেমন মানুষের বাহ্যিক অঙ্গ প্রত্যঙ্গের সাথে রয়েছে, তেমনি কিছু বিষয়ের সম্পর্ক মানুষের আত্মার সাথে রয়েছে। তবে আত্মার সাথে সম্পৃক্ত বিষয়ের গুরুত্ব অনেক বেশি, কেননা বাহ্যিক আমল ঠিক হওয়া সত্ত্বেও কখনও কখনও আত্মা কলুষিত থাকে।

পক্ষান্তরে আত্মা পরিশুদ্ধ হলে বাহ্যিক আমলের দুর্বলতা কেটে যায়। এমনই অভিমত বিশেষজ্ঞ আলেমদের।

আত্মা সম্পর্কে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘জেনে রেখ, নিশ্চয় শরীরের মধ্যে এমন একটি গোশতের টুকরা আছে সেটা যখন পরিশুদ্ধ হয়, তখন পুরো শরীর ঠিক হয়ে যায়। আর যখন তা কলুষিত হয় তখন সমস্ত শরীর দূষিত হয়ে যায়। আর সেটা হচ্ছে কলব তথা আত্মা। ’ –বোখারি শরীফ

কিন্তু আফসোসের বিষয় হলো, আত্মার এই পরিশুদ্ধির বিষয়ে মানুষ একেবারেই উদাসীন। অথচ আত্মার ওপরই মানব জীবনের সাফল্য ও ব্যর্থতা নির্ভরশীল।

আত্মা যখন অসুস্থ হয় তখন শরীর আর স্বাভাবিক থাকে না। ভালো জিনিসও তখন ভালো লাগে না। ফলে ভালো কাজ ও নেক কাজ করতে মন চায় না। অর্থাৎ আত্মা অসুস্থ হলে তার প্রভাব সমস্ত শরীরে বিস্তার লাভ করে। তখন কান ভালো কথা শুনতে চায় না, মুখ ভালো কথা বলতে চায় না, পা ভালো কাজের দিকে যেতে চায় না।

যখন কোনো মানুষের অবস্থা এমন হবে, তখন বুঝতে হবে যে; তার আত্মা কলুষিত হয়ে গেছে, সে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। অভিজ্ঞ আলেমরা আত্মার যে সমস্ত রোগ হয়- তা দশ প্রকার বলে অভিমত দিয়েছেন। এসব রোগ হলো—

এক. অহংকার তথা নিজেকে বড়, ভালো এবং অন্যকে ছোট ও তুচ্ছ মনে করা।

দুই. আত্মাভিমান, গর্ব, দম্ভ ও অহমিকা ইত্যাদি।

তিন. দ্বীনের বিষয়ে উদাসীনতা প্রদর্শন।

চার. অকারণে কাউকে ঘৃণা করা, কারণ ছাড়া অন্যের সাথে শত্রুতাপোষণ করা ইত্যাদি।

পাঁচ. হিংসা বিদ্বেষ।

ছয়. মিথ্যা বলা।

সাত. অন্যের ব্যাপারে কুধারনা করা।

আট. ওয়াদা ভঙ্গ করা, কথা দিয়ে কথা না রাখা।

নয়. লৌকিকতা অর্থাৎ আল্লাহর সন্তুষ্টি ছাড়া অন্য কোনো উদ্দেশ্যে- যেমন লোক দেখানো কিংবা মানুষের কাছে সম্মান পাওয়া ও লোকমুখে প্রশংসা ইত্যাদি অর্জনের জন্য ইবাদত-বন্দেগি কিয়বা কোনো আমল করা।

দশ. গীবত তথা পিছনে অন্যের দোষ চর্চা করা। তা মুখের মাধ্যমে বা তাচ্ছিল্য করে চোখ বা হাত ইত্যাদির ইশারায় হোক কিংবা কারো কোনো চালচলন বা আচরণ নকল করে তামাশা করে হোক, সবই গীবত। এসব মারাত্মক গোনাহের কাজ।

উল্লেখিত বিষয়াবলী এছাড়া আরও কিছু রোগ আছে। যেমন—
কাউকে অপবাদ দেয়া, দোষারোপ করা, কারো প্রতি কুদৃষ্টি ইত্যাদি।

আল্লাহতায়ালা প্রত্যেক মুসলমানকে এ সব রোগ থেকে হেফাজত করুন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৭ ঘন্টা, মার্চ ২৯, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।