ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

‘আমল’

বিভিন্ন দুর্যোগ ও বিপদাপদ থেকে বেঁচে থাকার আমল

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১০ ঘণ্টা, মে ২, ২০১৫
বিভিন্ন দুর্যোগ ও বিপদাপদ থেকে বেঁচে থাকার আমল

কোরআনে কারিমে মানুষের উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে, ‘যারা, নিজেদের বিপদ-মুসিবতের সময় বলে- নিশ্চয় আমরা আল্লাহর জন্য এবং নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহরই দিকে প্রত্যাবর্তনকারী, তাদের ওপরই রয়েছে তাদের রবের পক্ষ থেকে মাগফেরাত ও রহমত এবং তারাই হেদায়েতপ্রাপ্ত। ’ -সূরা বাকারা : ১৫৭

উল্লেখিত আয়াতে একটি দোয়া রয়েছে।

সেটি হলো, ‘ইন্নালিল্লাহি, ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। ’ আয়াতে এই দোয়া অংশের আগে ও পরে কিছু কথা বলে মূল দোয়াটি বলা হয়েছে। কোরআনের ব্যাখ্যাকাররা বলেন, এর দ্বার বোঝা যায় যে, বিভিন্ন দুর্যোগ, বিপদাপদ ও ভয়ের সময় মানুষ আয়াতে উল্লেখিত দোয়াটি পড়বে। দোয়ার অর্থ হলো- নিশ্চয় আমরা আল্লাহর জন্য এবং নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহরই দিকে প্রত্যাবর্তনকারী।

হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে, ‘যখন কোথাও ভূমিকম্প সংঘটিত হয়, অথবা সূর্যগ্রহণ হয়, ঝড়োবাতাস বা বন্যা হয়, তখন মানুষের উচিত মহান আল্লাহর কাছে দ্রুত তওবা করা। তার কাছে নিরাপত্তার জন্য দোয়া করা এবং তাকে অধিক হারে স্মরণ করা এবং ক্ষমা প্রার্থনা করা। ’ -মুসলিম : ৬২৮

কোরআন ও হাদিসে বিভিন্ন দুর্যোগ ও বিপদাপদের করণীয় সম্পর্কে বলার পরও হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) মানুষকে যে কোনো বিপদে আল্লাহতায়ালার কাছে আশ্রয় নিতে বলেছেন। এমনকি স্থান, কাল ও পাত্রভেদে আল্লাহর কাছে দোয়ার ভাষা কেমন হবে, সে বিষয়েও দিকনির্দেশনা দিয়ে গেছেন।

সূরা গাফিরের ৬০নং আয়াতে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তোমরা আমার কাছে দোয়া করো, আমি তোমাদের দোয়া কবুল করব। সুনানে আবু দাউদে নুমান ইবনে বাশির (রা.) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘দোয়াই হলো ইবাদত। ’

তাই যে কোনো আকস্মিক বিপদ বিশেষ করে ঝড়, বন্যা, অগ্নিকাণ্ড ও ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষার জন্য অন্য সব সতর্কতা অবলম্বনের পাশাপাশি নিম্নের দোয়া দুইটি পড়া যেতে পারে।

ইবনে ওমর (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসূল (সা.) প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায় নিম্নোক্ত দোয়াটি পড়তেন-

দোয়ার উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল আফিয়াতা ফিদ্দুনিয়া ওয়াল আখিরা। আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল আফওয়া ওয়াল আফিয়াতা ফি দিনি ওয়া দুনইয়ায়া ওয়া আহলি ওয়া মা-লি। আল্লাহুম্মাসতুর আউরা-তি ওয়া আ-মিন রাউআ-তি। আল্লাহুম্মাহফাজনি মিন বাইনি ইয়াদাইয়্যা ওয়া মিন খালফি। ওয়া আন ইয়ামিনি ওয়া আন শিমালি ওয়া মিন ফাওক্বি। ওয়া আউজুবি আজমাতিকা আন উগতা-লা মিন তাহতি।

অর্থ : হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে দুনিয়া-আখেরাতের ক্ষমা ও নিরাপত্তা কামনা করছি। হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করছি মার্জনার আর কামনা করছি আমার দ্বীন ও দুনিয়ার, আমার পরিবার-পরিজনের এবং আমার সম্পদের নিরাপত্তার। হে আল্লাহ! আপনি আমার দোষ-ত্রুটিগুলো ঢেকে রাখুন, চিন্তা ও উদ্বেগকে শান্তি ও নিরাপত্তায় রূপান্তরিত করে দিন। হে আল্লাহ! আপনি আমাকে নিরাপদে রাখুন আমার সম্মুখের বিপদ থেকে এবং আমার পশ্চাতের বিপদ থেকে, আমার ডানের বিপদ থেকে এবং বামের বিপদ থেকে আর ঊর্ধ্বদেশ থেকে পতিত বিপদ থেকে। অাপনার মহত্ত্বের, দোহাই দিয়ে আপনার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি, আমার নিম্নদেশ থেকে আগত বিপদ তথা ভূমিধসে আকস্মিক মৃত্যু থেকে। -আবু দাউদ ও ইবনে মাজা

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বর্ণনা করেন, আল্লাহর রাসূল (সা.)-এর পাঠ্য দোয়াগুলোর মধ্য থেকে আরকটি দোয়া ছিল-

দোয়ার উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন জাওয়ালি নিমাতিকা ওয়াতাহাউলি আ-ফিয়াতিকা ওয়াফুজাআতি নিকমাতিকা ওয়াজামিয়ি সাখাতিক।

অর্থ : হে আল্লাহ! অবশ্যই আমি আপনার কাছে আপনার অনুগ্রহের অপসারণ, নিরাপত্তার প্রত্যাবর্তন, আকস্মিক পাকড়াও এবং যাবতীয় অসন্তোষ থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। ’ –মুসলিম

আল্লাহতায়ালা সবাইকে সব ধরনের বিপদ থেকে রক্ষা করুন। আমীন।

[মূল আরবির শুদ্ধ উচ্চারণ বাংলায় করা মুশকিল। ক্ষেত্রবিশেষ তা শুদ্ধও হয় না। তাই দোয়াগুলোর আরবি উচ্চারণ কোনো আলেমের কাছ থেকে শিখে নেয়া যেতে পারে। ]

বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘন্টা, মে ০২, ২০১৫
এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।