ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

কিয়ামত কতদূর

মোহাম্মদ মাকছুদ উল্লাহ, অতিথি লেখক, ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৬ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০১৫
কিয়ামত কতদূর

এটা স্বীকৃত বিষয় যে, নিজের জীবনের প্রতি মানুষের মমতা সবথেকে বেশি। তাইতো জীবনের যবনিকায় কেউ উপনীত হতে চায় না।

কেউ চায় না ধ্বংসের মুখোমুখি দাঁড়াতে। কিন্তু মহাযজ্ঞ, মহাপ্রলয় সকল চাওয়া-পাওয়ার অবসান ঘটিয়ে, সবার ইচ্ছা-অনিচ্ছার অবসান ঘটিয়ে সকল প্রাণের মৃত্যু ঘটাবে, সমগ্র প্রকৃতির বিনাশ সাধন করবে, পাহাড়-নদী, গাছ-গাছালি সবকিছুকে একাকার করে জগৎটাকে সৃষ্টি শূণ্যতায় এনে দেবে। হ্যাঁ, বলছি কিয়ামতের কথা।

মহান আল্লাহ জগৎটাকে সৃষ্টি করেছেন ধ্বংস করার জন্যেই। আর তাই মহাবিশ্বের অস্তিত্ব দেয়ার আগেই মহান স্রষ্ট্রা তার ধ্বংসের দিনক্ষণও ঠিক করে রেখেছেন। মুসলমান হিসেবে আমরা বিশ্বাস করি, কিয়ামত একদিন হবেই। কিন্তু সেটা আমার ওপর দিয়ে হোক এটা আমরা কেউ চাই না। চাই না কারণ সেটা চাওয়া যায় না- এর ভয়াবহতার প্রেক্ষিতে।

কিয়মাতের ভয়াবহতার কিঞ্চিৎ বিবরণ দিয়েছেন মহান আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে কারিমে। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মানব সকল! তোমরা তোমাদের রবকে ভয় কর, নিশ্চয়ই কিয়ামতের কম্পন হবে অত্যন্ত ভয়াবহ। সেদিন তোমরা তা চাক্ষুষ দেখতে পাবে, দুগ্ধদায়ী প্রত্যেক নারী তার দুগ্ধপোষ্য সন্তানকে ভুলে যাবে, সকল গর্ভবর্তী প্রাণী নিজের গর্ভপাত ঘটিয়ে ফেলবে, যখনই তুমি মানুষকে দেখবে তোমার মনে হবে তারা মাতাল। কিন্তু আসলে তারা মাতাল হবে না, বস্তুত আল্লাহতায়ালার আজাব হবে অত্যন্ত ভয়াবহ। ’ -সূরা আল হজ: ১-২

কিয়ামত কবে হবে তা একমাত্র আল্লাহপাক রাব্বুল আলানিই জানেন। এ বিষয়ে ইরশাদ হয়েছে, ‘তারা আপনাকে কিয়ামত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে, কবে তা সংঘটিত হবে? আপনি বলে দিন, এর জ্ঞান কেবলমাত্র আমার রবের নিকটে আছে। তা হবে আসমান জমিনের জন্য এক ভয়ঙ্কর ঘটনা। তোমাদের ওপর তা হঠাৎ করেই আসবে। তারা আপনাকে এমনভাবে জিজ্ঞাসা করে কেমন যেন আপনি এ বিষয়ে সবিশেষ অবগত আছেন। আপনি বলুন, এর জ্ঞান কেবল আল্লাহর নিকটে, কিন্তু তারা অধিকাংশই তা জানে না। ’ -সূরা আল আরাফ: ১৮৭

কিয়ামত কবে হবে তা কেউ না জানলেও হজরত রাসূলে কারিম (সা.) কিয়ামতের কিছু আলামতের বিবরণ দিয়ে গেছেন, যা দেখে অনুমান করা যায় কিয়ামত আর কতদূর!

হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) কর্তৃক ভবিষ্যতবাণীকৃত কিয়ামতের আলামতসমূহের অনেকগুলোই ইতোমধ্যে প্রকাশ পেয়েছে। দেশের চলমান সামাজিক প্রেক্ষাপটে একটি হাদিসের উদ্বৃতি এ বিষয়ে বিশেষভাবে উল্লেখ্য।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেছেন, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে মহান সত্ত্বার হাতে আমার জীবন তার নামে শপথ করে বলছি, পৃথিবীতে মানুষের ওপর এমন একটা সময় আসবে যে যখন হত্যাকারী জানবে না সে কি কারণে হত্যা করল আর নিহত ব্যক্তিও জানবে না কেন তাকে হত্যা করা হল। -সহিহ মুসলিম

হাল সময়ে সমাজে অকারণ হত্যাকাণ্ড এতটাই বেড়ে গেছে যে, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর ভবিষ্যতবাণীর নিরিখে মনে প্রশ্ন জাগে, তবে কিয়ামত আর কতদূর?

আচ্ছা, বলুন রাজনের কি অপরাধ ছিল? রাজা কেন নিহত হল? রাকিবকে এভাবে মরতে হবে তা কি কারো জানা ছিল? এভাবে সাম্প্রতিক সময়ের হত্যাকাণ্ডগুলো  আমাদেরকে ভীষণভাবে শঙ্কিত করে তোলে, ‘তাহলে আমরা কি মহাপ্রলয়ের খুব কাছে এসে গেছি!’

লেখক : ইমাম ও খতিব, রাজশাহী কলেজ কেন্দ্রীয় মসজিদ

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৭ ঘন্টা, আগস্ট ২৩, ২০১৫
এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।