ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

শারীরিকভাবে সামর্থ্য থাকা অবস্থায়ই হজে যাওয়া উচিত

মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, অতিথি লেখক ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২২ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০১৫
শারীরিকভাবে সামর্থ্য থাকা অবস্থায়ই হজে যাওয়া উচিত

হজ করার মতো আর্থিক সামর্থ্যবান লোক এদেশে প্রচুর থাকলেও সে হারে মানুষ হজে যায় না। তবে যে পরিমাণ মানুষ হজে যাচ্ছেন তাও কিন্তু কম নয়।

একাধিকবার হজে গমন করা এখন অনেকের নেশায় পরিণত হয়েছে। যদিও সৌদি আরবের হজ মন্ত্রণালয় একই ব্যক্তির বারবার হজে গমনের ক্ষেত্রে নিরু‍ৎসাহিত করে চলছে।
 
হজে গমন করার মৌলিক শর্ত সামর্থ্যবান হওয়া। ধারদেনা করে ধনসম্পদ বিক্রি করে স্বীয় পরিবারকে বিপদে ফেলে হজে যাওয়ার ক্ষেত্রে ইসলামের অনুমোদন নেই। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তির বায়তুল্লাহর হজ করার মতো পাথেয় ও  যানবাহন আছে অথচ হজ পালন করল না, সে ইহুদি কিংবা খ্রিস্টান হয়ে মারা গেল কি-না তা বলা যায় না। ’ -তিরমিজি

হজের বাধ্যবাধকতা সারাজীবনে মাত্র একবার। সামর্থ্যবান হওয়ামাত্রই একবারের বেশি যতবারই হজ করা হোক না কেন, তা নফল ইবাদতের মর্যাদা ছাড়া আর কিছু নয়।

লোক দেখানো হিসেবে কোনো ব্যক্তি যদি বারবার হজে গমন করে, তবে তা নিছক ভ্রমণ হবে। ধর্মীয় অনুশাসনের সঙ্গে এর সম্পর্ক নেই। তবে যাদের ওপর হজ ফরজ তাদের উচিৎ হলো এ ফরজ অতিদ্রুত আদায় করে নেওয়া।

হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি হজ করেনি এবং মালের জাকাত আদায় করেনি, মৃত্যুকালে সে দুনিয়ায় ফিরে আসার প্রার্থনা করবে। তখন তাকে জিজ্ঞেস করা হলো যে, দুনিয়ায় ফিরে আসার প্রার্থনা তো কেবল কাফেররাই করবে (বলে আমরা জানি)। তিনি বললেন, এ কথা তো আল্লাহর কিতাবেই বর্তমান রয়েছে। আল্লাহতায়ালা বলেছেন, ‘তোমরা কারো মৃত্যু আসার পূর্বেই আমি যে জীবনোপকরণ দিয়েছি তা থেকে খরচ কর। অন্যথায় মৃত্যু এলে সে বলবে, ও আমার পরওয়ারদেগার। আমাকে আরও কিছুদিনের জন্য অবকাশ দিলে আমি দান-খয়রাত করতাম, অর্থাৎ জাকাত আদায় করতাম এবং স‍ৎকর্মপরায়ণ হতাম। হজ পালন করতাম। কিন্তু নির্ধারিত সময় যখন এসে যাবে তখন আর কাউকে কখনও অবকাশ দেবেন না। তোমরা যা কর আল্লাহ্ সে সম্পর্কে সর্বশেষ অবহিত। ’ –সূরা মুনাফিকুন: ১০-১১

হজ ইসলামের অন্যতম মৌলিক স্তম্ভ। যা আর্থিক সচ্ছলতার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। আমাদের সমাজে হজে যাওয়ার মতো আর্থিক সামর্থ্যবান অসংখ্য মানুষ আছেন। তাদের অনেকেই সারাজীবন ব্যবসাবাণিজ্য, রাজনীতি ও নানাবিধ কর্মব্যস্ততায় কাটিয়ে দেন। গোটা জীবনে হজের জন্য একটি মাস বরাদ্দ করতে পারেন না। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

হজ আদায়ের ক্ষেত্রে আলেমদের পরামর্শ হলো, আপনার সামর্থ্য আছে আর্থিকভাবে, সুতরাং আর বিলম্ব নয় এখনই হজ আদায় করে ফেলুন। প্রত্যেকের শারিরীকভাবে সামর্থ্য থাকা অবস্থায় হজে যাওয়া উচিত। কারণ হজের সফরে বেশ কষ্টসাধ্য কিছু আমল করতে হয় যা শারিরীকভাবে সামর্থ্য না থাকলে কষ্টদায়ক বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। যদিও বিকল্প ব্যবস্থা আছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২২ ঘন্টা, আগস্ট ২৬, ২০১৫
এমএ/

** কবুল হজের বিনিময় নিশ্চিত জান্নাত
** রিকশা চালিয়ে হজের টাকা জোগাড়
** পবিত্র কাবা শরিফের মর্যাদা
** হজে যাওয়ার আগে বান্দার হক পূরণ করে যেতে হবে
** হজের সফরে মৃত্যুবরণকারীর মর্যাদা
** পকেটমারতে হজে যাওয়া, এ লজ্জা রাখি কোথায়?
** হারাম শরিফে নামাজ ও তাওয়াফের ফজিলত
** হজের সফরে খরচের প্রতিদান ব্যয় অনুপাতে প্রদান করা হবে
** হজযাত্রীদের জন্য যা জানা জরুরি
** মক্কা শরিফের দর্শনীয় কিছু স্থান
** কবুল হজের জন্য যে আমল বেশি বেশি করা দরকার
** হজ ফরজ হওয়ার শর্ত ও প্রকারসমূহ
** বদলি হজ আসলে কী?

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।