ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

আমেরিকায় ইসলাম প্রচারে ব্যবহৃত হচ্ছে বিলবোর্ড

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৬, ২০১৫
আমেরিকায় ইসলাম প্রচারে ব্যবহৃত হচ্ছে বিলবোর্ড

ইসলাম ধর্মের প্রচার ও ইসলাম সম্পর্কে মানুষের ভুল ধারণার অবসান ঘটাতে নতুন পদ্ধতি যোগ হয়েছে মার্কিন মুলুকে। আর এ কাজে ব্যবহার করা হয়েছে বিজ্ঞাপনের অন্যতম অনুষঙ্গ বিলবোর্ড।

দেশটির প্রধান প্রধান শহরগুলোতে বড় বড় বিলবোর্ড স্থাপন করা হয়েছে। এসব বিলবোর্ডে শেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর বিভিন্ন বাণী তুলে ধরা হয়েছে। গভীরভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ইসলাম ধর্মের বিশ্বাসকে। এভাবে ইসলামের বাণী প্রচারের ধারণা ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে জনসাধারণের মাঝে। উৎসুক জনগণকে দেখা গেছে ভীড় করে সেসব বিলবোর্ড পড়তে। খবর এপির।

এছাড়াও বিভিন্ন ধর্ম সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে কারিমে কি বলা হয়েছে, ওই বিষয়গুলো জানার জন্য সবাইকে আহ্বান জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে এসব বিলবোর্ডে হটলাইন ও ওয়েবসাইটের ঠিকানা উল্লেখ করা হয়েছে, যাতে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ইসলাম সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানা যায়।

এসব বিলবোর্ড স্থাপন করা হয়েছে বোস্টন, নিউইয়র্ক, ফিনিক্স, সান দিয়াগো, এল পাসো অ্যান্ড অস্টিন, টেক্সাস, মেম্ফিস, টেনেসি, ক্লিভল্যান্ড, লাস ভেগাস, নিউ জার্সি, নর্থ বার্জেন, পোর্টল্যান্ড, অরেগন, পেনসিলভ্যানিয়া, ডেনভার, ক্যালগারি, ব্রিটিশ কলম্বিয়াসহ প্রভৃতি শহরে।

‘ইসলামিক সার্কেল অব নর্থ আমেরিকা (আইসিএনএ)’ নামে একটি সংস্থা তাদের ন্যাশনাল ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে এসব বিলবোর্ড স্থাপন করেছেন।

মানুষের মাঝে ইসলামের বাণী নতুন এ পদ্ধতিতে প্রচারের উদ্যোক্তা ও সংস্থার প্রেসিডেন্ট নাঈম বেগ এ বিষয়ে বলেন, ধর্মবিশ্বাস সম্পর্কে মানুষের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং আমেরিকান মুসলমানদের ব্যাপারে পুরো যুক্তরাষ্ট্রে যে কল্প-কাহিনী রয়েছে তা দূর করাই এই ক্যাম্পেইনের উদ্দেশ্য।

তিনি বলেন, দেশজুড়ে ১০০টি বিলবোর্ড স্থাপনের লক্ষ্যে এরই মধ্যে ৩০টি স্থাপন করা হয়েছে। নাঈম বেগ বলেন, আমেরিকানরা নবী মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে জানতে খুবই আগ্রহী। তদের মনে অনেক প্রশ্ন রয়েছে। বিলবোর্ড স্থাপনের পর থেকে আমাদের হটলাইনে অসংখ্য ফোন এসেছে এবং ওয়েবসাইট ভিজিট করা হয়েছে। এসব দেখে আমরা খুবই উচ্ছ্বসিত।

এসব বিলবোর্ডে লেখা আছে, ‘মুহাম্মাদ (সা.) শান্তি, সামাজিক ন্যায়বিচার, নারীর অধিকারে বিশ্বাস করেন। ’ ‘মুহাম্মদ (সা.) সবসময়ই ভালোবাসাতে শিখিয়েছেন, ঘৃণা নয়; শান্তির কথা বলেছেন, হিংস্রতা নয়। ’ অনেক বিলবোর্ডে লেখা রয়েছে ‘স্রষ্টা কখনো চেহারা ও স্বাস্থ্য দেখে বিচার করেন না। ’

নাঈম বেগ জানান, প্রতিটি বিলবোর্ডে প্রতিমাসে গড়ে ৩ হাজার মার্কিন ডলার ব্যয় হয়। আমেরিকান মুসলমানদের দানের টাকায় এই ব্যয় বহন করা হচ্ছে।

ইসলামের নামে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের খবরসমূহ শুনতে শুনতে আমেরিকানরা রীতিমতো বিরক্ত। তাদের এই অযাচিত বিরক্তি অনেকটাই কেটে যাচ্ছে এই প্রচেষ্টার মাধ্যমে। উদ্যোক্তদের দাবী, বিলবোর্ড স্থাপনের পর থেকে প্রতিমাসে শত শত কল রিসিভ করছে সংস্থা এবং তাদের ৭০ শতাংশই পজিটিভ। বিলবোর্ডের মাধ্যমে পথচারীদেরকে টোলফ্রি নম্বর 1-877-Why-Islam তে কল করে অথবা http://www.WhyIslam.org এই ওয়েবসাইটে গিয়ে জিহাদ, সন্ত্রাস, নারী অধিকার সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর জানতে আমন্ত্রণ জানানো হয়। ইচ্ছে করলে আমাদের কাছ থেকে বিনামূল্যে অর্থসহ কোরআনে কারিমও সংগ্রহ করতে পারেন। অনেকে কোরআনে কারিম পেতে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে।

‘যখন কোনো লোক মহানবী (সা.)-এর শিক্ষার অপব্যবহার করে এবং আমার ধর্মবিশ্বাসকে অপব্যবহার করে তখন একজন মুসলিম হিসেবে আমি আহত হই’ বলছিলেন এ উদ্যোগের একজন মাসরুর খান। তার মতে, আসলে কিছু মানুষ ইসলামকে ভুলভাবে বুঝেছে আমরা তাদের সে ধারণার পরিবর্তন চাই।

সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবী বোস্টন নিবাসী কলেজ ছাত্র বিলাল সিদ্দিকী বলেন, প্রথমে ফোন করে অনেক লোক ঘৃণা ছড়ালেও অভিজ্ঞ লোকদের সঙ্গে কথা বলার পর তাদের সুর নরম হয়েছে এবং তারা ইসলাম সম্পর্কে জানতে আরো বেশি আগ্রহী হয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৫ ঘন্টা, সেপ্টেম্বর ০৬, ২০১৫
এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।