ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

অস্ট্রিয়ায় বিখ্যাত সবুজ গম্বুজের মসজিদ

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০১৬
অস্ট্রিয়ায় বিখ্যাত সবুজ গম্বুজের মসজিদ ভিয়েনা ইসলামিক সেন্টার ও মসজিদ

ইউরোপে জাতিভিত্তিক রাষ্ট্র হয়েও অস্ট্রিয়া একশ’ বছরের বেশি সময় আগে (১৯১২ সালে) ইসলাম ধর্মকে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি দিয়ে সেখানে বসবাসকারী মুসলমানদের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি জানায়। রোমান ক্যাথলিকদের পরেই দেশটিতে ইসলাম হচ্ছে দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্ম।

বিশ্বের তেল রফতানিকারী দেশের সংস্থা ওপেকের সদর দফতর পশ্চিম ইউরোপীয় দেশ অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায়। এ শহরেই জাতিসংঘের তৃতীয় সদর দফতর অবস্থিত। ভিয়েনার কোল ঘেষে বয়ে গেছে বিখ্যাত দানিউব নদী। এর অসাধারণ সুন্দর পাড়েই বিখ্যাত ভিয়েনা ইসলামিক সেন্টার ও মসজিদের অবস্থান। একটি মিনার ও সবুজ রঙের এক গম্বুজের মসজিদটি দেখতে বেশ সুন্দর। বিশাল গম্বুজের নিচে মূল নামাজের স্থান।

মসজিদের সামনে রয়েছে গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা, পাশে ওজুর ব্যবস্থা। পেছন দিকে শিশুদের খেলাধুলার স্থান। রয়েছে নারীদের জন্য প্রবেশের আলাদা পথ। পুরো মেঝেতে কার্পেট পাতা, সাজানো-গোছানো সুন্দর ছিমছাম পরিবেশ। বারান্দায় আলমারিতে বিভিন্ন ইসলামিক বইপত্র সাজানো আছে। বাঁ-পাশে আলাদা কক্ষ।

১৯৬৮ সালে একটি মসজিদ তৈরির জন্য অস্ট্রিয়া সরকারের সহায়তায় দানিউব নদীর কাছে ৮ হাজার ৬০০ বর্গমিটার জমি ক্রয় করে আটটি ইসলামিক রাষ্ট্র। কিন্তু আর্থিক সংকটের কারণে এর নির্মাণ কাজ শুরু হতে বিলম্ব হয়। পরে সৌদি বাদশাহ ফয়সাল বিন আবদুল আজিজ আল সৌদের আর্থিক সহায়তায় ১৯৭৭ সালের ১ জুলাই মসজিদটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। দুই বছরের বেশি সময়ে এটি সম্পন্ন হয় ১৯৭৯ সালের নভেম্বরে এসে।

১৯৭৯ সালের ২০ নভেম্বর এ বৃহত্তম মসজিদটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন অস্ট্রিয়ার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রুডফ ক্রিসেলগার। মসজিদের গম্বুজটির উচ্চতা ১৬ মিটার এবং ব্যাস ২০ মিটার। মিনারটির উচ্চতা ৩২ মিটার। এ কেন্দ্রটি মসজিদ ছাড়াও ইসলামি শিক্ষা ও ইসলামিক সংস্কৃতি বিকাশে সহায়তা প্রদান করে থাকে। এ কেন্দ্রের প্রধান হলেন ড. হাসিম আল মাহরগি।

অস্ট্রিয়ায় মুসলমানদের সংখ্যার হার মোট জনসংখ্যার প্রায় ৬ ভাগ। ২০১৫ সালের হিসাব অনুযায়ী ভিয়েনায় এ হার ৯.৮২ শতাংশ। সে হিসাবে দেশটিতে মুসলমানের সংখ্যা ৯ লাখের কাছাকাছি।

ভিয়েনায় এই ইসলামি কেন্দ্র ও মসজিদ ছাড়া আরও ১২৫টির মতো মসজিদ রয়েছে। এ ছাড়া রাজধানী ভিয়েনার বাইরে গ্রাস, সালসবব্রুর্গ, লিনস ও ক্লাগেনফুট শহরেও বেশ কয়েকটি মসজিদ আছে।

সবচেয়ে মজার বিষয় হলো- সেখানকার প্রবাসী বাংলাদেশি মুসলমানদের পরিচালিত পাঁচটি মসজিদ রয়েছে। যেগুলোতে নিয়মিত নামাজ আদায়ের পাশাপাশি কোরআন শিক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে।

অস্ট্রিয়ার মসজিদে বিদেশি কেউ ইমামতি করতে পারেন না। সব ইমামকে জার্মান ভাষায় কথা বলার যোগ্যতা থাকতে হয় এবং ভিয়েনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামি প্রোগ্রাম থেকে উত্তীর্ণ হয়ে অথবা সমমানের অন্য কোনো প্রশিক্ষণে উত্তীর্ণ হয়ে তাদের ‘পেশাগত যোগ্যতা’ প্রমাণ করতে হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২১২৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০১৬
এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।