ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

ইসলাম

নারীকে কল্যাণময়ী হিসেবে গড়ে তোলা ইসলামের অন্যতম লক্ষ্য

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৬
নারীকে কল্যাণময়ী হিসেবে গড়ে তোলা ইসলামের অন্যতম লক্ষ্য ইসলাম জ্ঞান-বিজ্ঞান, চিন্তা, সমাজ ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রসহ আধ্যাত্মিক এবং অন্যসব গুণের ক্ষেত্রে নারীকে সর্বোচ্চ অবস্থানে দেখতে চায়

ইসলাম জ্ঞান-বিজ্ঞান, চিন্তা, সমাজ ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রসহ আধ্যাত্মিক এবং অন্য সব গুণের ক্ষেত্রে নারীকে সর্বোচ্চ অবস্থানে দেখতে চায়। পরিবার ও মানবসমাজের সদস্য হিসেবে নারীকে সবচেয়ে কল্যাণময়ী হিসেবে গড়ে তোলাও ইসলামের অন্যতম লক্ষ্য।

ইসলাম জ্ঞান-বিজ্ঞান, চিন্তা, সমাজ ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রসহ আধ্যাত্মিক এবং অন্য সব গুণের ক্ষেত্রে নারীকে সর্বোচ্চ অবস্থানে দেখতে চায়। পরিবার ও মানবসমাজের সদস্য হিসেবে নারীকে সবচেয়ে কল্যাণময়ী হিসেবে গড়ে তোলাও ইসলামের অন্যতম লক্ষ্য।

যেমন আল্লাহতায়ালা কোরআনে কারিমে স্পষ্টভাবে বলেছেন, সব মানুষ এক পরিবারের। সূরা নিসার প্রথম আয়াতে আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘হে মানবজাতি! সেই রবকে তুমি মানো যিনি তোমাদের একটি মূল সত্তা থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং সেই সত্তা থেকে তার সাথিকে সৃষ্টি করেছেন এবং এই দু’জন থেকে তিনি অসংখ্য নারী ও পুরুষ সৃষ্টি করেছেন। ’

এ বিশ্বের যা কিছু কল্যাণকর তার অর্ধেকই নারী জাতির অবদান। কিন্তু এই সভ্যতার যুগেও প্রতিদিন বহুসংখ্যক কন্যা শিশু, কিশোরী, যুবতী কিংবা নারী অমানবিকতা, নৃশংসতা, পাশবিকতা এবং নানা ধরনের মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।  

এটা একটা স্পষ্ট, নারীর অধিকার ও সম্মান যদি যথাযথভাবে উপলব্ধি করা হয় তাহলে সমাজে নারীর অবস্থার দ্রুত উন্নতি ঘটবে। তাই ইসলাম নারীকে সবচেয়ে বেশি মর্যাদা দিয়েছে। নারী হচ্ছে মানবীয় সত্তার এক কোমল ও সুন্দর অংশ। নারী মহান আল্লাহর এক অসাধারণ সৃষ্টি। কারণ পুরুষের উন্নতি ও পূর্ণতার পথে নারীর সহযোগিতা অপরিহার্য।

ইসলামের দৃষ্টিতে বৈজ্ঞানিক উন্নতি, সামাজিক অগ্রগতি, গঠনমূলক কাজ এবং বিশ্বের ব্যবস্থাপনা বা পরিচালনার কাজে দায়িত্ব পালনের জন্য নারীকে অবশ্যই সুযোগ দেওয়া উচিত।

প্রত্যেক সুস্থ সমাজেই নারীর রয়েছে প্রয়োজনীয় যোগ্যতা। এদিক থেকে নারী ও পুরুষের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। নারী ও পুরুষ নির্বিশেষে মানবজাতি সৃষ্টির উদ্দেশ্য অভিন্ন। একজন মানুষের পক্ষে যত বেশি সম্ভব ভালো গুণাবলি অর্জন করা ও পূর্ণতার শিখরে পৌঁছাই মানব সৃষ্টির উদ্দেশ্য।

পবিত্র কোরআনে ভালো মানুষ এবং মন্দ মানুষের উদাহরণ দেওয়ার সময় নারী ও পুরুষ উভয়েরই দৃষ্টান্ত দেওয়া হয়েছে। নারীরা প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে সবসময়ই সংকট বা সমস্যার উৎস ছিল- এমন ভুল ধারণা দূর করা এবং নারীর মানবীয় মর্যাদা তুলে ধরার জন্যই পবিত্র কোরআন এ ধরনের দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেছে।

কোরআন-হাদিসে বহু বিখ্যাত নারীর বর্ণনা আছে, যারা নিজ নিজ অবস্থানে সেরা ছিলেন। এমনকি কোরআন-হাদিসের বিভিন্ন জায়াগায় নারীদের প্রশংসা করা হয়েছে। কোরআনে কারিমে ‘নিসা’ অর্থাৎ ‘মহিলা’ শব্দটি ৫৭ বার এবং ‘ইমরাআহ’ অর্থাৎ ‘নারী’ শব্দটি ২৬ বার উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া পবিত্র কোরআনে ‘নিসা’ তথা ‘মহিলা’ শিরোনামে নারীর অধিকার ও কর্তব্য সংক্রান্ত একটি স্বতন্ত্র বৃহৎ সূরা রয়েছে। রয়েছে কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে নারীর অধিকার, মর্যাদা ও তাদের মূল্যায়ন সম্পর্কে সুস্পষ্ট বর্ণনা। কোরআনের পাশাপাশি পবিত্র হাদিসের বর্ণনাতেও নারীর ন্যায্য অধিকার, জান-মালের নিরাপত্তা ও সম্মান বিষয়ে আলোচনা রয়েছে।

বস্তুত নারী তার নারীত্বের মর্যাদা বজায় রেখে সমাজের উন্নয়নে ভূমিকা রেখেছেন ও রাখছেন। নারী ছাড়া অন্য কেউই মাতৃত্বের সেবা ও সহধর্মিণীর গঠনমূলক সহযোগী ভূমিকা পালন করতে সক্ষম নয়। মায়েদের ত্যাগ ও ভালোবাসা ছাড়া মানবীয় প্রতিভার বিকাশ ও সমাজের স্থায়িত্ব বজায় রাখা সম্ভব নয়। মায়েরাই সমাজের প্রধান ভিত্তি তথা পরিবারের প্রশান্তির উৎস।  

তাই ইসলাম জ্ঞান-বিজ্ঞান, চিন্তা, সমাজ ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রসহ আধ্যাত্মিক এবং অন্যসব গুণের ক্ষেত্রে নারীকে সর্বোচ্চ অবস্থানে দেখতে চায়। সে লক্ষে ইসলাম নারীর জন্য যে সীমাবদ্ধতা দিয়েছে তা তার নারীসুলভ প্রকৃতির সঙ্গে মানানসই।

ইসলামে পুরুষের ক্ষেত্রেও ভিন্ন আঙ্গিকে এ ধরনের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এই সীমাবদ্ধতা নারী ও পুরুষের প্রতিভার অপচয় রোধ করে। এটাকে ভিন্ন অর্থে বুঝা বোকামি। আর এটা কাম্যও নয়।  

বাংলাদেশ সময়: ২১২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৬
এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।