ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

সদাচরণের অভাবে মানবসমাজে অশান্তি বাড়ছে

মাহফুজ আবেদ, অতিথি লেখক, ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪০ ঘণ্টা, জুলাই ৪, ২০১৭
সদাচরণের অভাবে মানবসমাজে অশান্তি বাড়ছে সদাচরণের অভাবে মানবসমাজে অশান্তি বাড়ছে

সবার সঙ্গে মিলেমিশে থাকা এবং সবার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করা ঈমানের অংশ। যারা মানুষের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করেন, তাদেরকে সবাই পছন্দ করে।

ইসলামের দৃষ্টিতে ভালো ব্যবহার বা সদাচরণের গুরুত্ব অপরিসীম। মহানবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘মহৎ গুণাবলীর পূর্ণতা দেওয়ার জন্যই আমাকে পাঠানো হয়েছে।

সদাচরণের গুরুত্ব সম্পর্কে নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তির হাত ও মুখ থেকে অন্য মুসলমান নিরাপদ তাকেই প্রকৃত মুসলমান বলা হয়। ’

সদাচরণের অভাবে মানবসমাজ থেকে সুখ-শান্তি বিদায় নিচ্ছে, দিন দিন অশান্তি বেড়ে চলছে। একজন মানুষ যদি অন্য মানুষের প্রতি নিজ নিজ দায়িত্ব-কর্তব্য ঠিকমতো পালন করে, তাদের অধিকারের প্রতি গুরুত্ব দেয় তাহলে এত অশান্তি, মারামারি, হানাহানি, হিংসা-বিদ্বেষ থাকতো না।

পৃথিবীর শক্তিধর দেশগুলো যদি দুর্বল দেশগুলোর প্রতি সদাচরণ করতো, তাদের প্রতি জুলুম-নির্যাতন না করতো- তাহলে পৃথিবী শান্তি-সুখে ভরে যেত।

পশ্চিমা এক লেখক সদাচার প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘উত্তম ব্যবহারকারী ও সদা প্রফুল্ল মুখমণ্ডলের অধিকারী লোকের জন্য সকল দরজা খোলা থাকবে, আর বদমেজাজী লোকদেরকে দরজা খোলার জন্য ডাকাতের মতো আঘাত করতে হবে। ’

ইসলামি স্কলারদের মতে, ‘দয়া ও নম্র ব্যবহার জমিনকে অধিক ফলনশীল করে এবং মানুষের আয়ু বৃদ্ধি করে। মানুষের সুখের একটা দিক হচ্ছে, তার অমায়িক ব্যবহার। ’

অমায়িক ব্যবহার কেবল মানসিক প্রশান্তিই দেয় না, এর মাধ্যমে জীবনে সাফল্যও লাভ করা যায়।

সদাচরণের কারণে মানুষ যেমন সফলতার মুখ দেখে, তেমনি তার মাধ্যমে বেহেশত লাভ করাও সহজ হয়। হজরত রাসূলে খোদা (সা.) যেমনটি বলেছেন, ‘আল্লাহর ভয় এবং উত্তম আচরণ আমার উম্মতকে বেহেশতে দাখিল করবে। ’

সদাচরণ সম্পর্কে শুধু জানলে চলেবে না, সবার সঙ্গে সদাচরণ করতে হবে। পিতামাতা, পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, পাড়া-প্রতিবেশি, গরিব-মিসকিন, প্রতিবন্ধী ও অসুস্থ ব্যক্তি থেকে সমাজের সব মানুষের সঙ্গে উত্তম আচরণ করতে হবে।

মনে রাখতে হবে, এক মুসলমানের সঙ্গে আরেক মুসলমানের সম্পর্ক ভ্রাতৃত্বের। এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘মুমিনগণ পরস্পর ভাই ভাই। ’ এ বিষয়ে সূরা আলে ইমরানে ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহর সেই নেয়ামতকে স্মরণ করো যখন তোমরা পরস্পরে দুশমন ছিলে অতঃপর তিনি তোমাদের হৃদয়কে জুড়ে দিলেন আর তোমরা তার মেহেরবাণীতে ভাই ভাই হয়ে গেলে। ’

নবী করিমও (সা.) এ সম্পর্কে বলেছেন, ‘যে মহান সত্তার হাতে আমার প্রাণ তার কসম, কোনো বান্দা ততক্ষণ পর্যন্ত মুমিন হতে পারে না, যতক্ষণ না সে নিজের জন্য যা পছন্দ করে তার ভাই এর জন্যও তাই পছন্দ করবে। ’

সদাচারী মুসলমান কোনো অবস্থাতেই মিথ্যা বলে না, কপটতার আশ্রয় নেয় না, কাউকে অপবাদ দেয় না, কারও ছিদ্রান্বেষণ করে না, পরশ্রীকারতায় ভুগে না, অহমিকা করে না, কারও প্রতি জুলুম-নির্যাতন করে না, শত্রুতা পোষণ করে না, কারও প্রতি ঘৃণা রাখে না, ক্রোধান্বিত হয় না, পরনিন্দা করে না, বিশ্বাসঘাতকতা করে না ও ঝগড়া-বিবাদে লিপ্ত হয় না।

সুতরাং উল্লেখিত মন্দ অভ্যাসসমূহ থেকে সর্বদা দূরে থাকার চেষ্টা করতে হবে তেমনি যাদের মধ্যে এসব দুর্বলতা আছে তাদেরকে সংশোধনের চেষ্টা করতে হবে ধৈর্য, প্রজ্ঞা, ক্ষমা ও অমায়িক ব্যবহার দিয়ে।

ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ২০৪১ ঘণ্টা, জুলাই ০৪, ২০১৭
এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।