ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

পরিবারে যে শিক্ষাগুলোর প্রচলন বেশি জরুরি

মাওলানা আবদুল জাব্বার, অতিথি লেখক, ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২, ২০১৭
পরিবারে যে শিক্ষাগুলোর প্রচলন বেশি জরুরি পরিবারে যে শিক্ষাগুলোর প্রচলন বেশি জরুরি

পৃথিবীর প্রথম বুনিয়াদ পরিবার। শিশুর প্রথম আলয়, প্রথম পাঠশালা এই পরিবার। সমাজের প্রথম ভিত্তিও এই পরিবার।

ইসলাম মনে করে, হঠাৎ করে কোনো আদর্শ সমাজ গঠন সম্ভব নয়, আর এ কারণেই পরিবারে ইসলামি আদর্শের বীজ বপণ, তার চর্চা এবং কাঙ্খিত পরিবার গঠনের প্রধানতম শিক্ষালয় এই পরিবার।

কোরআনে কারিমে পরিবারকে দূর্গের সঙ্গে তুলনা করেছে।

দূর্গ যেমন সংরক্ষিত, আশংকামুক্ত, নিরাপদ ঠিক তেমনি আদর্শ পরিবারও তার সদস্যদের জন্য সংরক্ষিত, অনৈতিকতা, অশ্লীলতা থেকে আশংকামুক্ত এবং পথভ্রষ্ট হওয়া থেকে নিরাপদ।  

হাদিসে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে বড়দের শ্রদ্ধা করে না, ছোটদের স্নেহ করে না সে আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়। ’

অন্য আরকে হাদিসে বলা হয়েছে, ‘যার হাত ও জিহ্বা থেকে অন্যরা নিরাপদ নয় সে মুসলিমের অন্তর্ভুক্ত নয়। ’

হাদিসে বর্ণিত এই দু’টি মূলনীতি মেনে চললে অন্য সম্পর্কগুলোর হক আদায় করা সহজ হয়। তা ভাই-বোন, আত্মীয় বা প্রতিবেশী যেই হোক না কেন।

ইসলাম মনে করে, কিছু মৌলিক নীতিমালা ও শিক্ষা পরিবারে প্রশিক্ষণ হওয়া খুব জরুরি। এই শিক্ষা পরিবার থেকে পেলে সমাজ বদলে যাবে। মূলতঃ এসব শিক্ষা কোরআন ও হাদিসেরই শিক্ষা। এসব শিক্ষার মাঝে রয়েছে-

আল্লাহর সঙ্গে শিরক করা যাবে না। পিতা-মাতার অধিকার যথাযথভাবে আদায় করতে হবে। অন্যের পিতা-মাতাকেও গালি না দেওয়া।  

সরিষার দানা পরিমাণ বস্তুও আল্লাহ বের করে আনার সামর্থ্য রাখেন- তাই আল্লাহকে সেভাবেই ভয় করা।

নামাজ কায়েম করা। হক কথা বলা, সৎ কাজের হুকুম ও অসৎ কাজে বাধা প্রদান করা।  

মানুষের সঙ্গে ও পৃথিবীতে বিনয় অবলম্বন করা, ঔদ্ধত্য ও অহংকার পরিত্যাগ করে চলাফেরায় ভারসাম্যতা রক্ষা করা।

উচ্চ কণ্ঠস্বর বর্জন করা, নিচু কণ্ঠস্বরে কথা বলা। অপব্যয় ও কৃপণতা বাদ দিয়ে ভারসাম্য রক্ষা করে চলা।  

রাগ ও উত্তেজনা পরিহার করা। নিজের জন্য যা পছন্দ, অন্যের জন্যও তা পছন্দ করা।  

গীবত না করা, সামাজিক, মানবিক ও সব ধরনের অসদাচরণ থেকে বিরত থাকা।

নিজের প্রয়োজনের চেয়ে অন্যের প্রয়োজনকে অগ্রাধিকার দেওয়া।  

উপরোক্ত মূলনীতিগুলো প্রকৃতপক্ষেই একজন মানুষের মূল্যবোধ গড়ে উঠতে প্রধান ভিত্তির কাজ করে। আর তাই একটি পরিবার এ সব মূলনীতি চর্চার মাধ্যমে সমাজে কাঙ্খিত নাগরিক উপহার দিতে পারে।

এছাড়াও সমাজে ন্যায় প্রতিষ্ঠা ও শান্তির জন্য পরিবার থেকে বেশকিছু কাজের চর্চা অব্যাহত রাখা। যেমন-

অন্যায়-অনাচারের প্রতি ঘৃণাবোধ সৃষ্টি করা, প্রয়োজনে অন্যায়ের শাস্তি দেওয়া।

পরিবারের ছোট-বড় সবার মাঝে ইনসাফপূর্ণ ব্যবহার করা।

সঠিকভাবে উত্তরাধিকার আইন বাস্তবায়ন করা।  

শালীন পোশাক ও বেশভূষার প্রতি পরিবারের শিশুদের আগ্রহ ও অনুকুল পরিবেশ সৃষ্টি করা।  

উপরোক্ত আদর্শ মূলনীতির চর্চা করে এমন পরিবারই সমাজের উপহার দিতে পারে আদর্শ মানুষ। যে সমাজ বিনির্মাণে কাঙ্খিত ফলাফল আনতে সক্ষম।

ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ২১২৬ ঘণ্টা, আগস্ট ০২, ২০১৭
এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।