ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

মসজিদে নববীতে ৪০ ওয়াক্ত নামাজ জরুরি মনে করা প্রসঙ্গে

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৮ ঘণ্টা, আগস্ট ৭, ২০১৭
মসজিদে নববীতে ৪০ ওয়াক্ত নামাজ জরুরি মনে করা প্রসঙ্গে মসজিদে নববী

মসজিদে জামাতে নামাজ পড়া বেশ ফজিলতপূর্ণ কাজ। সেখানে যদি নবীর মসজিদে মসজিদে নববীতে জামাতে অংশ নেওয়ার সুযোগ মেলে- সেটাতো অত্যন্ত সৌভাগ্যের বিষয়। কেননা, মসজিদে নববীতে এক নামাজ (কমপক্ষে) হাজার নামাজের সমতুল্য।

পবিত্র হজের সময় মসজিদে নববীতে উপস্থিত হওয়ার এবং রাসূলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রওজা মোবারকে যেয়ে সরাসরি সালাম আরজ করার সৌভাগ্য অর্জনের জন্য মদিনার উদ্দেশে সফরের ধারা হজপালনকারীদের মাঝে রয়েছে। এটা অতি উত্তম আমল।

কিন্তু মসজিদে নববীতে অবস্থানের জন্য ইসলামি শরিয়তের পক্ষ থেকে কোনো মেয়াদ নির্ধারিত নেই। অর্থাৎ এটা অপরিহার্য নয় যে, মসজিদের নববীতে কমপক্ষে আট দিনই থাকতে হবে।  

কোনো কোনো মানুষ মসজিদে নববীতে আট দিন অবস্থানকে এতটাই জরুরি মনে করেস যে, এ জন্য নিজেকে, সফরসঙ্গীদেরকে এবং কাফেলার আমিরকে কষ্টে ফেলে দিতেও দ্বিধা বোধ করেন না।  

অথচ তা শরিয়তের পক্ষ হতে নির্ধারিত কোনো মেয়াদ নয় যে, তা পূরণ করা এত জরুরি মনে করতে হবে।  

এ প্রসঙ্গে মুসনাদে আহমদ (৩/১৫৫) ও তবারানিতে (৫৪৪) একটি রেওয়ায়েত আছে। তা হলো- কেউ যদি এই মসজিদে (মসজিদে নববীতে) ধারাবাহিকভাবে চল্লিশ নামাজ আদায় করে তাহলে সে জাহান্নামের আজাব ও নেফাক থেকে মুক্তি পাবে।  

এই রেওয়ায়েতের কারণে লোকেরা আট দিন অবস্থান করা জরুরি মনে করে নিয়েছে। অথচ সনদের বিচারে তা দূর্বল। উপরন্তু এই হাদিসের প্রসিদ্ধ মতন (মূল বক্তব্য) যা তিরমিজিতে রয়েছে- সেখানে বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য চল্লিশ দিন জামাতে তাকবিরে উলার সঙ্গে নামাজ আদায় করে তার জন্য দু’টি পরোয়ানা লেখা হয়। জাহান্নাম থেকে মুক্তির পরওয়ানা ও নেফাক থেকে মুক্তির পরওয়ানা। -জামে তিরমিজি

অতএব স্পষ্ট বোঝা যায়, এই ফজিলত যে কোনো মসজিদে জামাতে শামিল হওয়া দ্বারা হাসিল হতে পারে।

এজন্য ইসলামি স্কলাররা বলেছেন, সহজভাবে মসজিদের নববীতে আট দিন থাকার সুযোগ হয়ে গেলে ভালো। কিন্তু একে জরুরি মনে করা বা জরুরি বিধানের মতো এত বেশি গুরুত্ব দেওয়া যে, কষ্ট ও পেরেশানিতে পড়ে যেতে হয় কিংবা পরস্পর মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়, ঠিক নয়।  

প্রকৃত করণীয় হচ্ছে, হারামাইনে (মক্কা-মদিনা) যতদিন থাকার সুযোগ হয় চেষ্টা করবে যেন মসজিদে হারাম ও মসজিদে নববীতে জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করা যায়।  

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ফজিলতের ক্ষেত্রে দূর্বল রেওয়ায়েত গ্রহণযোগ্য। কিন্তু একইসঙ্গে এটাও সত্য যে, দূর্বল রেওয়ায়েত দ্বারা শরিয়তের কোনো বিধান প্রমাণ হয় না এবং কোনো মেয়াদ বা পরিমাণ নির্ধারিত হয় না। তাই বিষয়টি নিয়ে ভুল না বোঝার অনুরোধ রইল। আল্লাহতায়ালা আমাদের তওফিক দান করুন। আমিন।  

ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ২০১৯ ঘণ্টা, আগস্ট ০৭, ২০১৭
এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।