ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

ওসি আকুলচন্দ্র বিশ্বাসের প্রচেষ্টায় মসজিদ!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৪৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০১৭
ওসি আকুলচন্দ্র বিশ্বাসের প্রচেষ্টায় মসজিদ! নির্মাণাধীন মসজিদ/ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

লক্ষ্মীপুর: ধর্মীয় বিশ্বাসে ভিন্নতা থাকলেও বাংলাদেশে হিন্দু-মুসলিম সুদৃঢ় বন্ধনে আবদ্ধ। আবহমানকাল থেকেই এদেশে হিন্দু-মুসলিমের একত্রে বসবাস। এখানে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সম্প্রীতির ঘাটতি নেই। একজন পুলিশ কর্মকর্তা হিন্দু ধর্মাবলম্বী হয়েও মসজিদ নির্মাণ করে এদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রাখলেন।

তিনি হলেন লক্ষ্মীপুরের কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকুলচন্দ্র বিশ্বাস। গেল বছরের নভেম্বর মাসে কমলনগর থানায় যোগ দেন তিনি।

তার আগমনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির পাশাপাশি থানা অভ্যন্তরে উন্নয়ন ও সৌন্দর্যের ছোঁয়া লেগেছে। তার প্রচেষ্টায় তৈরি হচ্ছে মসজিদ। ওসি’র এমন মহতী  উদ্যোগ এখন সর্বমহলে প্রশংসিত। এর আগের কর্মস্থল ব্রাক্ষণবাড়িয়া থানা-মসজিদের সংস্কার, বর্ধিতকরণ ও আধুনিকায়নের কাজ করে স্থানীয়দের অন্তরে স্থান করে নেন তিনি। নির্মাণাধীন মসজিদের কাজ পরিদর্শন করছেন, ছবি: বাংলানিউজ

ওসি আকুলচন্দ্র বিশ্বাস কমলনগর থানা অভ্যন্তরে কাচে মোড়ানো আধুনিক মডেলের একটি শীতাতপ মসজিদ নির্মাণ করিয়েছেন। রমজানের আগের দিন থেকে মসজিদ নির্মাণকাজ শুরু হয়। রোববার(২০ আগস্ট)পর্যন্ত প্রায় ৭৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি কাজ শেষ করতে তার প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। মসজিদ নির্মাণে ওসি’র ইচ্ছা, আগ্রহ ও উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে ভাটার মালিকরা দিয়েছেন ইট, দুই-একজন রাজনৈতিক নেতাসহ স্থানীয় ব্যবসায়ীরা দিয়েছেন টাকা, মেঘনা নদীর তীররক্ষা বাঁধের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্মাণে সহযোগিতা করছেন কিছু সিমেন্ট ও বালু দিয়ে। ওসি ব্যক্তিগতভাবে দিয়েছেন ২লাখ ৪০ হাজার টাকা। জেলা পরিষদ থেকে দেওয়া হয়েছে ৯৪ হাজার টাকা। ওসি আকুলচন্দ্র বিশ্বাস

এভাবেই ওসি’র প্রচেষ্টায় এবং অনেকের সহযোগিতায় অর্থ ও নির্মাণ সামগ্রী সংগ্রহের মধ্য দিয়ে গড়ে উঠছে মসজিদ। এ মসজিদ নির্মাণে ব্যয় হবে প্রায় ৩০ লাখ টাকা।

স্থানীয়রা বলছেন, ওসি’র আন্তরিক প্রচেষ্টায় খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে মসজিদের নির্মাণকাজ শেষ হবে। তার এমন ইতিবাচক কর্ম সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে; আরও দৃঢ় হবে হিন্দু-মুসলমানের সম্পর্ক।

ওসি আকুলচন্দ্র বিশ্বাস বলেন, আগের মসজিদটি ছিল টিনের। এছাড়া এতে স্থান সংকুলান হচ্ছিল না। এদিকে থানার আশপাশে অন্য কোনো মসজিদও নেই। কর্মরত পুলিশ, সেবা নিতে আসা লোকজন ও এলাকার মুসুল্লিদের নামাজ আদায়ে অসুবিধা হচ্ছিল। একারণে তিন তলা ফাউন্ডেশনের এ মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছি। সবার সহযোগিতায় নির্মাণকাজ এখন প্রায় শেষের দিকে।

এদিকে ওসি’র প্রচেষ্টায় আরও বেশ কিছু উন্নয়ন হয়েছে। সিসি ক্যামেরা স্থাপন, সেবা নিতে আসা লোকজনের বিশ্রামের জন্য গোলঘর নির্মাণ, গেট নির্মাণ, সবজি ও ফুলের বাগান করা, বৃক্ষরোপণ, পুকুরে মাছচাষ, অফিসকক্ষ সংস্কার ও বর্ধিতকরণ। এছাড়াও রমজানে প্রায় ১ হাজার রোজাদারের ইফতারের আয়োজন করে সুনাম অর্জন করেছেন ওসি।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৪৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০১৭
জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।