ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

আল্লাহকে সাক্ষী রেখে বিয়ে বৈধ নয়

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০১৭
আল্লাহকে সাক্ষী রেখে বিয়ে বৈধ নয় আল্লাহকে সাক্ষী রেখে বিয়ে বৈধ নয়

আল্লাহতায়ালা হজরত আদম (আ.) কে সৃষ্টির পর তার একাকিত্ব অবসানের জন্য হজরত হাওয়া (আ.) কে সৃষ্টি করে বিয়ের মাধ্যমে তার জীবন সঙ্গী নির্ধারণ করে দেন। এটাই মানব ইতিহাসের প্রথম বিয়ে।

কোনো নারীর সঙ্গে পুরুষের সর্ম্পক স্থাপনের জন্য বিয়ে হচ্ছে একমাত্র বৈধ, বিধিবদ্ধ, সার্বজনীন এবং পবিত্র ব্যবস্থা।

মানবতার ধর্ম ইসলাম নারী-পুরুষের মাঝে সুন্দর ও পুতঃপবিত্র জীবন-যাপনের জন্য বিয়ের ব্যবস্থা করেছেন।

 

ইসলামে বৈরাগ্য নীতির কোনো স্থান নেই। ইসলামে সামর্থ্যবান ব্যক্তিকে বিয়ে করার আদেশ দেওয়া হয়েছে। সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও বিয়ে না করা ইসলাম নিষিদ্ধ বিষয়।

বিয়ে প্রসঙ্গে কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘স্ত্রীরা হচ্ছে তোমাদের জন্য পোশাকস্বরূপ আর তোমরা তাদের জন্য পোশাকস্বরূপ। ’ -সূরা বাকারা: ১৮৭ 

হাদিসে স্ত্রীদের জগতের অস্থায়ী সম্পদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ সম্পদ বলে ঘোষণা দিয়েছেন নবী করিম (সা.)।  

ইসলামের দৃষ্টিতে বিয়ে একটি দেওয়ানি চুক্তির ফল। অভিভাবকের মাধ্যমে নারী নিজেকে বিয়ের জন্য উপস্থাপিত করে আর পুরুষ তা গ্রহণ করে অর্থাৎ ইজাব এবং কবুলের মধ্য দিয়ে একটি বিয়ে সুসম্পন্ন হয়।

ইসলামে বিয়ের রুকন তিনটি।

এক. বিয়ে সংঘটিত হওয়ার ক্ষেত্রে সমূহ প্রতিবন্ধকতা হতে বর-কনে উভয়ে মুক্ত হওয়া।

দুই. ইজাব বা প্রস্তাবনা। এটা মেয়ের অভিভাবক বা তার প্রতিনিধির পক্ষ থেকে পেশকৃত প্রস্তাবনামূলক বাক্য।

তিন. কবুল বা গ্রহণ। এটা বর বা বরের প্রতিনিধির পক্ষ থেকে সম্মতিসূচক বাক্য।  

বিয়ে শুদ্ধ হওয়ার শর্তগুলোর অন্যতম হলো-

১. ইশারা করে দেখিয়ে দেওয়া কিংবা নামোল্লেখ করে সনাক্ত করা অথবা গুণাবলী উল্লেখ অথবা অন্য কোনো মাধ্যমে বর-কনে উভয়কে সুনির্দিষ্ট করে নেওয়া।

২. বর-কনে প্রত্যেকে একে অপরের প্রতি সন্তুষ্ট হওয়া।  

৩. বিয়ের আকদের সময় সাক্ষী রাখা। হাদিসে বলা হয়েছে, ‘অভিভাবক ও দুইজন সাক্ষী ছাড়া কোনো বিয়ে নেই। ’

এই হলো সংক্ষেপে বিয়ে প্রসঙ্গে ইসলামের বিধান। এর অনেকেই আল্লাহকে সাক্ষী রেখে বিয়ে করেন। ইসলামের দৃষ্টিতে ওই বিয়ে শুদ্ধ নয়।  

পূর্বেই বলা হয়েছে, বিয়ের জন্য সাক্ষী জরুরি। সাক্ষীর দু’জন বিবেকবান প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ অথবা একজন পুরুষ, দু’জন মহিলা সাক্ষীর সামনে ইজাব-কবুল করা অত্যাবশ্যক। সাক্ষী ছাড়া বিয়ে শুদ্ধ হয় না। আল্লাহকে সাক্ষী রেখে বিয়ে করে নিজেদের স্বামী-স্ত্রী মনে করা এবং সে রকম আচরণ করা কবিরা গোনাহ। পরকাল ও চিরস্থায়ী আজাবের কথা মাথায় রেখে এ জাতীয় গোনাহ থেকে বেঁচে থাকা অপরিহার্য।

এ প্রসঙ্গে হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, সাক্ষী ছাড়া কোনো বিয়ে হয় না। -তিরমিজি শরিফ

হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত অপর এক হাদিসে রয়েছে, যেসব নারী সাক্ষী ছাড়া বিয়ে করেন, তারা ব্যভিচারী।  

বিয়ে মানব জীবনে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। তাই দুনিয়ার জীবনে স্বামী-স্ত্রীদের উচিত স্বচ্ছ এবং পবিত্রভাবে জীবন যাপন করা।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৯ ঘণ্টা, ২৫ অক্টোবর, ২০১৭
এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।