ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

আল্লাহর জন্য কাঁদলে তাকে অন্যের কাছে কাঁদতে হয় না

মাওলানা আবদুল জাব্বার, অতিথি লেখক, ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০১৭
আল্লাহর জন্য কাঁদলে তাকে অন্যের কাছে কাঁদতে হয় না আল্লাহর জন্য কাঁদলে তাকে অন্যের কাছে কাঁদতে হয় না

পবিত্র কোরআনের জ্ঞান অর্জন, চরিত্র গঠন এবং পরবর্তী প্রজন্মকে সেভাবে গড়ে তোলা প্রতিটি মুসলমানের দায়িত্ব। কোরআনের জ্ঞানের অভাব ও চরিত্রহীনতার কারণে সমাজে দুর্নীতি, সন্ত্রাস, অনাচার ইত্যাদির বিকাশ। যাদের ভেতরে কোরআনের জ্ঞান নেই, যারা উত্তম চরিত্রের অধিকারী না, তারাই সব অপকর্মের হোতা।

এ প্রসঙ্গে কোরআনে কারিমে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘যখন তাদেরকে বলা হয় তোমরা সমাজে অপকর্ম ও ফেতনা ফাসাদ করো না, তখন তারা বলে আমরা কল্যাণ ও মঙ্গলের জন্যই সব করি। ’ –সূরা বাকারা

ধর্মীয়, রাজনৈতিক, ছোট, বড়, দুনিয়া কিংবা আখেরাতের সব কাজ আল্লাহর কথা মতো করাই ইবাদত।

কারণ, আল্লাহতায়ালা মানষকে সৃষ্টি করেছেন তার ইবাদতের জন্য। আল্লাহর ইবাদতই ঈমানের মূল কথা। এর মাঝেই দুনিয়া ও আখেরাতের সুখ-শান্তি নিহিত।  

আল্লাহতায়ালা ও হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) যা করতে বলেছেন, তা না করা গোনাহ। তদ্রুপ যা করতে নিষেধ করা হয়েছে, তা করা গোনাহ। গোনাহ থেকে নিজে বাঁচা এবং অন্যকে বাঁচানো অনেক বড় সওয়াবের কাজ।  

যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে ও আল্লাহর জন্য কাঁদে- আল্লাহতায়ালা তাকে অন্যের কাছে কাঁদাবেন না। আল্লাহতায়ালা তাকে রোজ কিয়ামতের দিন তার আরশের নিচে ছায়া দেবেন। এ বিষয়ে হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, ‘যার চোখ দিয়ে আল্লাহর জন্য পানি পড়বে আল্লাহ তাকে কিয়ামতের দিন আল্লাহর আরশের নিচে ছায়া দেবেন।  

এভাবে যে ব্যক্তি আখেরাতের জন্য চিন্তা করবে, আখেরাতের জন্য কাজ করবে, আল্লাহতায়ালা তার জন্য দুনিয়াকে সহজ করে দেবেন, দুনিয়ার জন্য তাকে অস্থির হতে হবে না। অলি-আউলিয়ারা বলেছেন, যে সুখের সময় আল্লাহর কাছে কাঁদে, আল্লাহ তাকে দুঃখে ফেলে কাঁদায় না। যে সুখের সময় আল্লাহকে ভুলে যায়, আল্লাহর নাফরমানি করে, আল্লাহ দুঃখের সময় তাকে সাহায্য না করলে কে তাকে রক্ষা করবে?

যে আল্লাহর রাগ-গোস্বা এবং আখেরাতের বিপদ থেকে বাঁচার জন্য চিন্তা করবে, আল্লাহ তাকে দুনিয়ার বিপদ-মসিবত থেকে বাঁচানোর চিন্তা করবেন। যে সব ধরনের অন্যায় ও গোনাহ থেকে মুক্ত, আল্লাহ তাকে বিপদ দিয়ে পরীক্ষা করবেন। যে গোনাহ করবে আল্লাহ তাকে সংশোধনের জন্য বিপদ দেবেন।

সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহর কাছে তারাই বেশি দামী, যারা নামাজ-রোজা, হজ, জাকাতসহ সব ফরজ, ওয়াজিব, হালাল, হারাম, পর্দা-পুশিদা ঠিক রেখে সুন্নত নফলকে বেশি দাম দেয়।  

যারা অন্য জাতির, অন্য ধর্মের আচার-অনুষ্ঠান, বেশভুষা গ্রহণ ও অনুসরণ করে; তারা তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়। শুধু কি কাজে কর্মে অন্তর্ভুক্ত হবে- না পরিণতিও তাদের মতো হবে আল্লাহ ও তার রাসূলই এ বিষয়ে ভালো জানেন। এ বিষয়ে হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ভিন্ন জাতির অনুসরণ করে, সে তাদের অন্তর্ভুক্ত।  

সুদ, ঘুষ, মদ, জুয়া, দুর্নীতি, মিথ্যা, প্রতারণা, ধোঁকাবাজী, গিবত, অপবাদ, নাচ, গান, ভেজাল, ওজনে বেশকম, মুনাফাখোরি, গর্ব-অহংকার, টাখুনর নিচে কাপড় পরাসহ ইসলাম বিরোধী কাজ করা এবং ইসলাম বিরোধী কাজে সাহায্য করা। এ সব অন্যায় নিজে করা বা অন্যায় কাজে অন্যকে সহযোগিতা করা মারাত্মক গোনাহ। যারা এমন গোনাহে লিপ্ত থাকে, তারা ফাসেক। তাই প্রত্যেক মুসলমানের উচিৎ এসব কাজ থেকে বিরত থাকা। আল্লাহতায়ালা আমাদের তওফিক দান করুন। আমিন।  

ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০১৭
এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।