ঢাকা, বুধবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

এসো কল্যাণের পথে, এসো শান্তির পথে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৭
এসো কল্যাণের পথে, এসো শান্তির পথে প্রার্থনায় চির জাগ্রত বায়তুল্লাহ। ছবি: বাংলানিউজ

মসজিদুল হারাম, মক্কা (সৌদি আরব): নাতিশীতোষ্ণমণ্ডলীয় ভূমধ্যসাগরের তীর থেকে মখমল কোমল বাতাসের শীতল আদর ভেসে এসে সবাইকে জড়িয়ে রেখেছ লোহিত সাগরের তীরবর্তী এই প্রাচীন ঐতিহাসিক নগরীতে। রোদের তেজি ভাবও আর নেই। মরুময়-পার্বত্য আরবের চরম আবহাওয়ায় এমন সহনীয় পরিস্থিতি খুব কমই আসে। লোহিত সাগর তীরের রুক্ষ জনপদে দোলা দিচ্ছে দূরের মেডিটোরিয়ানের চির বসন্তের হিল্লোল।

পবিত্র মসজিদের সুললিত আজানের ধ্বনি মক্কার পাহাড়গুলোতে প্রতিধ্বনি তুলে ছড়িয়ে পড়ছে জগতময়। 'এসো কল্যাণের পথে' উচ্চারিত হতেই প্রাচীন নগর পরিণত হচ্ছে প্রার্থনার আলোকিত শহরে।

জেগে উঠছে ঘর, বাড়ি, হোটেল, সরণী, জনপদ এবং প্রতিটি মানুষের অন্তর্গত আত্মা।

প্রার্থণা-মগ্ন চির-জাগ্রত শহর মক্কা কখনো ঘুমায় না। দিন-রাতের প্রতিটি ক্ষণ নিবেদিত মানুষের উপস্থিতিতে মুখর এই আধ্যাত্মিক শহর। পৃথিবীর প্রতিটি কেন্দ্র ও প্রান্ত থেকে একা কিংবা দলবদ্ধভাবে হাজার হাজার নারী ও পুরুষ এখানে সমবেত হন পবিত্র বায়তুল্লাহ (আল্লাহর ঘর) ঘিরে। বিরামহীন এই সমাবেশ চলছেই।

এক মুহূর্তের জন্যেও না-থেমে  'লাব্বায়েক, আল্লাহুমা লাব্বায়েক' (আল্লাহ, আমি উপস্থিত) উচ্চারণের মাধ্যমে বিশ্বাসী মানুষ জানাচ্ছেন আনুগত্য। একাকী, পরিবার-পরিজন পরিবেষ্টিত হয়ে কিংবা স্বদেশবাসীর সাথে দলবদ্ধ হয়ে তাওয়াফ বা প্রদক্ষিণ করছেন আল্লাহর ঘর। সৃষ্টিকর্তার কাছে জানাচ্ছেন নিজের সকল চাওয়া-পাওয়া ও আকুতি। ভুল, ভ্রান্তি ও অপরাধের জন্য চাইছেন মার্জনা। ঘোষণা করছেন আল্লাহর বড়ত্ব, মহত্ত্ব, সর্বশ্রেষ্ঠত্ব।

বায়তুল্লাহে প্রার্থনামগ্ন বৃদ্ধ, নারী ও শিশু।  ছবি: বাংলানিউজহেরা পর্বত থেকে কোরআনের অমীয় ধারায় বিচ্ছুরিত তাওহিদ বা একাত্ত্ববাদের মহান শিক্ষা মক্কার পবিত্র মসজিদ হয়ে ছড়িয়ে পড়ছে সারা বিশ্বে। ধ্বনিত হচ্ছে, 'আল্লাহ মহান। তিনি এক ও অদ্বিতীয়। তার কোনো শরিক নেই। সকল প্রশংসা একমাত্র তারই জন্য। '

কল্যাণের ঝর্ণাধারায় সিক্ত বায়তুল্লাহ হলো শান্তির ঘর। মহানবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কা বিজয়কালে এ নগরীকে শান্তির এলাকা ঘোষণা করেন। কা'বা গৃহে আশ্রয় গ্রহণকারীদের দেওয়া হয় নিরাপত্তা। রক্তপাতহীন যুদ্ধের মাধ্যমে মক্কা জয় পৃথিবীর ইতিহাসে অনন্য ঘটনা এবং শান্তির নবীর এক ঐতিহাসিক কৃতিত্ব।

পৃথিবী ও মধ্যপ্রাচ্যের রক্তাক্ত পরিস্থিতিতে আল্লাহর ঘর শান্তির বার্তা জানাচ্ছে। প্রতি মুহূর্তে অশান্তির আগুনে প্রজ্বলিত আরব জাহানের দেশে দেশে এবং মুসলিম বিশ্বের ঘরে ঘরে শান্তির ডাক দিচ্ছে। বায়তুল্লাহ প্রদক্ষিণরত মানুষ অঝোর ক্রন্দনে কল্যাণ ও শান্তির প্রার্থনা করছেন। পুরুষের পাশাপাশি, নারী, বৃদ্ধ, এমনকি, শিশুরাও যোগ দিয়েছে এই পবিত্র ঘরে আল্লাহর ইবাদতে।

কল্যাণ ও শান্তির পক্ষে সমবেত মানবকণ্ঠের আহ্বান ধ্বংসবাজ-যুদ্ধবাজ অপশক্তি কবে হৃদয়ঙ্গম করতে পারবে? কবে বুঝবে, কল্যাণ ও শান্তির মর্ম?

মানুষ ও পৃথিবীকে  আর কত অপেক্ষা করতে হবে হিংসা, হানাহানি ও রক্তপাতহীন শান্তিপূর্ণ-কল্যাণের নিরাপদ পরিবেশের জন্য?

প্রবাসে শ্রমের হাত ছুঁয়েছে বিজয়ের পতাকা

বাংলাদেশ সময়: ২০০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৭
এমপি/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।