ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

রহমত ও বরকত লাভের উপায়

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১৮
রহমত ও বরকত লাভের উপায় নবী করিম (সা.)-এর জন্য হৃদয়ের গভীরে ভালবাসা পোষণ করা ঈমানি কর্তব্য

নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি বিশ্বাস ও আনুগত্য অপরিহার্য বিষয়। আল্লাহকে পাওয়ার একমাত্র পথ নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুসরণ। তাই নবী করিম (সা.)-এর জন্য হৃদয়ের গভীরে ভালবাসা পোষণ করা, তার জন্য আল্লাহর দরবারে দোয়া ঈমানি কর্তব্য।

কোরআনে কারিমে স্বয়ং আল্লাহতায়ালা নবী করিম (সা.)-এর জন্য দরূদ পাঠের তথা আল্লাহর দরবারে তার জন্য দোয়া করার আদেশ দিয়েছেন। এটা একদিকে যেমন আল্লাহর কাছে তার রাসূলের মর্যাদার প্রমাণ, অন্যদিকে মুমিন বান্দার রহমত ও বরকত লাভের অন্যতম উপায়।

 

এ প্রসঙ্গে কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ নবীর ওপর রহমত নাজিল করেন এবং ফেরেশতারা তার জন্য রহমতের দোয়া করেন। সুতরাং হে মুমিনগণ! তোমরাও তার প্রতি দরূদ পড় এবং অধিক পরিমাণে সালাম পাঠাও। ’ -সূরা আহজাব: ৫৬

এখানে দরুদের কিছু ফজিলতের কথা উল্লেখ করা হলো। আল্লাহতায়ালা প্রত্যেক মুসলমানকে দরুদের মতো সহজ ও মূল্যবান আমলটি বেশি বেশি করার তওফিক দান করুন। আমিন।  

রহমত ও মাগফিরাত লাভের আমল
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আছ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেন, ‘যে আমার ওপর একবার দরূদ পড়বে, বিনিময়ে আল্লাহ তার ওপর দশটি রহমত নাজিল করবেন। ’ -সহিহ মুসলিম:১/১৬৬

অন্য আরেক হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত আনাস (রা.) বলেন, রাসূলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘যে আমার ওপর একবার দরূদ পড়বে আল্লাহ তার ওপর দশটি রহমত নাজিল করবেন, তার দশটি গোনাহ ক্ষমা করা হবে এবং দশটি দরজা বুলন্দ হবে। -সুনানে নাসায়ি: ১/১৪৫

ফেরেশতারা মাগফিরাতের দোয়া করেন
হজরত আমের ইবনে রবিয়া (রা.) বলেন, আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে খুতবার মধ্যে বলতে শুনেছি, ‘আমার ওপর দরূদ পাঠকারী যতক্ষণ দরূদ পড়ে ফেরেশতারা তার জন্য দোয়া করতে থাকে। সুতরাং বান্দার ইচ্ছা, সে দরূদ বেশি পড়বে না কম। -মুসনাদে আহমদ: ৩/৪৪৫

দরূদ পাঠকারীর জন্য শাফায়াত অবধারিত
হজরত রুওয়াইফি ইবনে সাবেত আল আনসারি (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি এ দরূদ পাঠ করবে তার জন্য আমার সুপারিশ অবধারিত হয়ে যাবে। ’ –মাজমাউয যাওয়াইদ: ১০/২৫৪

কিয়ামতের দিন নবী করিম (সা.)-এর সবচেয়ে নিকটবর্তী হবে
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কিয়ামতের দিন ওই ব্যক্তি আমার সবচেয়ে নিকটবর্তী হবে, যে আমার ওপর সবচেয়ে বেশি দরূদ পড়েছে। ’ -জামে তিরমিজি: ১/১১০

উভয় জাহানের সব উদ্দেশ্য হাসিল হবে
হজরত উবাই ইবনে কাব (রা.) বলেন, একবার আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিকরুল্লাহর (আল্লাহর জিকির) খুব তাকিদ করলেন। আমি আরজ করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি আপনার প্রতি বেশি বেশি দরূদ পাঠ করে থাকি। আমি আমার দোয়ার কতভাগ আপনার জন্য নির্ধারণ করব? তিনি বললেন, তোমার যে পরিমাণ ইচ্ছা।  

আমি বললাম, চারভাগের এক ভাগ? তিনি বললেন, তোমার যতটুকু ইচ্ছা। তবে বেশি করলে আরও ভালো।  

আমি বললাম, তাহলে অর্ধেক? তিনি বললেন, তোমার যতটুকু ইচ্ছা। তবে বেশি করলে আরও ভালো।  

আমি বললাম, তাহলে তিন ভাগের দুই ভাগ? তিনি বললেন, তোমার যতটুকু ইচ্ছা হয়। তবে বেশি করলে আরও ভালো।

আমি বললাম, তাহলে কি আমার দোয়ার পুরোটাই হবে আপনার প্রতি দরূদ? তিনি বললেন, তবে তো তোমার মাকসাদ হাসিল হবে, তোমার গোনাহ মাফ করা হবে। -জামে তিরমিজি: ২/৭২

দরূদবিহীন দোয়া আসমান-জমিনের মাঝে ঝুলন্ত থাকে
হজরত উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) বলেন, যে পর্যন্ত তুমি তোমার নবীর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ওপর দরূদ না পড়বে ততক্ষণ দোয়া আসমানে যাবে না, আসমান-জমিনের মাঝে থেমে থাকবে। -জামে তিরমিজি: ১/১১০

ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ২১১১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১৮
এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।