ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

আল্লামা শামছুদ্দীন কাসেমীকে বিশেষ সম্মাননা

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩২ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০১৮
আল্লামা শামছুদ্দীন কাসেমীকে বিশেষ সম্মাননা আল্লামা শামছুদ্দীন কাসেমীকে বিশেষ সম্মাননা

আল্লামা শামছুদ্দীন কাসেমী রহমাতুল্লাহি আলাইহি। বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ, শিক্ষাবিদ ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক।

বাংলাদেশের রাজনীতি ও ইসলামি আন্দোলনের নিবেদিত প্রাণপুরুষ। বিচক্ষণ এবং দূরদর্শী রাজনীতিবিদ হিসেবে তার ব্যাপক খ্যাতি রয়েছে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে আল্লামা কাসেমীর ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। তার প্রচেষ্টায় জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ১৯৭১ সালের ২২ মার্চ রেজ্যুলেশন করে স্বাধীনতা সংগ্রামের পক্ষে সমর্থন জানিয়ে দেশবাসীকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করেন।  

এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাক বাহিনীর নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে তিনি প্রকাশ্যে বিরোধীতা করেন ও পাকিস্তানের জুলুম-নির্যাতনের বিরুদ্ধে কলম ধরেন।  

যুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের নানাভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করেন। এমনকি ঢাকার ভিক্টোরিয়া পার্কে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জনসভা ডেকে বক্তব্যও রাখেন। এ কারণে পাক সেনারা তাকে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে বন্দী করে রাখে।  

স্বাধীনতা সংগ্রামে তার বিশেষ অবদানের কথা স্মরণ করে স্বাধীনতার ৪৮ চল্লিশ বছর পর আল্লামা কাসেমীকে মরনোত্তর সম্মাননা প্রদান করে মিরপুরের একটি সংগঠন।

জিবিএইচবি ক্রীড়া ও সমাজ কল্যাণ সংঘ বৃহত্তর মিরপুরে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে মিলন মেলা ২০১৮-এর আয়োজন করে। ওই আয়োজনে আল্লামা শামসুদ্দীন কাসেমীকে বিশেষ সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।  

মরহুমের পরিবারের পক্ষ থেকে স্মারকটি গ্রহণ করেন তার বড় ছেলে জামিয়া হোসাইনিয়া ইসলামিয়া আরজাবাদের প্রিন্সিপাল ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া।
অাল্লামা কাসেমীর পরিবারের পক্ষ থেকে স্মারকটি গ্রহণ করেন তার বড় ছেলে মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া
আল্লামা শামছুদ্দীন কাসেমী সন্দ্বীপে জন্মগ্রহণ করেন। তৎকালীন জমিদারদের অত্যাচার ও বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদীদের বিরুদ্ধে সংগঠিত আন্দোলনে তার পূর্বপুরুষদের ভূমিকা ও অবদান অবিস্মরণীয়।  

দেশ-বিদেশে শিক্ষাগ্রহণ শেষে ১৯৬১ সালে ময়মনসিংহ জেলার সোহাগী মাদরাসার শিক্ষক হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু। তিনি অনেক মাদরাসা, মসজিদ ও মক্তব প্রতিষ্ঠা করেছেন। জামিয়া হোসাইনিয়া ইসলামিয়া আরজাবাদ মাদরাসাটি তার অক্লান্ত প্রচেষ্টায় পূর্ণাঙ্গরূপে প্রতিষ্ঠিত হয়।  

ইন্তেকালের আগ পর্যন্ত তিনি জামিয়া হোসাইনিয়া ইসলামিয়া আরজাবাদের শায়খুল হাদিস এবং মুহতামিমের দায়িত্ব পালন করেছেন।

১৯৬৬ সালে ঢাকায় জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের পূর্ব পাকিস্তানের কমিটি গঠিত হলে তিনি এর সেক্রেটারি জেনারেল নির্বাচিত হন। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত তিনি জমিয়তের সেক্রেটারি জেনারেলের দায়িত্ব পালন করেন।  

স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালে তিনি জমিয়তের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৭৭ সালে পুনরায় সেক্রেটারি জেনারেল পদে নির্বাচিত হন এবং ১৯৯১ সাল পর্যন্ত তিনি এ দায়িত্বে ছিলেন। পরে তিনি জমিয়তের নির্বাহী সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ইন্তেকালের আগ পর্যন্ত তিনি ওই দায়িত্ব পালন করেন।  

আপোষহীন ও নিরহংকারী এই আলেম ১৯৯৬ সালের ১৯ অক্টোবর ইন্তেকাল করেন। মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবি স্মৃতিসৌধ সংলগ্ন কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। দেশব্যাপী তার অগণিত ছাত্র রয়েছে।  

ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ২০৩২ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০১৮
এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।