ঢাকা, শুক্রবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

ইসলাম

ইসলামে কোরবানির গুরুত্ব

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫১০ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০১৮
ইসলামে কোরবানির গুরুত্ব .

ঢাকা: ইসলামের অন্যসব ইবাদতের মতো কোরবানি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। সামর্থ্যবান নারী-পুরুষের ওপর কোরবানি ওয়াজিব। আদম আলাইহিস সালাম থেকে সব যুগে কোরবানি ছিল। তবে তা আদায়ের পন্থা এক ছিল না।

কোরবানি কবুল হওয়ার শর্ত
সওয়াবের আশায় কোরবানি দেওয়া, কোরবানির অর্থ হালাল হওয়া এবং বিধানসম্মতভাবে কোরবানি দেওয়া।

শুধুমাত্র গোশত খাওয়ার ইচ্ছায়, সামাজিক মান-মর্যাদা রক্ষায় কোরবানি দিলে তা কবুল হবে না।

কোরবানির অর্থ যদি হালালপন্থায় অর্জিত না হয় তাহলে ওই কোরবানি আল্লাহর দরবারে কবুল হয় না।  

আল্লাহ তা’আলা আরও ইরশাদ করেন-(মনে রেখো, কোরবানির পশুর) গোশত অথবা রক্ত আল্লাহর কাছে কখনোই পৌঁছায় না; বরং তার কাছে কেবলমাত্র তোমাদের পরহেজগারিই পৌঁছায়।  (সূরা-হজ্জ: আয়াত-৩৭)

কোরবানির হিকমত ও তাৎপর্য

কোরবানির মধ্যে অনেক হিকমত বিদ্যমান। এখানে কিছু বর্ণনা করা হলো:

** কোরবানি শিরক থেকে মুক্ত থাকার একটি কার্যকরী মাধ্যম।

** কোরবানি করার মাধ্যমে সবাই আল্লাহ তা’আলার ক্ষমতা ও আধিপত্য দৃঢ়চিত্তে মেনে নেওয়ার অনুপ্রেরণা পায়। এর মাধ্যমে আল্লাহ তা’আলার তাওহীদের স্বীকৃতি ঘোষিত হয়।  

** মুসলিমরা বিশ্বাস করে থাকেন আল্লাহ তা’আলাই হলেন এ বিশ্ব জাহানের স্রষ্টা ও সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। এসব পশু তারই। পশু কোরবানি সেই বিশ্বাসের স্বীকৃতিস্বরূপ।  

** আল্লাহ তা’আলা যেসব পশুকে আমাদের অধীন করে দিয়েছেন এবং সেসব পশু দ্বারা আমাদের নানাভাবে উপকার লাভের সুযোগ দান করেছেন তার শুকরিয়া আদায় করা হয় কোরবানির মধ্যমে।  

** কোরবানির মাধ্যমে আশরাফুল আম্বিয়া সায়্যিদুনা মুহাম্মদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু অলাইহি ওয়া সাল্লাম, মূসা আলাইহিস সালাম ও ঈসা আলাইহিস সালাম প্রমুখ নবীদের পিতা ইব্রাহিম আলাইহিস সালামের স্মৃতি রক্ষা করা হয়। তিনি তার প্রিয় পুত্র হজরত ইসমাইল আলাইহিস সালামকে আল্লাহ তা’আলার পক্ষ থেকে নির্দেশপ্রাপ্ত হয়ে কোরবানি করার চেষ্টা করেন। তখন আল্লাহ তা’আলা একটি দুম্বাকে তার পরিবর্তে কোরবানি করান। এর মাধ্যমেই কোরবানি প্রবর্তন হয়।  

** কোরবানি করার মাধ্যমে দুনিয়ার সম্পদ ও পার্থিব জীবনের ভালোবাসা ইত্যাদি থেকে পরিশুদ্ধি অর্জন করা হয়। কোরবানির পশু জবেহ করার মাধ্যমে বাহ্যত কোরবানি দাতার মালের ক্ষতি হয়। আর এ লোকসান বা ক্ষতি আল্লাহ তা’আলার সন্তুষ্টির জন্যই হয়ে থাকে। তাই জাকাতের মতো এর দ্বারাও সম্পদের ভালোবাসার মধ্যে কিছুটা ঘাটতি সৃষ্টি হয়ে থাকে। সেই সঙ্গে কোরবানি দাতার মনে এই অনুভূতি জাগ্রত হয় যে একটি পশু কোরবানি যখন আল্লাহ তা’আলার দরবারে তার সন্তুষ্টি এবং নৈকট্য অর্জনের কারণ হয়- তাহলে স্বয়ং নিজের জানমাল সবকিছু আল্লাহর রাহে কোরবানি করে দেওয়া আল্লাহ তা’আলার সন্তুষ্টি ও সান্নিধ্য লাভের কতো বড় মাধ্যম হতে পারে। এই অনুভূতি তার নিজের প্রতি ভালোবাসা কমিয়ে দিয়ে নিজেকে আল্লাহ তা’আলার রাহে কোরবানি করার চেতনাকে উজ্জীবিত করে।

পশু ক্রয়ের পর পশু মারা গেলে
ক্রেতা ধনী হলে আরেকটি পশু কোরবানি দিতে হবে। আর গরিব হলে তার আর কোরবানি দিতে হবে না।

ভাগে কোরবানি
ছাগল, ভেড়া, দুম্বা ভাগে কোরবানি দেওয়া যায় না। একাই দিতে হয়। গরু, মহিষ ও উট ভাগে কোরবানি দেওয়া যায়। ভাগের সংখ্যা সর্বোচ্চ সাত হতে পারে। এর বেশি হলে হবে না। সাত বা সাতের কম যে কোনো সংখ্যার ভাগ হতে পারে। বেজোড় হওয়ার কোনো বাধ্যবাধ্যকতা নেই।

বাংলাদেশ সময়: ১১০৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০১৮
আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।