ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

অগ্নিকাণ্ডে শহীদদের জন্য দোয়া ও মাগফিরাত

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৯
অগ্নিকাণ্ডে শহীদদের জন্য দোয়া ও মাগফিরাত ছবি : প্রতীকী

পুরান ঢাকার চকবাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পুরো জাতি হত-বিহ্বল। শোকে মুহ্যমান হতাহতের স্বজনরা। দুর্ঘটনাস্থলের আকাশে-বাতাসে পোড়া লাশের গন্ধ। অগ্নিকাণ্ডের জায়গাটি যেন এখন ধ্বংসস্তূপের ভাগাড়।

ভয়াবহ এ অগ্নিকাণ্ডে কমপক্ষে ৭০ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের স্বজনদের বুকফাটা আর্তনাদ আর আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠছে পুরান ঢাকা।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এখনো অসংখ্য মানুষের জটলা। স্বজনদের খুঁজে না পেয়ে মর্গের সামনে অপেক্ষা করছেন তারা। পুড়ে প্রায় অঙ্গার হয়ে যাওয়া বনি আদমদের শনাক্ত করাই এখন দায়।

আগের বিপর্যয়গুলো থেকে শিক্ষা না নিলে এমন দুর্ঘটনা সামনে হয়তো আরো অপেক্ষা করছে। ৮ বছর আগে পুরান ঢাকার নীমতলীতেও এমন হৃদয়বিদারক ও ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড হয়েছিল। কিন্তু আবারও বেদনাদায়ক ট্রাজেডির শিকার হতে হয়েছে অনেককে। দুর্ঘটনায় হতাহত ও ক্ষতিগ্রস্তরা মূলত অন্যের দোষে আক্রান্ত হয়েছেন। নিরপরাধ হয়েও তারা কষ্টের শিকার হয়েছেন। মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে তাদের জন্য পুরস্কার রয়েছে।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘অবশ্যই আমি তোমাদের পরীক্ষা করব কিছুটা ভয়, ক্ষুধা, মাল ও প্রাণের ক্ষতি ও ফলফসল বিনষ্টের মাধ্যমে। তবে সুসংবাদ দাও ধৈর্যশীলদের। যখন তারা বিপদে পড়ে, তখন বলে, নিশ্চয়ই আমরা সবাই আল্লাহর জন্য এবং আমরা সবাই তাঁরই কাছে ফিরে যাব। তারা সেসব লোক, যাদের প্রতি আল্লাহর অফুরন্ত অনুগ্রহ ও রহমত রয়েছে এবং এসব লোকই হেদায়েতপ্রাপ্ত। ’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৫৫-১৫৭)

হতাহতদেরর স্বজন ও অন্যদের কর্তব্য হলো, ধৈর্যধারণ ও আল্লাহর কাছে দোয়া করা। জাবের বিন আতিক (রা.) থেকে বর্ণিত এক হাদিসে রাসুল (সা.) সাহাবিদের প্রশ্ন করেন, তোমরা শাহাদাত (শহীদি মৃত্যু) বলতে কী বুঝো? তারা বললেন, ‘আল্লাহর পথে যুদ্ধ করে নিহত হওয়াকেই আমরা শাহাদাত মনে করি। ’ রাসুল (সা.) বললেন, ‘আল্লাহর পথে নিহত হওয়া ছাড়াও সাত ধরনের শাহাদাত রয়েছে। ১. প্লেগ-মহামারিতে যে মারা যায়, সে শহীদ। ২. পানিতে ডুবে যে মারা যায় যায়, সে শহীদ। ৩. শয্যাশায়ী অবস্থায় যে মারা যায়, সে শহীদ। ৪. পেটের পীড়ায় যে মারা যায়, সে শহীদ। ৫. আগুনে পুড়ে যে মারা যায়, সে শহীদ। ৬. ভূমি, ভবন বা দেয়াল ধসে যে মারা যায়, সে শহীদ। ৭. যে নারী গর্ভধারণে বা প্রসবজনিত কষ্টে মারা যায়, সে শহীদ। ’ (আবু দাউদ, হাদিস নং : ৩১১১; নাসাঈ, হাদিস নং : ১৮৪৬)

আমরা বিশ্বাস করি, চকবাজারের এ অগ্নিকাণ্ডে নিহত মুমিনরা শহীদের মর্যাদা পাবেন। একই সঙ্গে আমরা আল্লাহর কাছে কামনা করি এবং দোয়াও করি। শাহাদাতের সৌভাগ্য লাভকারী ব্যক্তি মৃত্যুবরণের সঙ্গে সঙ্গে জান্নাতের নেয়ামত ভোগ করতে থাকেন। এটা হাদিসের ভাষ্যে প্রমাণিত।

অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে শুক্রবার দেশের সব মসজিদে বাদ জুমা বিশেষ দোয়া ও মোনাজাতের অনুরোধ করেছেন ধর্ম-প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শেখ মো. আব্দুল্লাহ।

আর শোকের এ মুহূর্তে আমাদের সবার উচিত, মৃত্যুবরণকারীদের জন্য আল্লাহ তাআলার দরবারে শহীদি মর্যাদা লাভের জন্য দোয়া করা। আল্লাহ তাআলা আহত-নিহতদের পরিবারকে এ দুর্ঘটনার ভার সইবার তৌফিক দিন।

ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ১১৫৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৯
এমএমইউ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।