ঢাকা, রবিবার, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

পড়াশোনা ও অধ্যয়ন বড় ইবাদত

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৯ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০১৯
পড়াশোনা ও অধ্যয়ন বড় ইবাদত ছবি: সংগৃহীত

কোরআনে সর্বপ্রথম যে শব্দটি অবতীর্ণ হয়েছে, তা হলো ‘ইকরা’—পড়ো। এটি আদেশমূলক ক্রিয়াপদ। আল্লাহ বলেছেন, ‘পড়ো তোমার প্রভুর নামে, যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন। যিনি মানুষ সৃষ্টি করেছেন, জমাট রক্তপিণ্ড থেকে। পড়ো...।’ (সুরা আলাক, আয়াত: ১-৩)

প্রথম তিন আয়াতে ‘পড়ো’ শব্দটি দুইবার এসেছে। কোরআন মানবজাতির কাছে পাঠানো সর্বশেষ ও চূড়ান্ত ঐশীগ্রন্থ।

আর আর মহান আল্লাহর সঙ্গে সংযোগ স্থাপনে মুসলিম জাতির ইতিহাসে সর্বপ্রথম যে বিষয়টির ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, তা হলো ‘পড়ো’। জ্ঞান অর্জনের চাবিকাঠি হচ্ছে বই পড়া। এতে স্রষ্টা আর তার সৃষ্টি সম্পর্কে মানুষের জ্ঞান বিকশিত হয়। এটা কোনো কাকতালীয় বিষয় নয় যে, ‘কোরআন’ শব্দটাও যে-মূল শব্দ থেকে এসেছে, তার অর্থ পড়া, পুনরাবৃত্তি করা বা আবৃত্তি করা। কাজেই সঠিক ইসলামী বুঝ অনুযায়ী শুধু পড়াটাও হতে পারে এক ধরনের বড় ‘ইবাদত’।

কোরআনের অন্যতম একটি নাম ‘বই’
পবিত্র কোরআনের অনেকগুলো নামের মধ্যে একটি হচ্ছে ‘আল-কিতাব’ বা বই। প্রথম অবতীর্ণ শব্দের সাপেক্ষে যদি এই নামের সম্পর্ক বোঝার চেষ্টা করা হয় তাহলে দেখা যাবে যে, ইসলাম ও মুসলিমদের জ্ঞানসংক্রান্ত ভিত্তিই হচ্ছে পড়াশোনা করা। সবধরনের জ্ঞান অর্জন, সংরক্ষণ ও প্রচারের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে আদেশ। বই একদিকে যেমন জ্ঞানের উৎস, অন্যদিকে জ্ঞান সংরক্ষণের প্রাথমিক মাধ্যম। বই পড়ার মাধ্যমে উন্মোচিত হয় জ্ঞানের নতুন দিগন্ত।

পড়াশোনায় জ্ঞানের পরিধি বাড়ে।  ছবি: সংগৃহীত

জ্ঞানের সাফল্যই ইসলামের সাফল্য
মূল কথা হচ্ছে, অধিকাংশ মুসলিমদের কাছে বই পড়া আজ এক হারিয়ে যাওয়া শিল্প। বইয়ের সঙ্গে সবধরনের সংযোগ যেন আজ দুর্বল-ম্রিয়মাণ। বইয়ের সঙ্গে সম্পর্ক রাখে, এমন লোকের সংখ্যা মুসলিম বিশ্বে দিন দিন কমছে। অথচ ইসলামি সভ্যতাজুড়ে দেখা যায়, বই এবং বই পড়াকে ইসলাম কত সম্মান আর মর্যাদা দিয়েছে। এর স্বকীয়তা এখানেই যে বই ও বই প্রকাশনার সঙ্গে সাধারণ জনগণের ছিল সুশৃঙ্খল সংযোগ। ফ্রান্‌য রনসেনথাল তার বইতে লিখেছেন, ‘জ্ঞানের ধারণা ইসলামে অর্জন করেছিল অনন্য এক সাফল্য। অতীতের সেই সাফল্য ছিল যথাযথ। আর এই সাফল্য অর্জন হয়েছিল অনবরত বইয়ের মধ্যে বুঁদ হয়ে থেকে এবং বৈচিত্রময় রকমারি সব বই থেকে স্বাদ নেওয়ার মাধ্যমে। যেসব বইয়ের মধ্যে এমন অনেক বইও ছিল যেগুলো ইসলামি বিশ্বাস ও মূল্যবোধের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বিপরীত। ’

অনেকে হয়তো ইন্টারনেটের আবির্ভাব, নিত্যনতুন যোগাযোগ পণ্য এবং সংক্ষিপ্ত ভাষা ব্যবহারের প্রবণতাকে এজন্য দায়ী করবেন। কথাটা সঠিক; কিন্তু মূল সমস্যা আরও গভীরে। আর সেটার শুরু ইন্টারনেট আবির্ভাবেরও আগে। বইয়ের সঙ্গে সংযোগ হারানো এবং পরিণতিতে অধ্যয়ন ছেড়ে দেওয়া—এধরনের প্রবণতার শুরু আরও আগে; কম করে হলেও ১৮ শতকের দিকে। আর এখনও সেই প্রবণতা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে।

আসুন, আবার বইয়ের সঙ্গে সম্পর্ক করি। একটি উত্তম বই আপনার জীবনে পরিবর্তন এনে দিতে পারে। আপনাকে দিতে পারে সুনিবিড় শান্তির জায়গা জান্নাতের ঠিকানা।

ইসলাম বিভাগে আপনিও লিখতে পারেন। লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৮ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০১৯
এমএমইউ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।