ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

ইসলাম

অনৈতিক কাজে বাধা দেওয়ার ক্ষেত্রে ইসলামী দৃষ্টিকোণ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০০০ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০১৯
অনৈতিক কাজে বাধা দেওয়ার ক্ষেত্রে ইসলামী দৃষ্টিকোণ ছবি : প্রতীকী

অন্যায়, অবিচার, ছিনতাই, ধর্ষণ, ধোঁকাবাজি, নারীকে উত্যক্ত করা ও অন্যান্য মন্দকাজের বাগাড় এখন চারপাশে। অপরাধমূলক কিছু ঘটতে দেখলেও কেউ বাধা দেওয়ার কিংবা অন্যায়কারীকে শুধরানের চেষ্টা করা হচ্ছে না। ইসলামের দৃষ্টিতে এটা ঠিক নয়। কারণ হতে পারে- খারাপ মানুষের পাল্লায় পড়ে কিংবা ভুলবশত ও অসতর্কতায় মানুষ অন্যায়ে জড়িয়ে পড়ে। মন্দকে ভালোর মাধ্যমে পরিবর্তন না করলে সুদূরপ্রসারী খারাপ প্রভাব দেশ-জাতি সবাইকে অনুভব করতে হয়। তাই প্রকৃত মুসলিম ও সচেতন মানুষের অবশ্য কর্তব্য হলো- মন্দ কাজ থেকে মানুষকে বিরত রাখার সাধ্যানুযায়ী চেষ্টা করা।

ইসলামের মৌলিক অবশ্যপালনীয় কর্তব্যের মধ্যে সৎকাজের আদেশ এবং অসৎকাজের নিষেধ করা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিধান। অসৎকাজ থেকে নিষেধ করা কখনও শক্তির মাধ্যমে হতে পারে, আবার কখনও রসনা ও শুভবুদ্ধি সৃষ্টির মাধ্যমে হতে পরে।

আবার কখনও শুধু অন্তরের ঘৃণা দ্বারাই হয়ে থাকে। অন্তর দিয়ে সেটা করা সর্বাবস্থায়ই ওয়াজিব হবে। কারণ, এতে কোনো কষ্ট পেতে হয় না। যে ব্যক্তি এতটুকু ঘৃণাও পোষণ করে না, সে প্রকৃত মুমিন নয়।

আল্লাহ তাআলা যে দুইটি মৌলিক উপাদানের কারণে মুসলিম উম্মাহকে শ্রেষ্ঠ ও কল্যাণকামী জাতি হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন, তন্মধ্যে সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজের নিষেধ অন্যতম। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরাই শ্রেষ্ঠ জাতি। মানুষের কল্যাণে তোমাদের সৃষ্টি করা হয়েছে। তোমরা সৎ কাজের আদেশ ও অসৎকাজের বাধা দেবে এবং আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবে। ’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত: ১১০)

অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমাদের মধ্য থেকে এমন একটি জাতি হওয়া উচিত যারা সব ভালো কাজের দিকে আহ্বান করবে, সৎকাজের আদেশ দেবে এবং অসৎকাজে নিষেধ করবে, প্রকৃতভাবে তারাই সফলকাম সম্প্রদায়। ’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত:১০৪)

অসৎকাজে নিষেধ মুমিনের অন্যতম গুণ
মুমিনদের মৌলিক গুণাবলি উল্লেখ করতে গিয়ে কোরআনে বলা হয়েছে, তারা হচ্ছে আল্লাহর দিকে বারবার প্রত্যাগমনকারী, তার ইবাদাতকারী, তা প্রশংসাবাণী উচ্চারণকারী, তা জন্য জমিনে বিচরণকারী, তার সামনে রুকু ও সিজদাকারী, সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজের বাধা দানকারী এবং আল্লাহর সীমারেখা সংরক্ষণকারী। (সুরা তাওবা ৯, আয়াত: ১১২)

মুমিন নারীরা এখানে মুমিন পুরুষদের মতো, এমন গুরুত্বপূর্ণ বিধান পালনে তাদেরও অংশ ও ভূমিকা রয়েছে। ইরশাদ হয়েছে—মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারী, তারা সবাই পরস্পরের বন্ধু ও সহযোগী। তারা ভালো কাজের হুকুম দেয় এবং খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখে। (সুরা তাওবা ৯, আয়াত ৭১)

দায়িত্বে অবহেলাকারীদের প্রতি নিন্দা
যারা সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজের প্রতিবিধানে এগিয়ে আসে না, তাদের নিন্দাবাদ জ্ঞাপন করা হয়েছে। আল্লাহর কোরআনে বলা হয়েছে- বনী ইসরাঈল জাতির মধ্য থেকে যারা কুফরির পথ অবলম্বন করেছে তাদের ওপর দাউদ ও মরিয়ম পুত্র ঈসার (আ.) মুখ দিয়ে অভিসম্পাত করা হয়েছে। কারণ তারা বিদ্রোহী হয়ে গিয়েছিল এবং বাড়াবাড়ি করতে শুরু করেছিল। তারা পরস্পরকে খারাপ কাজ করা থেকে বিরত রাখা পরিহার করেছিল, তাদের গৃহীত সেই কর্মপদ্ধতি বড়ই জঘন্য ছিল।  (সুরা মায়েদা, আয়াত: ৭৮-৭৯)

এভাবে একজন মুসলমানের পরিচয় শুধু এমনটি হতে পারে না যে, সে শুধু নিজেরই কল্যাণ কামনায় ব্যস্ত থাকবে, ভালো কাজ করবে এবং খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকবে। নিজস্ব পরিমণ্ডলেই তার যাবতীয় কর্মতৎপরতা সীমাবদ্ধ থাকবে। অন্য কোনো ভালো ও কল্যাণের প্রতি তার কোনো মনোনিবেশ থাকবে না; যদিও তার চোখের সামনেই তা নিঃশেষ ও ধ্বংস হয়ে যায়। এমনিভাবে তার চতুর্পাশে কোনো খারাপ কিছুর জন্ম ও লালন-পালন দেখলেও সে তা এড়িয়ে গিয়ে নিজের চরকায় তেল ঢালার কাজে ব্যস্ত থাকবে, একজন মুসলিমের ব্যক্তিত্ব কখনো এমনটি হতে পারে না।

পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘সময়ের কসম! মানুষ আসলেই বড় ক্ষতির মধ্যে রয়েছে। তবে তারা ছাড়া যারা ঈমান আনে ও সৎকাজ করে এবং একজন অন্যজনকে হক থাকার ও সবর করার উপদেশ দেয়। ’ (সুরা আসর, আয়াত: ১-৩)

হাদিসে অন্যায় প্রতিরোধের কথা
নবি (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যদি কোনো খারাপ কাজ বা বিষয় দেখে তাহলে সে যেন হাত দিয়ে তা পরিবর্তন করে দেয়, যদি তা করতে অপারগ হয় তাহলে যেন মুখ দিয়ে তার প্রতিবাদ করে, যদি তাও করতে সক্ষম না হয় তাহলে যেন অন্তর দিয়ে তা ঘৃণা করে, আর এটাই হচ্ছে ঈমানের মধ্যে সবচেয়ে দুর্বলতম স্তর। ’ (বুখারি, হাদিস নং: ১৯৪)

রাসুল (সা.) তখন ইমাম, রাষ্ট্রপ্রধান এবং জাতির শাসক ছিলেন। তা সত্ত্বেও তিনি তার জনসাধারণকে এ মর্মে নির্দেশ দিয়েছেন যে, যখনই তাদের কেউ কোনো খারাপ বা অসৎ কিছু দেখতে পাবে তখন সাধ্যমতো তা পরিবর্তনে যেন এগিয়ে আসে। তার বক্তব্য ছিলো—  যখনি তোমাদের (শাসিত জনগণ) কেউ কোনো খারাপ কিছু দেখতে পায়…’। (মুসলিম, হাদিস নং: ২০১)

অসৎকাজে বাধা দিতে যেসব শর্ত ধর্তব্য
অসৎকাজের বাধা দিতে যারা এগিয়ে, আসে তাদের উচিত এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় শর্তাবলির প্রতি লক্ষ রাখা, যা হাদিসের ভাষ্য থেকে উৎসারিত।

এক. সন্দেহাতীতভাবে শরিয়াহ নিষিদ্ধ কাজ
এখানে ‘মুনকার’ শব্দ বলতে শরিয়া নিষিদ্ধ কাজ বোঝানো হয়েছে, যেগুলো থেকে বেঁচে থাকা মানুষের ওপর আবশ্যক। যে এসব নিষিদ্ধ কাজে জড়িয়ে পড়বে তার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে শাস্তি নির্ধারিত হয়ে যায়; চাই তা কোনো খারাপ কাজে জড়িয়ে পড়া হোক বা কোনো আবশ্যকীয় কাজ ত্যাগ করার কারণে হোক। যদি সগীরা গুনাহের কাজের ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা পাওয়া না যায় তাহলে বিভিন্ন উপলক্ষে এগুলোর অপরাধ থেকে বান্দাকে নিষ্কৃতি দেয়া হয়। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন—  ‘তোমরা যদি বড় বড় গুনাহ থেকে দূরে থাকো, যা থেকে দূরে থাকার জন্য তোমাদের বলা হচ্ছে, তাহলে তোমাদের ছোটখাটো খারাপ কাজগুলো আমি তোমাদের হিসাব থেকে বাদ দিয়ে দেবো এবং তোমাদের সম্মান ও মর্যাদার জায়গায় প্রবেশ করিয়ে দেবো। (সুরা নিসা ৪, আয়াত ৩১)

হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন—পাঁচ ওয়াক্তের নামাজ, জুমা থেকে জুমা, রমজান থেকে রমজান এগুলোর মধ্যবর্তী সব (সগীরা) গুনাহকে মুছে দেয়, যদি কবীরা গুনাহের কাজ থেকে বিরত থাকা যায়।

দুই. অন্যায় প্রকাশ্য রূপ ধারণ করা
অন্যায় অনাচারের প্রতিবিধানে পেশিশক্তি নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে তা অবশ্যই প্রকাশ্য ও দৃশ্যমান হতে হবে। সুতরাং যা মানুষের দৃষ্টির আড়ালে বা বদ্ধ দরজার অন্তরালে সংঘটিত হয়ে থাকে সে ব্যাপারে গুপ্তচরের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া এবং গোপনে খোঁজ-খবর সংগ্রহ করতে তৎপর হওয়া বৈধ হবে না। হাদিসে বলা হয়েছে—  ‘তোমাদের কেউ যখন কোনো অপরাধকর্ম দেখতে পায়…।

এমনকি যে ব্যক্তি কোনো অপরাধ করার পর তা প্রকাশ না করে গোপনে আল্লাহর সঙ্গে বোঝাপড়া করে নেয় এবং ক্ষমা প্রার্থনা করে, আখিরাতের শাস্তিও এমতাবস্থায় আল্লাহ রাব্বুল আলামীন হালকা করে দেন। যেমন বিশুদ্ধ হাদিসে এসেছে—  ‘অপরাধকর্ম করার পর যারা তা প্রকাশ করে বেড়ায়, তারা ছাড়া আমার উম্মতের প্রত্যেক ব্যক্তিই ক্ষমা পাওয়ার উপযুক্ত। ’ (তিরিমিজি, হাদিস নং: ৩৩৫)

তিন. কার্যত শক্তির অধিকারী হওয়া
অন্যায়-অনাচারের প্রতিরোধ ও পরিবর্তন যারা করতে চান, তারা অবশ্যই সক্ষম হতে হবে। এ ক্ষেত্রে বৈষয়িক অথবা আত্মিক শক্তির অধিকারী হতে হবে, যাতে বড় কোনো ক্ষতির শিকার হওয়া ছাড়া সহজেই কার্যোদ্ধারে সক্ষম হতে পারে। রাসুল (সা.) বলেন— ‘যারা শক্তির সাহায্যে পরিবর্তন করতে সক্ষম হবে না, তারা যেন মুখ বা বর্ণনা-বিবৃতি দিয়ে তা পরিবর্তনে সচেষ্ট থাকে। ’

অর্থাৎ যার বাহুবল তথা বৈষয়িক শক্তি নেই সে যেন এ পথ ছেড়ে দিয়ে বর্ণনা-বিবৃতি, প্রতিবাদ মিছিল বা প্রতিবাদ সভা ইত্যাদি নিয়ে সন্তুষ্ট থাকে, যদি সে তা করতে সক্ষম হয়।

শক্তির ব্যবহার সাধারণত ক্ষমতাবানদের জন্য সম্ভব। ক্ষমতাবান ব্যক্তি তার ক্ষমতার পরিধিতে তা ব্যবহার করে অসৎকাজের প্রতিবিধানে সচেষ্ট হতে পারে। যেমন—স্বামী তার স্ত্রীর সঙ্গে, বাবা তার সন্তান-সন্তুতি ও পরিবারের সঙ্গে যারা তার ভরণপোষণে লালিতপালিত, কোনো সংস্থার অধিকারী তার সংস্থার অভ্যন্তরে এবং সরকারপ্রধান বা রাষ্ট্রপ্রধান তার রাষ্ট্রসীমা বা কর্মসীমার পরিধিতে সাধ্য ও সক্ষমতার আওতায় থাকলে… ইত্যাদি।

চার. বড় কোনো ক্ষতির আশঙ্কা না থাকা
শক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে অন্যায়ের বিরোধিতা করতে গিয়ে বড় কোনো ক্ষতির আশঙ্কামুক্ত থাকা জরুরি। যেমন এমন কোনো ফিতনা-ফাসাদের সূচনা হওয়ার আশঙ্কা না থাকা- যেখানে নিরপরাধ রক্তপাত ঘটে থাকে, ইজ্জত-আব্রু নষ্ট হয়ে থাকে এবং জনগণের ধন-সম্পদ লুণ্ঠিত হয়ে থাকে। এর পরিণামে অন্যায়-অনাচার আরো শক্ত করে গেড়ে বসতে সক্ষম হয় এবং জালিমদের জুলুম আরো বেগবান হতে সক্ষম হয়। তাই আলেম-ওলামা সিদ্ধান্ত দিয়েছেন অন্যায়ের প্রতিবিধান করতে গিয়ে যদি এর থেকেও বড় অন্যায়ের সূচনা হওয়ার আশঙ্কা থাকে তাহলে এ ক্ষেত্রে নীরব ভূমিকা পালন করা বৈধ হবে। এ মর্মে বিশুদ্ধ হাদিস রয়েছে—  রাসুল (সা.) হজরত আয়েশাকে (রা.) বলেছেন—  ‘তোমার জাতির সদস্যদের ইসলামের বয়স যদি স্বল্প না হতো তাহলে আমি ক্বাবা শরিফকে ভেঙে ইব্রাহীমের ভিত্তির ওপর নির্মাণ করতাম। ’ (মুসলিম, হাদিস নং: ৩৩৬৫)

পাঁচ. নম্রতা অবলম্বন আবশ্যক
এ প্রসেঙ্গ একটি বিখ্যাত ঘটনা হলো, এক ব্যক্তি খলিফা মামুনের মজলিসে প্রবেশ করে খুবই কঠোর ভাষায় তাকে আদেশ-নিষেধ করতে লাগল এবং তাকে বলল, হে জালেম, হে পাপাচারী… ইত্যাদি। মামুন ছিল বিচক্ষণ ও বুদ্ধিমান এবং ধৈর্যশীল, সে অপরাপর রাজা-বাদশাহদের মতো তাকে শাস্তি দিতে অগ্রসর হয়নি; বরং তাকে বলল, একটু নম্র ও কোমলস্বরে কথা বলো, নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা তোমার চেয়েও উত্তম ব্যক্তিকে আমার চেয়েও খারাপ ও পাপাচারীর কাছে পাঠিয়েছিলেন এবং সঙ্গে সঙ্গে তাকে নম্রতা ও কোমলতার নসিহত করেছিলেন। আল্লাহ তায়ালা মুসা ও হারুনকে (আ.) পাঠিয়েছিলেন, তারা নিশ্চয়ই তোমার থেকে উত্তম; তাদেরকে ফেরাউনের কাছে পাঠিয়েছিলেন, সে নিশ্চয়ই আমার থেকেও খারাপ ও নিকৃষ্ট ছিল; অতঃপর আল্লাহ তায়ালা তাদের উভয়কে বলেছিলেন ‘যাও তোমরা দু’জন ফেরাউনের কাছে, সে বিদ্রোহী হয়ে গেছে। তার সঙ্গে কোমলভাবে কথা বলো, হয়তো সে উপদেশ গ্রহণ করবে অথবা ভীত হবে । (সুরা ত্বহা, আয়াত: ৪৩-৪৪ ঘটনাসূত্র: ইহইয়া উলুম, ইমাম গাজালি)

ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে চিন্তা করলে দেখা যায়, অনৈতিক কাজে বাধা দেওয়া শুধু একজন জনপ্রতিনিধিরই দায়িত্ব নয়, বরং প্রতিটি নাগরিকেরই কর্তব্য। এ প্রসঙ্গে হাদিসে এসেছে, ‘জেনে রেখো! তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল; আর তোমরা প্রত্যেকেই নিজ অধীনস্থদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। অতএব ইমাম, যিনি জনগণের দায়িত্বশীল, তিনি তার অধীনস্থদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবেন। পুরুষ গৃহকর্তা তার পরিবারের দায়িত্বশীল; সে তার অধীনস্থদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। নারী তার স্বামীর পরিবার, সন্তান-সন্ততির উপর দায়িত্বশীল, সে এসব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। কোন ব্যক্তির দাস স্বীয় মালিকের সম্পদের দায়িত্বশীল; সে এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। অতএব জেনে রাখ, প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং তোমাদের প্রত্যেকেই নিজ নিজ দায়িত্বাধীন বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। (বুখারি, হাদিস নং: ৭১৩৮)

সবার ঘরে ঘরে গিয়ে অনৈতিক কাজে বাধা দেওয়া হয়ত কারো পক্ষে সম্ভব নয়, কিন্তু প্রকাশ্যে ও দিবালোকে রাস্তার ধারে কেউ অপরাধ করলে বাধা দেওয়া সবার কর্তব্য ও অবশ্যিক দায়িত্ব। মানুষ এ ধরনের দায়িত্ব থেকে দূরে সরার কারণেই নয়ন বন্ডদের মত সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে রাস্তায় মানুষ হত্যা করে। আর অন্যরা কাপুরুষের মতো ভিডিও করে।

মহান আল্লাহ আমাদের সব ধরনের প্রতিহিংসামূলক কর্মকাণ্ড, অন্যায়-অবিচার ও ধর্ষণ-ছিনতাই এবং অন্যসব অপরাধ থেকে দূরে রাখুন।

লেখক: ইমাম ও খতিব, মসজিদুল আবরার, বারইয়ার হাট পৌরসভা, চট্টগ্রাম।

ইসলাম বিভাগে আপনিও লিখতে পারেন। লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ২০০০ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০১৯
এমএমইউ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।