শুক্রবার (২০ মার্চ) নারায়ণগঞ্জ মাসদাইর কবরস্থান জামে মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করে বিষয়টি জানান শামীম ওসমান নিজেই।
তিনি এসময় বলেন, কোনো কিছুর বিনিময় ছাড়াই স্বেচ্ছায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে হাফেজ সাহেব ও এতিমরা ৫২৭৫ বার কোরআনে খতম দিয়েছেন।
‘পাশাপাশি পৃথিবীব্যাপী যে মহামারিতে মানব সম্প্রদায় আজ কঠিন মুহূর্তে উপনীত হয়েছে সেখানে একমাত্র সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ ও তার কাছে ক্ষমা ভিক্ষা ছাড়া আমাদের আর কিছুই করার নেই। তাই পবিত্র কোরআনখানির মাধ্যমে এই পন্থাকেই আমি সর্বোত্তম বলে মনে করেছি। ’
শামীম ওসমান এসময় গণমাধ্যমকে বলেন, এই মসজিদের পাশেই কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত আমার দাদা ও বাংলাদেশ আওয়ামীলী গের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য, ভাষা সৈনিক খান সাহেব ওসমান আলী, বঙ্গবন্ধুর সান্নিধ্য ও স্নেহ পাওয়া আমার মা ভাষা সৈনিক নাগিনা জোহা, বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, ভাষা সৈনিক আমার বাবা একেএম সামছুজ্জোহা, যিনি ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে মুক্ত করতে গুলি খেয়েছিলেন। এখানে চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন আমার বড় ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসিম ওসমান, যিনি বিয়ের পরদিনই বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিশোধ নিতে প্রতিরোধ যুদ্ধে চলে গিয়েছিলেন।
‘যে নারায়ণগঞ্জে জাতির জনকের ব্যাপক বিচরণ ছিল, যে নারায়ণগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জবাসীকে বঙ্গবন্ধু ভালোবাসতেন, সেই নারায়ণগঞ্জর মাটিতে ব্যাপকভাবে মুজিববর্ষ পালনের পরিকল্পনা ছিল আমাদের। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী করোনা পরিস্থিতিতে আল্লাহকে খুশি করাই এখন সর্বোত্তম এবং একমাত্র পথ। ’
শামীম ওসমান বলেন, বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা যারা হিমালয় পর্বতের মতো শোক নিয়ে বুকে চেপে আছেন তাদের জন্য স্বতঃস্ফূর্তভাবে বিশেষ দোয়া করা হয়েছে। কারণ তারা এখনও চিৎকার দিয়ে কাঁদতে পারেননি। তারা হয়তো সেদিনই চিৎকার করে কাঁদবেন, কান্নার নোনা জলে বুকের জমানো শোকের পাথর হয়তো সেদিনই গলবে, যেদিন বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে পারবেন, এদেশের প্রতিটি মানুষের পেটে ভাত থাকবে, মাথার উপর ছাদ থাকবে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর মতো নেতা হাজার বছরেও আর আসবে না কিন্তু আমরা মনে করি সেই বঙ্গবন্ধুর ভূমিকায় ইতোমধ্যেই উত্তীর্ণ হয়েছেন শেখ হাসিনা। কারণ সামনে থেকে বারবার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন তিনি। আর আরেকজন নিয়েছেন বঙ্গমাতার ভূমিকা। যিনি পেছন থেকে তার বড় বোনের পাশে দাঁড়িয়েছেন। এই দুই বোন সবকিছুর ঊর্ধ্বে উঠে মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার আপ্রাণ চেষ্টা করছেন। আল্লাহ যেন তাদের কবুল করেন, হেফাজত করেন সেজন্য দোয়া করা হয়েছে।
‘আতঙ্কিত না হয়ে আতঙ্ক না ছড়িয়ে যেন আমরা সবাই সবার পাশে দাঁড়াই। এই পবিত্র কোরআন খতমের ফজিলত যেন আল্লাহ আমাদের দান করেন, সদকায়ে জারিয়া হয়ে যেন আল্লাহ সমস্ত পৃথিবীর মানুষকে এই মহামারি থেকে রক্ষা করেন, হেফাজত করেন। ’
করোনা ইস্যুতে বাজার পরিস্থিতি নিয়ে শামীম ওসমান বলেন, এখন মজুদদারির সময় নয়, পাশে দাঁড়ানোর সময়। যারা দাম বাড়িয়ে অর্থ কামাচ্ছেন তারাও তো এই মহামারীরিতে আক্রান্ত হতে পারেন, এটা চিন্তা করলেই মনে হয় তাদের হেদায়েত আসবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২১ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০২০
এএ