ধর্ম প্রতিমন্ত্রী আলহাজ অ্যাডভোকেট শেখ মো. আব্দুল্লাহ্ সচিবালয়ে এ তথ্য জানান।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৩০ জুলাই অর্থাৎ ৯ জিলহজ হজ অনুষ্ঠিত হবে।
সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১ মার্চ আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ২ মার্চ থেকে নিবন্ধন শুরু হয়েছিল।
তিনি বলেন, ২০২০ সালে হজ কার্যক্রমে অংশ গ্রহণকারী এজেন্সিসমূহের ‘হজযাত্রী নিবন্ধন ব্যাংক হিসাব’ ব্যবহার বিষয়ে বেশ কিছু নির্দেশ গুরুত্ব সহকারে পালন করতে হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২ মার্চ থেকে হজযাত্রী নিবন্ধন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বর্তমানে ওমরাহযাত্রী প্রেরণ ও সৌদি আরবের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ আছে। তবে পরিস্থিতি উন্নতি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ২০২০ সালে হজযাত্রী প্রেরণের লক্ষ্যে নিবন্ধন কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়েছে।
হজ সংক্রান্ত বেশ কিছু সিদ্ধান্ত জানান প্রতিমন্ত্রী।
বর্তমান পরিস্থিতিতে বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় প্লেন ভাড়া এবং সার্ভিস চার্জ বাবদ ১ লাখ ৫১ হাজার ৯৯০ টাকার অতিরিক্ত অন্য কোনো ব্যয় বাবদ কোনো অর্থ গ্রহণ করা যাবে না।
তিনি বলেন, অবশিষ্ট অর্থ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জমা প্রদান করার জন্য হজযাত্রীকে প্রস্তুত রাখতে হবে। নিবন্ধনের সময় হজযাত্রী এবং এজেন্সিকে আবশ্যিকভাবে নগদ লেনদেন পরিহার করতে হবে। কোন অবস্থাতেই মধ্যস্বত্বভোগী বা তথাকথিত গ্রুপ লিডারের মাধ্যমে লেনদেন করা যাবে না। নিবন্ধনের সময় হজযাত্রী কর্তৃক জমাকৃত অর্থ শুধুমাত্র হজ কার্যক্রমেই ব্যয় করতে হবে। নিবন্ধন ভাউচারের মাধ্যমে ব্যাংকে টাকা জমা প্রদান করে নিবন্ধন করতে হবে। হজযাত্রী কর্তৃক এজেন্সির ব্যাংক হিসাব ব্যতীত কোনভাবে নগদ লেনদেন করা হলে এজন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, নিবন্ধনের সময় হজযাত্রীর জমা দেওয়া অর্থ হজ কার্যক্রম ব্যতীত অন্য কোন খাতে ব্যয় করা যাবে না। নিবন্ধনের জন্য জমা দেওয়া অর্থ ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা ব্যতিরেকে কোন অবস্থাতেই উত্তোলন করা যাবে না। পরবর্তী নির্দেশনা প্রদান না করা পর্যন্ত সৌদি আরবে বাড়ি ভাড়া বা অন্য কোন খাতে ব্যয়ের জন্য অর্থ প্রেরণ করা যাবে না এবং বাংলাদেশেও প্লেন ভাড়া বা অন্যখাতে অর্থ ব্যয় করা যাবে না। বিদ্যমান করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির কারণে হজযাত্রী প্রেরণ করা সম্ভব না হলে সংশ্লিষ্ট এজিন্সকে জমা দেওয়া অর্থ হজযাত্রী কাছে ফেরত দিতে হবে।
প্রতিমন্ত্রী জানান, বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় প্লেন ভাড়া এবং সার্ভিস চার্জ বাবদ১ লাখ ৫১ হাজার ৯৯০ টাকার অতিরিক্ত অর্থ কোন এজেন্সি অথবা অন্য কোন ব্যক্তি দাবি করলে কোনো অবস্থাতেই সম্মানিত হজযাত্রীগণ তা প্রদান করবেন না। এমন কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির উদ্ভব হলে তা ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে তাৎক্ষণিক অবহিত করতে হবে।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীদের জন্য আগের ন্যায় সম্পূর্ণ টাকা জমা দিয়ে হজযাত্রী নিবন্ধনের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
প্রতিমন্ত্রী করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব থেকে রক্ষা পেতে সবাইকে সরকার ঘোষিত নিয়ম কানুন, স্বাস্থ্যবিধি, মসজিদে নামাজ আদায়ের বিষয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রদত্ত নির্দেশনা পালনের আহ্বান জানান।
তিনি বিশ্বব্যাপী এ কঠিন বিপদের মুহুর্তে মুসলমানদের মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে বেশি বেশি তাওবা, ইস্তেগফার এবং অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের নিজ নিজ বিধান মতে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিসভার বৈঠকে হজ প্যাকেজ অনুমোদন দেওয়া হয়। এবার সরকারি ব্যবস্থাপনায় একটি বাড়িয়ে তিনটি হজ প্যাকেজ অনুমোদন করেছে সরকার। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় একটি প্যাকেজ অনুমোদন করা হয়েছে।
সরকারি ব্যবস্থাপনার প্যাকেজ-১ এর মোট ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় ৬ হাজার ৫শ টাকা বেশি। প্যাকেজ-২ এর মোট ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় ১৬ হাজার টাকা বেশি। সরকারি ব্যবস্থাপনার জন্য ২০২০ সালে প্রথমবারের মত ৩ লাখ ১৫ হাজার নতুন প্যাকেজ-৩ এর প্রস্তাব করা হয়েছে।
বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীর জন্য ৩ লাখ ৫৮ হাজার টাকার প্যাকেজ প্রস্তাব করা হয়েছে। বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজ এজেন্সিরা সরকারি ব্যবস্থাপনার প্যাকেজ-১, প্যাকেজ-২ ও প্যাকেজ-৩ এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে একাধিক প্যাকেজ ঘোষণা করতে পারবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৭ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০২০
এমআইএইচ/এএটি