বৃহস্পতিবার (০৯ এপ্রিল) যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যে দিয়ে পবিত্র শব-ই-বরাত পালন করা হচ্ছে। এমনই দিনে পাড়া-প্রতিবেশী, আত্মীয়-স্বজন এবং অসহায় দরিদ্র মানুষদের মধ্যে হালুয়া-রুটি বিতরণ করার প্রচলন ছিল।
সাধারণত আসরের নামাজের পর থেকে মাগরিবের আগ পর্যন্ত ঘরে ঘরে হালুয়া-রুটি বিতরণ করা হতো। কখনও বাড়ির ছোটরা আবার কখনও বড়রাও বিতরণ করে থাকে হালুয়া-রুটি-সুজি। তবে এবারের চিত্র ব্যতিক্রম। অনেক বাড়িতেই প্রতিবারের মতো এবার তৈরিই হয়নি এসব খাবার। কোনো কোনো বাড়িতে তৈরি হলেও হয়নি আশেপাশে বিতরণ। একইসঙ্গে বসেনি পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী বর্ণিল সাজের রুটির পসরা।
কেরানীগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা এবং একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে কর্মরত মিনালা দিবা মুঠোফোনে বলেন, ছোটবেলা থেকে এভাবে হালুয়া-রুটি তৈরি করা তারপর অল্প করে হলেও প্রতিবেশী-আত্মীয়দের মধ্যে বিতরণ করার বিষয়টি দেখে আসছি। নিজেও যেতাম। ভালো লাগতো। কিন্তু এবার ব্যতিক্রম। প্রতিবার পুরান ঢাকা থেকে মিষ্টি রুটি নিয়ে আসা হতো। এবার সেটিও হয়নি। করোনার কারণে সেভাবে হালুয়াও বানানো হয়নি। সাধারণত সুন্দর করে হালুয়া কেটে উপরে বাদাম-কিশমিশ দিতাম, এবার কোনোরকমে বানানো হয়েছে বাসায়, ছোটরা খায় তার জন্য। আর কোনো বাসায় এবার আর দেওয়া হয়নি।
মিরপুরের গৃহিণী সামসুন নাহারের অবস্থাও প্রায় একই রকম। বাংলানিউজকে এই গৃহিণী বলেন, এবার করার ইচ্ছেও ছিল না। তবুও বাসায় সবাই এদিন চালের রুটি দিয়ে একটু হালুয়া খায়। প্রতিবার ডালের হালুয়ার সঙ্গে সুজির হালুয়া, গাজরের হালুয়া করে থাকি। এবার অল্প করে ডালের হালুয়া করেছি শুধু।
তবে কোনো কোনো বাসাবাড়িতে আবার একেবারেই হয়নি হালুয়া-রুটির আয়োজন। বনশ্রী থেকে গৃহিণী রত্মা জামান বলেন, প্রতিবার হালুয়া-রুটির আয়োজন হয়। এবার হয়নি। কিছু জিনিস ছিল না। বাইরে বের হয়ে আনার ইচ্ছে করেনি আর। এক করোনায় এক বছর হালুয়া-রুটি না খেয়ে বেশি বেশি ইবাদত করেও থাকা যায়।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০০২
এসএইচএস/এইচএডি