ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

যে কারণে ধ্বংস হয় নেক আমল 

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০২১
যে কারণে ধ্বংস হয় নেক আমল  ছবি: সংগৃহীত

মানুষের জীবনের সবচেয়ে মারাত্মক ক্ষতিকারক দিক হলো হিংসা ও অহংকার। হিংসা এবং অহংকার মানুষের শান্তিপূর্ণ জীবনকে করে তুলে বিষময়।

হিংসা মানুষের ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনকে করে তুলে দুর্বিষহ ও বিষময়।  

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, আল্লাহর জমিনে তোমরা দম্ভ ভরে চলো না, কেননা তুমি কখনই এ জমিন বিদীর্ণ করে এর নিচে যেতে পারবে না, আর উচ্চতায় তুমি কখনো পর্বতসমানও হতে পারবে না। (সুরা বনী ইসরাইল, আয়াত ৩৭)।  

সুরা হুজরাতের ১১ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন, হে ইমানদারগণ, তোমাদের কোনো সম্প্রদায় যেন অপর কোনো সম্প্রদায়কে বিদ্রুপ না করে, হতে পারে তারা বিদ্রুপকারীদের চেয়েও উত্তম। আর কোনো নারীও যেন অন্য নারীকে বিদ্রুপ না করে, হতে পারে তারা বিদ্রুপকারীদের চেয়েও উত্তম। আর তোমরা একে অপরের নিন্দা করো না এবং তোমরা একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না।  

ইমানের পর মন্দ নামে ডাকা কতই না নিকৃষ্ট। যারা এ আচরণ থেকে ফিরে না আসবে তারা জালেম। আমাদের মনে রাখতে হবে হিংসা-বিদ্বেষ একটি মারাত্মক ব্যাধি। হিংসুক ব্যক্তি যখন হিংসাত্মক কাজে লিপ্ত হয় তখন তাকে পরিত্যাগ করা অবশ্য কর্তব্য।  

মানুষ কেন একজন আরেকজনকে হিংসা করে? সমাজবিজ্ঞানীদের দৃষ্টিতে তা হলো- পরশ্রীকাতরতা, শত্রুতা, দাম্ভিকতা, একে অপরকে ঈর্ষা করা, নেতৃত্ব পাওয়া, নিজেকে যোগ্য ভাবা, ব্যক্তিগত সুবিধা হাসিল করা, ক্ষমতা পাওয়া ইত্যাদি।  

হিংসুক ব্যক্তি মনে করে সে-ই সমাজে সম্মানিত ও দামি আর সবাই তার চেয়ে নগণ্য। এ জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামিন হিংসা-বিদ্বেষ থেকে এবং হিংসুকের অনিষ্ট থেকে বাঁচার জন্য পবিত্র কোরআনে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।  

সুরা ফালাকের ৩ নম্বর আয়াতে বর্ণিত হয়েছে- ‘হিংসুক ব্যক্তির হিংসার অনিষ্ট থেকেও আমি তোমার আশ্রয় চাই, যখন সে হিংসা করে। ’ 

নবী করিম (সা.) বলেন, ‘তোমরা হিংসা থেকে বেঁচে থাক। কেননা হিংসা নেক আমলকে এমনভাবে ধ্বংস করে দেয়, যেমন আগুন কাঠের টুকরাকে খেয়ে ফেলে। (জ্বালিয়ে দেয়)। (আবু দাউদ, মিশকাত)।  

হিংসুটেকে সমাজে কেউ পছন্দ করে না। সবাই তাকে খারাপ দৃষ্টিতে দেখে। সমাজে সবার সঙ্গে বসবাস করলেও কেউ তাকে ভালো জানে না।  

সুরা নিসার ৩৪ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন, আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে মানুষকে যা দিয়েছেন সেজন্য কি তারা তাদের ঈর্ষা করে? 

আল্লাহ রাব্বুল আলামিনও ঈর্ষাকারীকে পছন্দ করেন না। কোরআন ও সুন্নাহর আলোকে অহংকারও অনেক বড় গুনাহের কাজ। আমাদের মনে রাখতে হবে অহংকারের মাধ্যমেই সংঘটিত হয়েছিল প্রথম পাপ।  

অহংকারীকে আল্লাহতায়ালা কখনো পছন্দ করেন না। কবিরা গুনাহর মধ্যে অহংকার অন্যতম। আমাদের মনে রাখতে হবে আমরা বুঝে না বুঝেই অহংকার করি। যা কাম্য নয়। কারণ অহংকাই পতনের মূল।  

আল্লাহ বলেন, তোমরা আমাকে ডাক, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব, যারা আমার ইবাদত নিয়ে অহংকার করে তারা শিগগিরই অপমানিত হয়ে জাহান্নামে প্রবেশ করবে। (সুরা মুমিন (৪০), আয়াত ৬০)।  

অহংকারবশত ইবলিশ আল্লাহর আদেশ অমান্য করল এবং আদমকে সেজদা না করার দরুন জান্নাত থেকে বহিষ্কৃত হলো।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৩৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০২১
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।