মৌলভীবাজার: অনেকেই জানেন যে, ঘোড়া দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ঘুমায়। এ কথাটি অনেককাল আগে থেকেই আমাদের শেখানো হয়েছে, পড়ানো হয়েছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের সদস্য এবং পাখি আলোকচিত্রী আবু বকর সিদ্দিক একটি ছবি তার ক্যামেরায় ধারণ করেছেন, যেখানে দেখা যাচ্ছে ঘোড়াটি লম্বা হয়ে শুয়ে ঘুমাচ্ছে। হঠাৎ করে ছবিটি দেখলে মনে হবে একটি ঘোড়া দিব্বি দাঁড়িয়ে শারীরিক পরিচর্যায় ব্যস্ত। আরেকটি ঘোড়া মনে হয় মরে পড়ে আছে। আসলে কিন্তু তা নয়! ছবির ওই শুয়ে পড়া ঘোড়াটি মারা যায়নি। সে ঘুমের ঘোরে মত্ত।
এ ব্যাপারে আবু বকর সিদ্দিক বলেন, এই ছবিটি আমি কেরানীগঞ্জ থেকে তুলেছি। আমরা প্রথম ভেবেছিলাম ঘোড়াটি মনে হয় মরে পড়ে আছে। অনেকক্ষণ ধরে ঘোড়াটিকে লক্ষ্য করলাম। আসলে তা নয়, ঘোড়াটি ঘুমাচ্ছিল। কাছে একটি গরু চলে এলে সে আপনা থেকেই উঠে দাঁড়িয়েছিল।
স্তন্যপায়ী এবং চতুষ্পদ অর্থাৎ চার পা বিশিষ্ট খুড়ওয়ালা প্রাণী ঘোড়া। পায়ে খুড় থাকায় সে দ্রুতবেগে ছুটতে পারে। এই বিশেষ গুণের জন্য প্রাচীনকালে যোগাযোগের অন্যতম বাহক হিসেবে মানুষ ঘোড়াকে ব্যবহার করত। এখনও বহু দেশের বিভিন্ন নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে ঘোড়া প্রশিক্ষণ কাজের জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ফ্রিজিয়ান, আখাল তেকে, ন্যাবস্ট্রাপ, জিপসি ভ্যানার এবং গোন্ডেন টেনেসি ওই পাঁচটি অনন্য প্রজাতির ঘোড়া রয়েছে পৃথিবীতে।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এবং গবেষক ড. কামরুল হাসান বাংলানিউজকে বলেন, ‘দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ঘুমানোর শরীরিক সক্ষমতা ঘোড়ার আছে। অনেকক্ষেত্রেই সেটা করে থাকে। ঘোড়ার শরীরের পেশির লিগামেন্ট ও টেন্ডনের বিন্যাস তাদের নিশ্চিন্তে দাঁড়িয়ে বিশ্রাম নিতে এবং ঘুমাতে সাহায্য করে।
তবে মাটিতে শুয়েও সে যে ঘুমাবে না এমনটাও কিন্তু নয়। অনেকক্ষেত্রে ঘোড়ার শোবার জন্য যথেষ্ট জায়গা থাকে না। এ অবস্থায় দেয়ালে হেলান দিয়ে তারা গভীরভাবে ঘুমায়। শারীরিকভাবে অসুবিধা হলে প্রাণীটি হেঁটে যাওয়ার বা দৌঁড়াবার ক্ষমতা স্বাভাবিকভাবেই হারাবে। তখন ঘোড়া মাটিতে বসে পারে। আবার বেশি দুর্বলতা হলে মাথা ও শরীর মাটিতে ফেলে হয়তো বিশ্রাম নিতেও পারে বলে জানান ওই প্রাণীবিদ।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০২৩
বিবিবি/এএটি