ঢাকা, রবিবার, ১৪ পৌষ ১৪৩১, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

ভূতের বাড়ির অদ্ভুত কাণ্ড

ইন্দ্রজিৎ সরকার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১৩
ভূতের বাড়ির অদ্ভুত কাণ্ড

যতদূর চোখ যায়-নীল আকাশ, নিচে সবুজ মাঠ। মাঝে মাঝে বাঁশঝাড়, বড় বড় গাছের ছায়ায় ঘেরা ছোট ছোট বাড়ি-ঘর।

দুনিয়ার সব সুখ যেন সেখানে। ইচ্ছেমতো খোলা মাঠে ছোটাছুটি, পুকুরে সাঁতার কাটা, বড়শি দিয়ে মাছ ধরা, চাঁদনি রাতে বারান্দায় বসে দাদুর মুখে গা-ছমছমে ভূতের গল্প শোনা- আরও কত কী!

ভাবতেই মন খারাপ হয়ে যায় রিংকুর। এসবের কিছুই সে এবার উপভোগ করতে পারবে না। প্রতি বছর গ্রীষ্মের ছুটিতে সে বাবা-মার সঙ্গে দাদুর বাড়িতে বেড়াতে যায়। বলতে গেলে সারাবছর এই ছুটিটার জন্য মুখিয়ে থাকে সে। শহরের এই উঁচু উঁচু দালান-কোঠায় বন্দি হয়ে থাকতে তার একটুও ভালো লাগে না। কিন্তু কী আর করবে, তার কপালটাই এরকম।

স্কুলে লম্বা ছুটি দেবে- এই আনন্দে গত কয়েকদিন ধরে রিংকুর একদম পড়ায় মন বসছিল না। শেষের দিন-মানে যেদিন ক্লাস শেষ হয়ে ছুটি শুরু হবে, সেদিন দুপুর অবধি সব ঠিকঠাক ছিল। তারপর রাতে হঠাৎ করেই প্রচণ্ড জ্বর। মা মাথায় পানি ঢাললেন, জলপটি দিলেন। কিন্তু কিছুতেই জ্বর কমছে না। ভোররাতে তো সে জ্বরের ঘোরে আবোল-তাবোল বকতে শুরু করল। পরদিন ডাক্তার কাকা এলেন বাসায়। রিংকুকে পরীক্ষা করে বললেন, ভয়ের কিছু নেই।

তারপর একটা সিরাপ আর একটা ট্যাবলেটের নাম লিখে ওর বাবার হাতে কাগজটা দিলেন। দুদিন ধরে তিনবেলা করে তাই খাচ্ছে। আজ তৃতীয় দিনে এসে জ্বরটা কমেছে। তবে শরীর খুব দুর্বল।

ভীষণ খারাপ লাগছে রিংকুর। ছুটির প্রথম দিনই গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। তার বদলে এখনও সে বিছানায় পড়ে আছে। মা সকালে বাবার সঙ্গে আলোচনা করছিল গ্রামের বাড়িতে না যাওয়ার ব্যাপারে। বাবাও তাতে সায় দিলেন। রিংকুর চোখ ফেটে জল আসছে। এখন তো সে মোটামুটি সুস্থ। দু’একদিন পরও তো যাওয়া যেতে পারে। এখন না গেলে আবার কতদিন পর সুযোগ হবে কে জানে।

বাবা কীভাবে রিংকুর মনের কথা পড়তে পারলেন বলা মুশকিল। তবে পরদিন সকালে উঠেই তিনি ঘোষণা দিলেন, আজ সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে যাওয়া হবে। রিংকু তো আনন্দে বাকহারা হয়ে গেল। মা বললেন, ওকে এই অসুস্থ অবস্থায় নিয়ে যাওয়াটা কি ঠিক হবে? উত্তরে বাবা বললেন, কোনো অসুবিধা নেই। আমি ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে নিয়েছি। ও তো এখন মোটামুটি সুস্থই। গ্রামের স্বাস্থ্যকর জল-হাওয়ায় আরও দ্রুত চাঙা হয়ে উঠবে। বাবাকে যে কী বলে কৃতজ্ঞতা জানাবে তার ভাষা খুঁজে পাচ্ছিল না রিংকু। গ্রামে গিয়ে কী কী করবে মনে মনে তার একটা তালিকাও সে করে ফেলল। তখনও কী সে জানতো, খেলাধুলা-ছুটোছুটি নয়, গ্রামে তার জন্য এবার অপেক্ষা করে আছে ভ‍ূত-রহস্য।

২.
চাচাতো ভাই সজল আর রিংকু ধানক্ষেতের পাশে বসে লবণ-মরিচের গুঁড়ো দিয়ে মাখিয়ে কাঁচামিঠা আম খাচ্ছে। এই আম কাঁচা খেতেও টক লাগে না। রিংকুর তাই খুবই পছন্দ। ওরা দু’জন প্রায় একই বয়সী। একই ক্লাসে পড়ত। কিন্তু সজল একবার অসুস্থ হওয়ার কারণে বার্ষিক পরীক্ষা দিতে পারল না। তাই ও এখন ক্লাস ফাইভে, রিংকু সিক্সে। দু’জনের মধ্যে খুব ভাব।

এটা-সেটা নিয়ে গল্প করতে করতে সজলই প্রথম জানাল ঘটনাটা-জানিস, আমাদের গ্রামে না একটা ভূতের বাড়ি আছে।

-তাই নাকি? কই, গতবার যখন এলাম তখন তো কিছু বলিস নি।
-তখন তো ভ‍ূত ছিল না। এই পাঁচ-ছয় মাস ধরে ভ‍ূত সেখানে আস্তানা গেড়েছে।
-কোথায় সেটা? কৌতূহলী হয়ে ওঠে রিংকু।

-আমাদের গ্রামের শেষ মাথায় একটা জঙ্গলের মতো জায়গা আছে। তারই মধ্যে আছে একটা ভাঙাচোরা বাড়ি। ওখানে কেউ থাকে না। তাই ভূতেরা দখল করে নিয়েছে।

-যাহ্, ভ‍ূত আবার বাড়ি দখল করে নেয় নাকি? তাছাড়া আব্বু বলেছে, ভ‍ূত বলে আসলে কিছু নেই। ওগুলো মানুষের বানানো গল্প।

-আরে না, সত্যিই ভ‍ূত আছে। রাতের অন্ধকারে দূর থেকে দেখা যায়, আগুনের মতো জ্বলছে ভূতের চোখ। আমার কথা বিশ্বাস না হলে, সবুজকে জিজ্ঞেস করে দেখতে পারিস। ও আর আমি তো একদিন একসাথেই দেখেছি। আর শুধু আমরা কেন, সারা গ্রামের লোক জানে এ কথা।
-আমার বিশ্বাস হয় না। দেখাতে পারবি?
-হ্যাঁ পারব।
-কবে দেখাবি বল?
-আজকেও দেখতে পারিস। কিন্তু রাতে যেতে হবে।
-রাতে কি বাড়ি থেকে বের হওয়া যাবে?
-অসুবিধা নেই। আমি তোকে বের করে নিয়ে যাব। জেগে থাকিস। তুই আবার বেশি ভয় পাবি না তো? দানিশ কাকা তো ভুতের চোখ দেখে অজ্ঞান হয়ে গেছিল।
-না, আমি এত সহজে ভয় পাই না। আমি যাব। বীরদর্পে বলল রিংকু।

গ্রামের বাড়িতে সবাই রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ে। রাত ৮টার মধ্যেই সবার খাওয়া শেষ। সাড়ে ৮টা নাগাদ সজল আর রিংকু এক ঘরে শুয়ে পড়ল। রাখাল ভাইও এই ঘরে ঘুমাতে এলেন। উনি সজলদের গরু-ছাগল দেখাশোনা করেন-তাই তার নামই হয়ে গেছে রাখাল। তো রাখাল ভাই না ঘুমালে ওরা বের হতে পারবে না। অপেক্ষা করতে করতে একসময় রাত সাড়ে ৯টা বাজল। রাখাল ততক্ষণে গভীর ঘুমে তলিয়ে পড়েছে বলে মনে হলো। সজল আর রিংকু কোনো শব্দ না করে ঘর ছেড়ে বের হলো।

দু’জনে চুপিচুপি ক্ষেতের আইল দিয়ে হাঁটতে থাকল। অনেকটা পথ এঁকেবেঁকে হাঁটার পর তারা একটা গাছের নিচে পৌঁছল। একটু সামনে থেকে শুরু হয়েছে জঙ্গল। সেখানে সজল তাকে থামিয়ে সামনে তাকাতে বলল। অন্ধকারে কিছুই ভালো করে দেখা যাচ্ছে না। একটু পর সজলই তাকে আঙুল উঁচিয়ে জঙ্গলের ফাঁকে একটা দিকে তাকাতে বলল।

 হ্যাঁ, ওইতো দেখা যাচ্ছে, অন্ধকার ভেদ করে গনগন করে জ্বলছে ভয়ংকর দুটো চোখ। যেন কোন দৈত্য এই গ্রামের দিকে তাকিয়ে আছে। মাঝেমধ্যে চোখ দুটো ডানে-বামেও একটু ঘুরছে। রিংকুর গায়ে কাঁটা দিলো। সে সজলের একটা হাত শক্ত করে ধরে বলল-চল বাড়িতে যাই। সজলও মাথা ঝাঁকিয়ে রওনা হলো।

এ সময় হঠাৎ পিছন থেকে কেউ ডাকল- দাঁড়াও। সজল-রিংকুর কলজে শুকিয়ে এলো। আতঙ্কে শরীর কাঁপছে। পিছনে ফিরে তাকানোর সাহস পেল না। দৌড় দেবে কি-না তাই ভাবছে। কিন্তু ভূতের হাত থেকে কি দৌড়ে পালানো যায়? তাদের ভুল ভাঙল পরমুহূর্তেই। ওদের পাশে এসে দাঁড়াল রাখাল ভাই। দু’জনে একসঙ্গে বলল, আপনি?

-হ্যাঁ। তোমাদের ঘর থিকা বাইর হইতে দেইখা পিছু নিছিলাম।
-ও। তা আমাদের বলেন নি কেন? রিংকু জানতে চায়।
-না, চিন্তা করলাম, দেহি তোমরা কি করো।   তা ভ‍ূত দেখতে আইছিলা?
-হুম। রিংকু উত্তর দেয়। তারপর অনুরোধ করে, রাখাল ভাই, আব্বু-আম্মুকে কিন্তু বলবেন না।
-আচ্ছা কমু না। তয় রাত-বিরাতে এমন বাইরানোও ঠিক না। পরামর্শ দেয় রাখাল।
-আর আসব না। সজল কথা দেয়।

তিনজনে একসঙ্গে বাড়িতে ফিরে ঘুমিয়ে পড়ল।

৩.

ভূত দেখার পরদিন এ নিয়ে সজলের সঙ্গে কোন কথাই বলল না রিংকু। এমনকি সজলের সঙ্গে ঘুরেও বেড়াল না। সারাটা দিন যে সে কোথায় কাটাল কেউ জানে না। তারও পরদিন সকালে রিংকু সজলকে বলল, তোদের এই ভূত মনে হয় আসল না।
-কেন তোর এমন মনে হলো ? সজলের প্রশ্ন।
-কারণ আছে। সেটা পরে বলব। তোরা কেউ কখনও ওই ভ‍ূতের বাড়িতে ঢুকেছিলি?
-আগে দু’একবার গেছি। ভূত দেখার পর কেউই আর ওদিকে যায় না। কেন বলতো?
-সবই বলব। তার আগে বল, সন্ধ্যায় তুই কি আমার সঙ্গে ভূতের বাড়িতে যেতে পারবি?
-মাথা খারাপ! দিনেই কেউ যায় না, আর রাতে।
-ও। তাহলে তোকে ছাড়াই যেতে হবে।
-তুই পাগল হয়ে গেছিস? ভূত একদম ঘাড় মটকে ফেলে রাখবে।
-ওখানে কোন ভূত আছে কি-না, সন্ধ্যায় গিয়ে আমি সেটাই দেখতে চাই। রাখাল ভাই আমার সঙ্গে যেতে রাজি হয়েছে। ভাবলাম তোকেও নিয়ে যাই।
সজল আমতা আমতা করে বলল, কোনো বিপদ হবে না তো?
-তা বলা যাচ্ছে না। তবে আমরা প্রস্তুতি নিয়ে যাব।
-আচ্ছা, দিনে গেলে হয় না?
-না। অন্ধকার না হলে তো ভুত দেখা যায় না, তাই না?
-হ্যাঁ, তাও ঠিক। তাহলে আমরা সবুজকেও সঙ্গে নেই। ও অনেক সাহসী ছেলে।
-সবুজ কে? এর আগেও একবার ওর কথা বলেছিলি।
-ও আমার খুব কাছের বন্ধু। পড়াশোনা করে না। ক্ষেতের কাজ করে।
-আচ্ছা। কিন্তু আগে কাউকে কিছু বলা যাবে না। বিকেলের দিকে তুই সবুজকে রেডি থাকতে বলিস।

সন্ধ্যায় বেরোতে ঝামেলা হবে বলে পড়ন্ত বিকেলে সজল ও রিংকু বাড়ি থেকে বের হলো। বাবা-মাকে বলল, সবুজের বাড়িতে যাচ্ছে। সঙ্গী হিসেবে তারা রাখালকে নেওয়ায় অভিভাবকরা আর বাধা দেন নি। সবুজের বাড়িতে গিয়ে তাকে তৈরি অবস্থাতেই পাওয়া গেল। তারপর চারজনের দলটি রওনা হলো জঙ্গলের দিকে। যেতে যেতে রিংকু অপর তিনজনকে কিছু কাজ বুঝিয়ে দিল। তারা যখন জঙ্গলের কাছাকাছি পৌছুল, তখন গোধুলী। একটা ঝোপের আড়ালে বসে তারা কিছুক্ষণ গল্প করল। অন্ধকার নামতেই দলটি এগিয়ে গেল ভুতের বাড়ির পেছন দিকে। সাবধানে পা ফেলে যথাসম্ভব শব্দ এড়িয়ে তারা পৌঁছুলো বাড়ির পেছনের ভাঙা দেওয়ালের কাছে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী রাখাল পরপর কয়েকটা ঢিল ছুড়ল বাড়ির ভেতরের দিকে। কিছুক্ষণ কোনো সাড়া এলো না। দ্বিতীয় দফায় আবার ঢিল ছোড়ার পর হ্যারিকেন হাতে এক লোক এগিয়ে এলো। দেওয়ালের ভাঙা অংশটা পর্যন্ত এসে এদিক-ওদিক তাকাল। দেওয়ালের সঙ্গে গা লাগিয়ে দাঁড়িয়েছিল ওরা চারজন। রিংকু এবার চট করে লোকটার সামনে গিয়ে দুই হাতের মুঠো ভর্তি করে মরিচের গুঁড়ো ছুড়ে দিল। লোকটার চোখে মরিচের গুঁড়ো ঢুকে ত্রাহি অবস্থা। সে বাবারে-মারে বলে চিৎকার শুরু করে দিল। হাত থেকে পড়ে গেল হ্যারিকেন। এ সুযোগে তাকে টেনে জঙ্গলের দিকে নিয়ে দড়ি দিয়ে হাত-পা বেঁধে ফেলল রাখাল ও সবুজ।

এরই মধ্যে লোকটার চিৎকার শুনে আরেকজন এগিয়ে এলো। সে তখনও বিষয়টা আন্দাজ করতে পারেনি। শুধু আগের লোকটার নাম ধরে ডাকছিল-মোসলেম, এ মোসলেম কী হলো তোর? সে ভাঙা জায়গাটায় এলে এবার তার চোখ লক্ষ্য করে মরিচের গুড়া ছুড়লো সজল। এই লোকটাও হাউমাউ করে চিৎকার করে উঠল। তাকেও টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে দড়ি দিয়ে বাঁধা হলো। এমন সময় ভেতর থেকে অন্ধকারে এগিয়ে আসছিল আরেকটা লোক। রাখাল টর্চের আলো ফেলল তার মুখে। আলোয় লোকটিকে দেখে সে বিস্মিত হয়ে বলল-বিশু তুই!

তার কথা শুনে বিশু নামের লোকটা উল্টো দিকে ঝেড়ে দৌড় দিল। রাখাল তার পিছু নিয়েও ধরতে ব্যর্থ হলো। তবে ভূতের বাড়ির ভেতরে ঢুকে সে আবিষ্কার করল মস্ত বড় জিনিস। এতদিন ভূতের চোখ বলে তারা যেটাকে ভয় পেয়ে এসেছে-সেটা আসলে মাটির হাড়ি আর মশাল দিয়ে বানানো একটা কাকতাড়য়ার মতো জিনিস। মাটির হাড়িটার বাইরের দিক পুরো কালো রং করা।

তারমধ্যে কায়দা করে কেটে দুটো চোখের মতো ছিদ্র বানানো হয়েছে। হাড়িটার ভেতরে একটা মশাল জ্বেলে দিলে অন্ধকারে দূর থেকে দেখতে মনে হয় আগুনের মতো জ্বলছে ভুতের চোখ! তার পিছু পিছু এসে রিংকু, সজল আর সবুজও দেখল ব্যাপারটা। তারপর একসঙ্গে সবাই হেসে উঠল। এটাকেই এতদিন তারা কী ভয়ই না পেয়েছে। টর্চ আর হ্যারিকেনের আলোয় তারা দেখল-বাইরে থেকে জংলা মনে হলেও ভেতরের একটা ঘর বেশ পরিপাটি। সেখানে মেঝেতে দু’টো বিছানাও পাতা রয়েছে।          

৪.

পরদিন সকালে সজলদের বাড়িতে লোকজনের ভিড় জমে গেল। সবাই তাদের অভিযানের গল্প শুনতে চায়। গত রাতে তাদের দেরি দেখে চিন্তিত হয়ে পড়েছিল বাড়ির লোকজন। তারা খুঁজতেও বেরিয়ে পড়েছিল। ওই সময় হাত পিছমোড়া করে বাঁধা দুই লোককে নিয়ে চারজনের দলটি বিজয়ী বেশে ফিরছিল। এরই মধ্যে তারা জানতে পেরেছে-এরা দু’জনই ডাকাত। ভাঙাচোরা বাড়িটিকে ভূতের বাড়ি সাজিয়ে তারা সেখানে আস্তানা গেঁড়ে বসেছিল। স্থানীয় ছিঁচকে চোর বিশুও ভিড়েছিল তাদের দলে। গ্রামের লোকজন অনেকদিন তাকে না দেখে ভেবেছিল-বিশু গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছে। খবর পেয়ে ফাঁড়ির পুলিশও সজলদের বাড়িতে চলে এসেছে ডাকাতদের গ্রেফতার করতে।

সজল রিংকুকে জিজ্ঞেস করল, সবই নাহয় বুঝলাম। কিন্তু তুই জানলি কীভাবে যে ওটা ভূতের চোখ নয়?

রিংকু বলল, আগেরদিন দুপুরে আমি একা একবার ভুতের বাড়িতে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখি বিছানা পাতা। কয়েকটা বিড়ির অবশিষ্টাংশ পড়ে আছে। তাতেই সন্দেহ হলো-কোন ঝামেলা আছে। ভুত নিশ্চয়ই বিড়ি খায় না। তাদের বিছানা পেতে শোয়ারও প্রয়োজন পড়ে না।

সজল উচ্ছ্বসিত গলায় বলল, সত্যি তুই একটা জিনিয়াস!

ইচ্ছেঘুড়িতে লেখা পাঠান এই মেইলে: [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ১৭২১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১৩

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।