ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

ইচ্ছেঘুড়ি

পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া | চান্দ্রেয়ী পাল মম

... | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৩১ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০১৪
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া | চান্দ্রেয়ী পাল মম

অনিক রায় একজন বিখ্যাত বিজ্ঞানী। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।

এখন পুরোদস্তুর গবেষক। কিছু আবিষ্কারও রয়েছে তার। বর্তমানে কাজ করছেন মরিচ নিয়ে। চিন্তা করেছেন যদি সাধারণ আকৃতির চেয়ে বড় আকারের এবং বেশি ঝালের মরিচ উৎপাদন করা যায়, তবে একটি দিয়েই অনেকগুলো রান্না করা যাবে। তার কাজ প্রায় শেষের দিকে।
২.
আজ ১৩ মে ২০১৪। অনিকের মরিচ গবেষণা সাকসেসফুল হয়েছে। তিনি বিভিন্ন ধরনের মরিচের জিন দিয়ে তৈরি বীজ মাটিতে পুতেছিলেন। ৩ মাসের মাথায় গাছে ফল ধরে এবং কিছুদিনের মধ্যেই সেগুলো বড় হয়। একেকটি মরিচ প্রায় ৬ ইঞ্চি লম্বা, ১.৫ ইঞ্চি চওড়া। তিনি তার সহকারী রহিমকে ডেকে পাঠালেন। রহিম এলো-
-জ্বি স্যার, বলুন।
-রহিম, আমার গবেষণার ফল আমি পেয়েছি।
-আপনাকে অভিনন্দন স্যার।
-ধন্যবাদ রহিম।
অনিক রহিমকে মরিচগুলো দেখালেন। বললেন,
-গাছ থেকে একটা মরিচ খেয়ে দেখো তো কেমন ঝাল?
তখন রহিম একটা মরিচ ছিড়ে খেয়ে দেখলো।
-স্যার, বেশ ঝাল।
-যাক, সব ঠিক আছে।
৩.
রাত ১০টা। অনিক ঘরে বসে বই পড়ছেন। হঠাৎ তার দরজায় ঠুক ঠুক আওয়াজ হল। প্রথমে বুঝতে পারলেন না যে কোথায় শব্দটা হচ্ছে। যখন বুঝলেন, লাফ দিয়ে নেমে গিয়ে দরজা খুলে দিলেন। কাজের মেয়েটি দাঁড়িয়ে। অনিক অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেন-
-কি হয়েছে ফাতেমা?
-স্যার স্যার, রহিম ভাই জানি কেমন করতেছেন!
-কি?
-জ্বি স্যার। একটু আসেন।
-চলতো....
তাড়াতাড়ি রহিমের ঘরে গিয়ে অনিক দেখলেন রহিম পেট চেপে ধরে গোঙাচ্ছে।
-কি হয়েছে রহিম?
-স্যার...আহ্! প্রচণ্ড পেট জ্বলছে স্যার। মনে হচ্ছে যেন আগুন ধরে গেছে!
-কি বলছো?
তাড়াতাড়ি ডাক্তারকে ফোন দিলেন অনিক। ডাক্তার এসে বললেন, কোনো কিছু খাওয়ার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এটা। কিছু ওষুধও দিলেন।
ঘরে এসে অনেকক্ষণ চিন্তা করলেন অনিক। হঠাৎ তার মনে হলো তার তৈরি মরিচই রহিমের অসুস্থতার কারণ নয় তো?

৪.
এরপরের ১০দিন টানা নিজের ল্যাবে কাজ করে গেলেন অনিক। কাউকে ল্যাবে ঢুকতে দিলেন না। এমনকি রহিমকেও না। যেদিন বের হলেন, সেদিন তার শরীর ক্লান্ত, কিন্তু চোখগুলো খুশিতে চকচক করছে। রহিম এসে জিজ্ঞেস করলো-
-স্যার, এতদিন কি করছিলেন আপনি?
-রহিম, যে মরিচ তুমি খেয়েছিলে সেটাতে একটু সমস্যা ছিল। খেতে ঝাল লাগতো ঠিকই, তবে পেটে গিয়ে সমস্যা করতো। যা তোমার হয়েছিল। তাই না?
-জ্বি।
-কিন্তু আমি আবার একই জিন দিয়ে অন্য ধরনের আরেকটি বীজ তৈরি করেছি একটি বাদ দিয়ে।
এরপর সেই বীজের গাছেও মরিচ হলো। অনিক নিজে সে মরিচ খেয়ে পরীক্ষা করলেন। এরপর আর কোনো সমস্যাই হয়নি। সরকারের কৃষি বিভাগের অনুমতি নিয়ে এ বীজ এখন বাজারজাত করা হচ্ছে।

লেখক: চান্দ্রেয়ী পাল মম, দশম শ্রেণী
ভিকারুননিসা নুন স্কুল অ্যান্ড কলেজ
ঢাকা।

বাংলাদেশ সময়: ০৬৩০ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।