ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

তৃতীয়বার মীনা অ্যাওয়ার্ড পেলো বাংলানিউজের মীম

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৪
তৃতীয়বার মীনা অ্যাওয়ার্ড পেলো বাংলানিউজের মীম ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: শিশু-কিশোরদের সবচেয়ে বড় ও সম্মানজনক পুরস্কার মীনা অ্যাওয়ার্ড পেলো বাংলানিউজের সর্বকনিষ্ঠ নিউজরুম এডিটর মীম নোশিন নাওয়াল খান। ক্রিয়েটিভ অনূর্ধ্ব-১৮ শাখায় চতুর্থবার মনোনয়ন পেয়ে তৃতীয়বার এ সম্মানসূচক পুরস্কার পেলো মীম।



মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলের বলরুমে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তার হাতে পুরস্কার তুলে দেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এমপি, ইউনিসেফের শুভেচ্ছাদূত চিত্রনায়িকা মৌসুমী এবং ইউনিসেফের বাংলাদেশ প্রতিনিধি প্যাসকেল ভিলেনোভ।

ইউনিসেফ ২০০৫ সাল থেকে ক্রিয়েটিভ ও জার্নালিস্টিক দুই ক্যাটাগরিতে এ পুরস্কার দিয়ে থাকে।

এবার ছিল শিশু-কিশোরদের জন্য সবচেয়ে সম্মানজনক এই অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানের ১০ম আসর।

মূলত সৃজনশীল ও সাংবাদিকতা এই দুই শ্রেণীতে প্রিন্ট, টেলিভিশন ও রেডিও মাধ্যসেমর মধ্য থেকে নির্দিষ্ট বয়সসীমার ভিত্তিতে এ পুরস্কার দেওয়া হয়।

মীমের পাওয়া পুরস্কার
২০১০ সালে মীম পেয়েছিলো প্রিন্ট মিডিয়া সৃজনশীল অনূর্ধ্ব ১৮ বিভাগে প্রথম পুরস্কার। ২০১৩ সালে একই বিভাগে পান দ্বিতীয় পুরস্কার। ২০১১ সালে মনোনয়ন পায়।

এবারও একই শাখায় ছয়টির মধ্যে দুটি মনোনয়ন পেয়ে যৌথভাবে প্রথম পুরস্কার পেয়েছে মীম। অন্যজন জান্নাতুল নাঈম প্রীতি। দ্বিতীয় হয়েছে শামীম মিয়া আর তৃতীয় হয়েছে জান্নাতুল ফেরদৌস স্নিগ্ধা।

একটি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত ‘তান্নিরা তিন বোন’ গল্পের জন্য প্রথম পুরস্কার পেলো মীম। পুরস্কার হিসেবে মীম পেয়েছে ৫০ হাজার টাকা, একটি সম্মাননা পদক এবং সনদ।

মীমের লেখালেখি
বেড়ে ওঠাটা ঢাকায় হলেও মীমের শেকড় ফরিদপুর জেলা শহর। সেখানকার স্থানীয় পত্রিকা ফরিদপুর বার্তায় ছাপা হয় প্রথম ছড়া। লেখালেখির হাতেখড়ি সেখানেই।

এরই মধ্যে ভিকারুন নিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী মীমের ছয়টি বই প্রকাশিত হয়েছে। প্রথম বই ‘কণকচাঁপা’ (ছড়া) প্রকাশিত হয় ২০০৯ সালে। তৃতীয় শেণীর ছাত্রী তখন মীম। এ বইয়ের মাধ্যমেই দেশের কনিষ্ঠতম গ্রন্থলেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটে তার।

প্রথম গল্প ‘বুকের ভিতর স্বপ্ন’ দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়াকালে লেখা। সবুজ পাতায় ছাপা হয়েছিল পরের বছর। তার এক বছর পরই মীনা অ্যাওয়ার্ডে প্রিন্ট মিডিয়া ক্রিয়েটিভ আন্ডার এইটিন প্রথম পুরস্কার অর্জন। দ্বিতীয় গল্প ‘নানুর একটা জগত আছে’ ঐতিহ্য গোল্লাছুট গল্প লেখা প্রতিযোগিতা ২০০৯-এ অন্যতম সেরা।

দৈনিক যায়যায়দিন, প্রথম আলো, আলোকিত বাংলাদেশ, মাসিক শিশু, নবারুণ ও সবুজ পাতাসহ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় নিয়মিত প্রকাশিত হয় মীমের লেখা।

লেখালেখি ছাড়াও ছবি আঁকা, গ্লাস পেইন্টিং, ফটোগ্রাফি ও বিভিন্ন রকম হ্যান্ডমেইড কাজেও পারদর্শী মীম।

মীমের বইগুলো
দ্বিতীয় বই স্বপ্নপুরী (ছড়া) ২০১০ সালে, ৩য় বই বুকের ভিতর স্বপ্ন (গল্প) ২০১১ সালে, ৪র্থ বই রূপার নূপুর (গল্প) ২০১২ সালে এবং ৫ম বই একজন ক্লাস ক্যাপ্টেনের ডায়রি (কিশোর উপন্যাস) ২০১৩, সালে প্রকাশিত হয়। ২০১৪ সালের বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে ‘খেয়া এবং... সহ মীমের আরও দুটি বই।

বাংলানিউজে মীম
বাংলানিউজের সঙ্গে মীমের পথচলা শুরু ২০১৩ সালের মার্চ মাস থেকে। শিশুতোষ পাতা ইচ্ছেঘুড়ির নিয়মিত লেখক মীম। গল্প, ছড়া, ফিচারসহ বিভিন্ন বিষয়ে নিয়মিত লিখছে সে। তার অসাধারণ লেখনীতে মুগ্ধ হয়ে বাংলানিউজের এডিটর ইন চিফ আলমগীর হোসেন ওই বছরের জুলাই মাসে তাকে সর্বকনিষ্ঠ নিউজরুম এডিটর হিসেবে নিয়োগ দেন।

মীমের স্বপ্ন ও পরিবার
মীম এখন ভিকারুননিসা নূন স্কুলে পড়ছে অষ্টম শ্রেণিতে। আরেকটু বড় হয়ে মীম হতে চায় বিজ্ঞানী। সর্বকনিষ্ঠ বাঙালি হিসেবে জিতে নিতে চায় নোবেল। পাশাপাশি চালিয়ে যেতে চায় লেখালিখিও।

পুরস্কার প্রাপ্তির পর মীম বলেন, খুব ভালো লাগছে। ছোটদের জন্য কাজ করতে পারাটা সবসময়ই আনন্দের। সে কাজের স্বীকৃতি পাওয়াটা নিঃসন্দেহে আরো আনন্দের।

মীমের ‍বাবা আবদুল মোনেম খান ইবনে সিনা ফার্মাসিউটিক্যালসের জেনারেল ম্যানেজার হিসেবে কর্তব্যরত। মা হোসনে আরা রশিদ ঘরে থেকেই মীমের বেড়ে ওঠার দেখভাল করেন।
 
মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড ২০১৪ পেলেন যারা
প্রিন্ট মিডিয়া সৃজনশীল অনূর্ধ্ব-১৮ বিভাগে যৌথভাবে প্রথম পুরস্কার পেয়েছে বাংলানিউজের মীম নোশিন নাওয়াল খান ও জান্নাতুল নাঈম প্রীতি, দ্বিতীয় হয়েছে শামীম মিয়া আর তৃতীয় হয়েছে জান্নাতুল ফেরদৌস স্নিগ্ধা। প্রিন্ট মিডিয়া সৃজনশীল ১৮ বছরের উপরের বিভাগে প্রথম হয়েছেন আহমেদ রিয়াজ। দ্বিতীয় আশিক মোস্তফা ও তৃতীয় নিলয়।
 
প্রিন্ট মিডিয়া রিপোটিং অনূর্ধ্ব-১৮ বিভাগে প্রথম হয়েছেন জাহিদ ইসলাম। দ্বিতীয় মনির হোসেন ও তৃতীয় রাবিয়া বসার অনিতা। ১৮ বছরের উপরের বিভাগে প্রথম হয়েছেন জাহিদ রহমান। দ্বিতীয় শেখ সাবিহা ও তৃতীয় মামুনর রশিদ।
 
ব্রডকাস্ট মিডিয়া সৃজনশীল অনূর্ধ্ব-১৮ বিভাগে প্রথম হয়েছে এএম রেদাউল আলাম। দ্বিতীয় শরিফুল ইসলাম। এই বিভাগে কেউ তৃতীয় পুরস্কার পায়নি। ১৮ বছরের উপরের বিভাগে প্রথম হয়েছেন গোলাম কিবরিয়া সরকার। দ্বিতীয় আবদুল্লাহ আল মহায়মিন ও তৃতীয় আবু তালেব শাকিব।
 
ব্রডকাস্ট মিডিয়া রিপোর্টেং অনূর্ধ্ব-১৮ বিভাগে প্রথম হয়েছে বৈশাখি খাতুন ও দ্বিতীয় রুপিয়া জাহান যুথী। এই বিভাগে কেউ তৃতীয় পুরস্কার পায়নি। ১৮ বছরের উপরের বিভাগে প্রথম হয়েছেন ফরিদ আহমেদ। দ্বিতীয় মেহেদি হাসান এবং যৌথভাবে তৃতীয় হয়েছে মাহবুবর রহমান ও আহমেদ ইউসুফ।

টেলিভিশন মিডিয়া সৃজনশীল অনূর্ধ্ব-১৮ বিভাগে কেউ পুরস্কার পায়নি। ১৮ বছরের উপরের বিভাগে প্রথম পুরস্কার পেয়েছেন সুশান্ত সিনহা। দ্বিতীয় সোহেল রানা সবুজ এবং যৌথভাবে তৃতীয় হয়েছেন লিটন অধিকারী রিন্টু ও শাহারিয়ার।
 
টেলিভিশন মিডিয়া রিপোর্টিং অনূর্ধ্ব-১৮ বিভাগে প্রথম হয়েছে সিফাত আলামিন তন্ময়। দ্বিতীয় সুমায়া ওহাব এবং যৌথভাবে তৃতীয় তানজিলা আক্তার মিম ও তনিমা আক্তার। ১৮ বছরের উপরের বিভাগে যৌথভাবে প্রথম হয়েছেন খাদিজা জাহান রিতা ও ওবায়দুল কবির। দ্বিতীয় ইসমাইল হোসেন ও তৃতীয় আতিকা রোমান।
 
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, শেখ হাসিনার সরকার পরিবর্তনে বিশ্বাস করে। শিশু অধিকার ও নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা সরকারের প্রধান পলিসি।
 
তিনি বলেন, সরকার শিশুদের ঝুঁকির কাজ থেকে দূরে রাখতে চেষ্টা করছে। আর জঙ্গিরা শিশুদের ব্যবহার করছে ঢাল হিসেবে। তারা শিশুদের দিয়ে অস্ত্র পাচার করছে। এ বিষয়ে আমাদের সবার সচেতন থাকতে হবে।
 
তিনি আরও বলেন, আমাদের সমাজে নারীরা অবহেলিত ও নির্যাতিত। এ অবস্থার পরিবর্তনের জন্য নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে হবে।
 
বাংলাদেশ সময়: ২০১৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।