ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

ইচ্ছেঘুড়ি

লাফিয়ে চলা সাপ জাম্পিং ভাইপার

মঈনুল হক চৌধুরী | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৪
লাফিয়ে চলা সাপ জাম্পিং ভাইপার ছবি: সংগৃহীত

বন্ধুরা, জাম্পিং ভাইপারের নাম শুনেছো? কেউ কেউ হয়তো শুনেছো। আবার কারো রয়েছে অজানা।

যারা জানো না, তাদের জানাতেই আমাদের আজকের আয়োজন।

এক কথায়, জাম্পিং ভাইপার খুবই অক্রমণাত্মক, ভয়ংকর সাপ। ভয় পেলে বা রেগে গেলে সম্পূর্ণ মুখ হা করে কামড়াতে আসে। তখন লেজও কাঁপতে থাকে এদের।  

জাম্পিং ভাইপার কিন্তু খুব বেশি লম্বা  নয়। ১৮ থেকে ২৪ ইঞ্চি হয় এদের গড় দৈর্ঘ্য। তবে কোনো কোনো প্রজাতি তিনফুটেরও বেশি দীর্ঘ হয়। এদের শরীরের গঠন বেশ শক্ত, মাথা তেকোনা,  লেজ ছোট আর পিঠে থাকে চ্যাপ্টা আঁশ।

জাম্পিং ভাইপারদের গায়ের রং নানান রকমের। কোনোটা তামাটে, কোনোটা বাদামি আবার কোনোটার গায়ে ছোপ ছোপ ধূসর দাগ। জাম্পিং ভাইপারদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এরা নিম্নভূমি ও উচ্চভূমি সব জায়গাতেই থাকতে পারে। ৪০ থেকে ১৬০০ মিটার উচ্চতাতেই এদের বাস।   গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ভেজা, স্যাঁতস্যাঁতে ঘন অরণ্য এদের প্রধান বাসস্থান।  

কিছু প্রজাতির সাপ গুহামুখেও বসবাস করে। মূলত নিশাচর এই সাপগুলো অনেক সময় মাটিতে, পাতার নীচে কুণ্ডলী পাকিয়ে শুয়ে থাকে। জাম্পিং ভাইপারদের বাচ্চা জন্ম দেওয়ার সময় গ্রীষ্ম ও বর্ষা। তবে চিড়িয়াখানায় জাম্পিং ভাইপাররা  জানুয়ারি থেকে মে মাসের মধ্যে বাচ্চা দেয়। বাচ্চগুলোর কোনোটির রং হলুদ, কোনোটির তামাটে আবার কোনোটি কুচকুচে কালো।

দুই থেকে তিন সপ্তাহ বাচ্চাগুলো কিছুই খায় না। তবে শিশু জাম্পিং ভাইপারদের প্রধান খাবার ‘মাইস’ নামে এক ধরনের ইঁদুর। এ ইঁদুররা লাফিয়ে চলে বলে এদের নাম হয়েছে  ‘হপার মাইস’। প্রতি দশদিন অন্তর বাচ্চা সাপগুলোকে খাবার দিতে হয়।

আশির দশক থেকে জাম্পিং ভাইপার রেপটাইল স্টক এর তালিকা থেকে অদৃশ্য হয়ে যেতে থাকে। প্রাকৃতিক অরণ্যে এখন এ সাপের দেখা মেলা ভার। অলস প্রকৃতির জাম্পিং ভাইপার  চুপচাপ শুয়ে থাকতেই বেশি পছন্দ করে।   খবরের কাগজের ওপর বা বাটির মধ্যে এরা দিনের পর দিন ঘুমিয়ে থাকতে পারে।

চিড়িয়াখানায় জাম্পিং ভাইপাররা প্রায়ই নিজেদের মধ্যে মারামারি বাধিয়ে দেয়। সাধারণত ঘাড় ও মাথায় এরা আঘাত হানে। ঝগড়াটে স্বভাবের বলে এরা সবসময় মারামারি করতে চায়। তাই এদের আলাদা রাখতে হয়। একসময় জাম্পিং ভাইপার আর আট-দশটা সাপের মতো দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোতে হরহামেশাই দেখা যেত। কিন্তু ক্রমেই বিরল হয়ে উঠেছে এ প্রজাতির সাপ।

প্রচণ্ড বিষাক্ত এই সাপগুলো এক লাফে দু’ফুট জায়গা অতিক্রম করতে পারে। লাফাতে জানে বলে এ সাপের নাম হয়েছে জাম্পিং ভাইপার। তবে এমনি এমনি ওরা লাফায় না। কোনো কারণে বিরক্ত হলে বা রেগে গেলে লাফায়। আমাদের দেশে এ সাপের অস্তিত্ব রয়েছে বলে জানা নেই। তবে যদি কখনো এ সাপ যদি তোমাদের সামনে পড়ে যায়, তাকে কখনোই রাগাতে যেও না কিন্তু!

বাংলাদেশ সময়: ১৩২০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।