ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

ইচ্ছেঘুড়ি

অলরাউন্ডার ম্যাগপাই!

সানজিদা সামরিন, ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৭ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০১৫
অলরাউন্ডার ম্যাগপাই!

ঢাকা: পোষা পাখি বলতে গেলে পরিবারেরই এক সদস্য। তার যত্ন, খাওয়া, ঘুম ও থাকার জায়গা পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের মতোই পরিমার্জিত।



পাখি পুষতে অনেকেই ভালোবাসেন। সারাক্ষণ কিচির মিচির করে বাড়ি মাতিয়ে রাখে এরা। বাড়িতে তাদের অস্তিত্ব মানেই প্রকৃতির পরশে বাড়িকে আচ্ছাদিত করে রাখা।
 
সিডনির উত্তরাঞ্চলের সমুদ্র সৈকত অর্থাৎ নিউপোর্টে ঘর বেঁধেছেন ক্যামেরন ও স্যাম ব্লুম দম্পতি। তাদের তিন পুত্র  রুবেন (১৩), নোয়া (১১) ও ওলি (৯) ছাড়াও পরিবারের আরেক সদস্যের কথা না বললেই নয়। সবার ভালোবাসা জুড়ে থাকা সদস্যটি হলো একটি ম্যাগপাই পাখি। একে বিশেষ একটি নামে ডাকাও হয় বৈকি! নামটি হলো, পেঙ্গুইন।


পাখিটির সঙ্গে পেঙ্গুইনের কোনো মিল না থাকলেও, সেখানকার সামুদ্রিক পরিবেশের সঙ্গে মিল রেখেই দেওয়া হয়েছে এই নাম।  



সাইবেরিয়ার মতো ব্লুম পরিবারের এ পেঙ্গুইনও স্বাধীনভাবেই চলাফেরা করে। পোষা পাখি বলে তাকে খাঁচায় আটকে রাখা হয়নি। তার মানে এই না যে, সে হুট করে বাড়ি ঢুকে পড়লো, আর সামনে যা পেল খেয়ে ডানা মেলে ফুড়ুৎ! তাকে দেওয়া স্বাধীনতা ও ভালোবাসার যোগ্য মর্যাদা সেও দেয়। পেঙ্গুইন ভীষণ লক্ষ্মী আর দায়িত্বশীল পাখি।

এ পরিবারের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব অনেক দিনের। হয়তো কখনও পরিবারের সবার সঙ্গে বিছানায় লুটোপুটি খাচ্ছে, কখনওবা শিশুদের স্কুলে যাওয়ার জন্য তৈরি হতে সাহায্য করছে।

শুধু তাই নয়, ব্যায়াম থেকে শুরু করে তিন ভাইয়ের দাঁত মাজা ঠিকঠাক হলো কিনা বা ক্যালকুলেটরে হিসেব কষা আরও কত কাজ তার! এত গুণে গুণান্বিত এ পাখিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও হয়ে উঠেছে বেশ জনপ্রিয়।

মজার ব্যাপার হলো, তার নামে একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টও রয়েছে! আর ফলোয়ার? সাড়ে তিন হাজারের উপরে।

সময়টা ২০১৩ সাল। ছোট্ট নোয়া যখন তাকে মেঝেতে কুড়িয়ে পায়, তখন পেঙ্গুইনের বয়স ছিল মাত্র কয়েক সপ্তাহ। সেই থেকেই এ পরিবারের হয়ে রয়েছে সে।


এ নিয়ে পরিবার কর্তা ক্যামেরন জানান, নোয়া কুড়িয়ে পাওয়ার পর আমি পাখিটিকে রেখেছিলাম কারণ, আমার আত্মবিশ্বাস ছিল, আমার হাতে ওর যত্ন নেওয়ার মতো সময় ও সুরক্ষিত রাখার মতো জ্ঞান রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমার একজন ভালো পশুপাখি চিকিৎসক বন্ধুও রয়েছেন। তাই পেঙ্গুইনের খাদ্য তালিকা তৈরি করে নিতে আমাদের কোনো অসুবিধা হয়নি। ওর জন্য খাবার তৈরিতে আমার সময় লাগে মাত্র আধঘণ্টা।

ক্যামেরন জানান, আমার ছেলেরা ওকে ভীষণ ভালোবাসে। বলতে গেলে, সারাক্ষণ একসঙ্গে থাকা তাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।

পেঙ্গুইন গাইতে ভালোবাসে। বাড়ির চারদিকে ঘুরে ঘুরে সে গান গায়। আবার মন চাইলে মাথার উপর দিয়ে উড়ে কানের কাছে এসে আলতো করে কামড়েও দেয়।

মিস্টার ব্লুম মজা করে বলেন, কোনো এক কারণে পেঙ্গুইন  টুথপেস্ট খুব পছন্দ করে। কারণ, সকালে যখন আমার ছেলেরা দাঁত মাজার জন্য টুথপেস্ট নিয়ে তৈরি হয়, তখন সে তাদের মুখের ভেতর মাথা কাত করে দেখতে থাকে।

ওড়াউড়ি আর শিকার শেষে ক্লান্ত হয়ে পেঙ্গুইন সাধারণত বাড়ি ফেরে দুপুরের দিকে। তিন ভাইও তখন স্কুল থেকে বাড়ি ফেরে। পেঙ্গুইন সাদরেই তাদের অভ্যর্থনা জানায়। খুশি হয়ে অনবরত ডানা ঝাপটাতে থাকে বলে জানান ক্যামেরন।

ক্যামেরন ব্লুম পেশায় একজন আলোকচিত্রী। তিনিই পেঙ্গুইন ও তার পরিবারের সব ছবি তুলে ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৩ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।