ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

জন্মদিনের শ্রদ্ধাঞ্জলি

সত্যজিৎ রায়

মীম নোশিন নাওয়াল খান, নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫২ ঘণ্টা, মে ২, ২০১৫
সত্যজিৎ রায় সত্যজিৎ রায়

গোয়েন্দা গল্প পড়তে ভালোবাসে কম-বেশি সবাই। আর যারা গোয়েন্দা গল্প ভালোবাসে, তাদের সঙ্গে ফেলুদার পরিচয় থাকবে না, তাই কি হয়?

বাংলা সাহিত্যের একজন তুখোড় গোয়েন্দা চরিত্র ফেলুদা।

তার সঙ্গে নিশ্চয়ই তোমাদের সবার পরিচয় হয়েছে। আর সেইসঙ্গে তোমরা পরিচিত হয়েছ সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গেও, কেননা ফেলুদা তো তারই সৃষ্টি!

আমাদের সবার প্রিয় ফেলুদাকে যিনি তৈরি করেছেন, তার কিন্তু আজ জন্মদিন। চলো জেনে নিই তার গল্প।

১৯২১ সালের এদিন অর্থাৎ, ২ মে সত্যজিৎ রায় কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তার দাদা ছিলেন বিখ্যাত শিশুসাহিত্যিক উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী।
প্রেসিডেন্সি কলেজ ও শান্তিনিকেতনে পড়াশোনা করেন সত্যজিৎ রায়।

কলকাতায় ব্রিটিশ বিজ্ঞাপন সংস্থা ডি জে কিমারে জুনিয়র ভিজ্যুয়ালাইজার হিসেবে শুরু করেন কর্মজীবন। পরবর্তীতে তিনি নিজেই চলচ্চিত্র নির্মাণে আগ্রহী হয়ে ওঠেন এবং একের পর এক নির্মাণ করেন কালজয়ী সব চলচ্চিত্র।

বিভূতিভূষণের অনবদ্য সৃষ্টি ‘পথের পাঁচালী’ নিয়ে একই নামে তিনি তৈরি করেন তার জীবনের প্রথম চলচ্চিত্র, যা ১১টি আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করে। সত্যজিৎ রায় নির্মিত পথের পাঁচালী, অপরাজিত ও অপুর সংসার- এই তিনটি চলচ্চিত্রকে ‘অপু ত্রয়ী’ বলা হয়, যা তার জীবনের শ্রেষ্ঠ কর্ম হিসেবে স্বীকৃত।

চলচ্চিত্র জগতে বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ছিলেন সত্যজিৎ। চিত্রনাট্য রচনা, চরিত্রায়ন, সঙ্গীত স্বরলিপি রচনা, চিত্রগ্রহণ, শিল্প নির্দেশনা, সম্পাদনা, শিল্পী-কুশলীদের নামের তালিকা ও প্রচারণাপত্র নকশা করা- সবই করেছেন তিনি।

শুধু চলচ্চিত্র অঙ্গনেই নয়, সত্যজিতের স্বাচ্ছন্দ্য বিচরণ ছিলো সাহিত্য জগতেও। গোয়েন্দা চরিত্র ফেলুদা ও বিজ্ঞানী প্রোফেসন শঙ্কু তার অনবদ্য সৃষ্টি। এই চরিত্রগুলোর মাধ্যমে তিনি একাধারে গোয়েন্দা উপন্যাস ও বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী লেখায় দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। এর বাইরেও তিনি রচনা করেছেন বহু ছোটগল্প, ননসেন্স ছড়া প্রভৃতি।

আঁকাআঁকিতেও দক্ষ ছিলেন সত্যজিৎ। নিজের বইগুলোর প্রচ্ছদ ও অলংকরণ তিনি নিজেই করতেন।

সত্যজিৎ রায় তার কর্মের জন্য অনেক স্বীকৃতি পেয়েছেন। বিভিন্ন জায়গা থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেছেন তিনি, যার মধ্যে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় মাত্র দ্বিতীয় চলচ্চিত্রকার হিসেবে তাকে এই ডিগ্রি দেয়। ১৯৮৭ সালে ফ্রান্সের সরকার তাকে সম্মানসূচক পুরস্কার লেজিওঁ দনরে ভূষিত করে। ভারত সরকার দেয় সর্বোচ্চ অসামরিক পদক ‘ভারতরত্ন’। এছাড়াও অসংখ্য সম্মাননা ও পুরস্কার লাভ করেছেন তিনি, যার মধ্যে রয়েছে ১৯৯২১ সালে অস্কার লাভ, যা তার জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন হিসেবে গণ্য হয়।

অস্কার পাওয়ার কিছুদিন পরেই ১৯৯২ সালের ২৩ এপ্রিল মারা যান তিনি।
 
সত্যজিৎ রায়ের জন্মদিন আজ। এই গুণী বাঙালির প্রতি রইল আমাদের অশেষ শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৭ ঘণ্টা, মে ০২, ২০১৫
এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।