ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

ইচ্ছেঘুড়ি

ব্যাঙ ও ঘাসফড়িংয়ের বন্ধুত্ব

মূল: আফ্রিকার লোককাহিনী/ভাষান্তর: সানজিদা সামরিন | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০১৫
ব্যাঙ ও ঘাসফড়িংয়ের বন্ধুত্ব

এক ছিলো ঘাসফড়িং আর এক ছিলো ব্যাঙ। তারা ছিলো খুব ভালো বন্ধু।

লোকে সবসময় তাদের একসঙ্গেই দেখতো। কিন্তু তারা কখনও কেউ কারও বাড়িতে খায়নি।

একদিন ব্যাঙ ঘাসফড়িংকে বললো, বন্ধু কাল তুমি আমার বাড়িতে এসো। আমরা একসঙ্গে রাতের খাবার খাবো। আমি আর আমার বৌ তোমার জন্য বিশেষ খাবার তৈরি করবো।

ঘাসফড়িং রাজি হলো। পরের দিন সময়মতো ব্যাঙের বাড়ি পৌঁছালো সে। খেতে বসার আগে ব্যাঙ তার সামনের পা দু’টো ধুয়ে নিলো। সে ঘাসফড়িংকেও বললো, তার মতো হাত ধুয়ে নিতে। ঘাসফড়িং আপত্তি করলো না। কিন্তু হাত ধোয়ার সময় তার পাখার নড়নচড়নে খচখচ শব্দ হলো।

ব্যাঙ বিরক্ত হয়ে বললো, তুমি তোমার ওই শব্দওয়ালা পাখা খুলে রাখতে পারো? আমি এমন শব্দে আরামে খেতে পারবো না!

ঘাসফড়িং খুব চেষ্টা করলো যেনো খাওয়ার সময় পাখা কম নড়ে। কিন্তু এটি তো অসম্ভব। প্রতিবার হাত দিয়ে খাবার নেওয়ার সময় ফড়িংয়ের পাখা নড়ে ওঠে আর শব্দ হয়।

এদিকে, ব্যাঙও বিরক্ত হয়ে বারবার বলতে লাগলো- শব্দ করো না।

এক পর্যায়ে ঘাসফড়িংয়ের হলো ভীষণ রাগ।

সে খাওয়া বন্ধ করে বললো, আমি এবার যাই। কাল আমার বাড়ি তোমার নিমন্ত্রণ, আসবে কিন্তু!

ব্যাঙ বললো, ঠিক আছে।

পরের দিন ব্যাঙ ঘাসফড়িংয়ের বাড়ি এলো। খাবার আগে থেকেই তৈরি ছিলো। ফড়িং খাবার টেবিল থেকে একটু দূরে রাখা পানির পাত্র থেকে হাত ধুয়ে নিলো। ব্যাঙকেও হাত ধুতে বললো সে।

ব্যাঙ পানির পাত্র থেকে হাত ধুয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে খাবারের টেবিলের দিকে এগুলো।
 
তখন ঘাসফড়িং বললো, তুমি আবার হাত ধুয়ে এসো। ময়লা হয়ে গেছে।

ব্যাঙ নির্দ্বিধায় ফের গেলো হাত ধুতে। হাত ধুয়ে ফের খাবারে হাত দিতেই ঘাসফড়িং বললো, দয়া করে তোমার নোংরা হাত খাবারে দেবে না। যাও আবার ধুয়ে এসো।

কিন্তু কী লাভ, ব্যাঙ তো চার হাত-পায়েই লাফিয়ে হাঁটে। তাই হাত ধুয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে টেবিলের দিকে এগুতেই আবার হাত নোংরা হয়ে যাচ্ছে। ‍

এবার ব্যাঙ গেলো রেগে। বললো, তুমি আসলে চাওই না আমি তোমার সঙ্গে খাই। তুমি তো জানোই চলাফেরা করতে হলে আমাকে চার হাত-পায়েই হাঁটতে হবে। তাই পানির পাত্র থেকে খাবার টেবিলে আসতে মাটি লেগে আমার হাত নোংরা হবেই। এতে‍ আমার কিছু করার নেই।
 
তখন ঘাসফড়িং বললো, এখন বুঝেছো তাহলে? আমি যখন কাল খাওয়ার সময় হাত নাড়ানোতে বারবার পাখায় শব্দ হচ্ছিলো, তখন তুমি রেগে যাচ্ছিলে। কিন্তু আমি একটু নড়লে যে পাখাতে শব্দ হবেই। এটি আমি থামাতে পারবো না।

তখন ব্যাঙ তার কথা শুনে নিজের ভুল বুঝতে পারলো।

বন্ধুরা, যদি তুমি তোমার বন্ধুত্বকে চিরস্থায়ী করতে চাও, তাহলে ভালো গুণগুলোর মতোই বন্ধুর অক্ষমতা ও অপারগতাকে মেনে নিতে শেখো। তবেই হবে বন্ধুত্বের জয়!

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০১৫
এসএস

** বাদুড় কেন রাতে ওড়ে
** সূর্য ও চাঁদ আকাশে থাকে কেন
** যা হয়, ভালোর জন্যই হয়
** রাত এলো যেমন করে
**  বিড়াল কেন ইঁদুর মারে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad