ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

ইচ্ছেঘুড়ি

ক্রিসেন্ট-বাতিঘর চিত্রাংকন উৎসব

এবার শিশুদের সঙ্গে আঁকবেন অভিভাবকরাও

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৫
এবার শিশুদের সঙ্গে আঁকবেন অভিভাবকরাও

ঢাকা: শিশুদের ভেতর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিস্তারে বাতিঘর সাংস্কৃতিক বিদ্যালয় আয়োজন করতে যাচ্ছে ক্রিসেন্ট-বাতিঘর চিত্রাংকন উৎসব’২০১৫। প্রায় দু’মাসের এ উৎসব দেশের ৮টি বিভাগীয় অঞ্চল ও ঢাকা মেট্রোপলিটনসহ মোট ৯টি অঞ্চলে অনুষ্ঠিত হবে।



৩ থেকে ১৫ বছর বয়সী সকল শিশু ক্রিসেন্ট-বাতিঘর জাতীয় শিশু চিত্রাঙ্কন উৎসবে অংশ নিতে পারবে। শিশুদের সঙ্গে এ উৎসবে ছবি আঁকতে পারবেন তাদের অভিভাবকরাও।

উৎসবের অংশ হিসেবে মুক্তিযোদ্ধারা শিশুদের শোনাবেন মুক্তিযুদ্ধের গল্প। গুণি চিত্রশিল্পীরা শিশুদের সঙ্গে ছবি আঁকবেন এবং ছবি আঁকা বিষয়ে শিশুদেরকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেবেন। শিশুদের আঁকা ছবির প্রদর্শনী করা হবে। অংশগ্রহণকারী শিশুদেরকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের প্রতি আগ্রহী করে তুলতে মুহম্মদ জাফর ইকবালের লেখা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বই উপহার দেওয়া হবে।
 
আঞ্চলিক উৎসবে অংশ নেওয়া শিশুদের আঁকা ছবি থেকে বাছাই করা সেরা দুইশ’ ছবি নিয়ে জাতীয় পর্যায়ে ঢাকায় দু’দিনের প্রদর্শনী করা হবে আগামী বছরের ১২ ও ১৩ ফেব্রুয়ারি গ্যালারি চিত্রকে।  

উৎসবের টাইটেল স্পন্সর হিসেবে রয়েছে ক্রিসেন্ট। এ আয়োজনের গণমাধ্যম সহযোগী হিসেবে থাকছে এটিএন বাংলা এবং সমকাল।

ছবির বিষয়:  প্রিয় বাংলাদেশ। ছবি আঁকার মাধ্যম: উন্মুক্ত। উৎসবে ছবি আঁকার জন্য বাতিঘরের পক্ষ থেকে শুধুমাত্র কাগজ সরবরাহ করা হবে। অন্যান্য উপকরণ শিশুকে সঙ্গে করে নিয়ে আসতে হবে। প্রত্যেক শিশুর নিবন্ধন ফি ২০ (বিশ) টাকা মাত্র। শিশু নিবন্ধন করলে তার অভিভাবকও অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবেন। সেজন্য আলাদা নিবন্ধন করতে হবে না। সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিবন্ধন ফিয়ের প্রয়োজন নেই। নিবন্ধন ফি উৎসবের দিন এসে সরাসরি জমা দেওয়া যাবে।

যে সকল শিশু সরাসরি উৎসবে অংশ নিতে পারবে না তারা ডাকযোগে তাদের আঁকা ছবি পাঠাতে পারবে। সেক্ষেত্রে ছবির সঙ্গে শিশুর নাম, বাবার নাম, মায়ের নাম, বয়স, ঠিকানা, ফোন নম্বর অবশ্যই দিতে হবে। ডাকযোগে ছবি পাঠানোর শেষ সময় আগামী বছরের ১৫ জানুয়ারি।

ডাকযোগে ছবি পাঠানোর ঠিকানা: বাতিঘর সাংস্কৃতিক বিদ্যালয়, ১/৪, ব্লক-বি, লালমাটিয়া (উদ্দীপন বিদ্যালয়), ঢাকা।

আঞ্চলিক পর্বে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা শিশুদেরকে মুক্তিযুদ্ধের গল্প শোনাবেন। স্থানীয় নির্ধারিত ভেন্যুতে মনের মতো ছবি আঁকবে শিশুরা। সেখানে বড় মাপের এক বা একাধিক চিত্রশিল্পী উপস্থিত থেকে শিশুদের সঙ্গে ছবি আঁকবেন এবং ছবি আঁকা বিষয়ে শিশুদেরকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেবেন। শিশুদের সঙ্গে তাদের অভিভাবকরাও ছবি আঁকবেন। শিশুদের আঁকা ছবির প্রদর্শনী করা হবে। অংশগ্রহণকারী সকল শিশুকে সনদ এবং শুভেচ্ছা উপহার দেওয়া হবে। শিশুদেরকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের প্রতি আগ্রহী করে তুলতে শুভেচ্ছা উপহার হিসেবে মুহাম্মদ জাফর ইকবালের লেখা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বই দেওয়া হবে।

একইভাবে জাতীয় উৎসবে মুক্তিযোদ্ধারা শিশুদেরকে মুক্তিযুদ্ধের গল্প শোনাবেন। সারা দেশের আঞ্চলিক পর্বে শিশুদের আঁকা সেরা ছবিগুলো নিয়ে প্রদর্শনী করা হবে। শিশুদেরকে সনদ এবং পুরস্কার দেওয়া হবে। এছাড়াও থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। প্রকাশ করা হবে উৎসব স্মরণিকা।

উৎসবের উদ্বোধনী এবং ময়মনসিংহ বিভাগের উৎসব অনুষ্ঠিত হবে আগামী শনিবার (২৬ ডিসেম্বর) জামালপুরের দেউড়পার চন্দ্রার ডিটিআরসি উন্নয়ন সংঘে। এ অঞলের আয়োজনে আঞ্চলিক সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাতিঘরের সঙ্গে কাজ করছে ডিটিআরসি উন্নয়ন সংঘ।

একইভাবে দেশের বাকি অঞ্চলগুলোতেও বাতিঘরের শুভাকাঙ্খী একটি করে সংগঠন আঞ্চলিক সহযোগী হিসেবে বাতিঘরের সঙ্গে কাজ করছে।

খুলনা বিভাগের উৎসব অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৩০ ডিসেম্বর খুলনা নগরীর নিরালা হাউজিং সোসাইটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। সিলেট বিভাগের উৎসব অনুষ্ঠিত হবে আগামী বছরের ০৪ জানুয়ারি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে। চট্টগ্রাম বিভাগের উৎসব অনুষ্ঠিত হবে আগামী বছরের ০৬ জানুয়ারি চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমীতে। রাজশাহী বিভাগের উৎসব অনুষ্ঠিত হবে আগামী বছরের ১১ জানুয়ারি রাজশাহী শিশু একাডেমীতে। রংপুর বিভাগের উৎসব অনুষ্ঠিত হবে আগামী বছরের ১৩ জানুয়ারি রংপুর শিশু একাডেমীতে। বরিশাল বিভাগের উৎসব অনুষ্ঠিত হবে আগামী বছরের ১৮ জানুয়ারি বরিশাল বঙ্গবন্ধু উদ্যানে। ঢাকা বিভাগের উৎসব অনুষ্ঠিত হবে আগামী বছরের ২০ জানুয়ারি ফরিদপুরের অম্বিকা ময়দানে। ঢাকা মেট্রোপলিটনের উৎসব অনুষ্ঠিত হবে আগামী বছরের ২২ জানুয়ারি রাজধানীর লালমাটিয়া এ ব্লক মাঠে।

বাতিঘর সাংস্কৃতিক বিদ্যালয়ের পরিচালক তামান্না সেতু বাংলানিউজকে বলেন, বাতিঘর সাংস্কৃতিক বিদ্যালয়ের জন্মলগ্ন থেকেই আমরা শিশুদের ভেতর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিস্তারে কাজ করে চলেছি নিয়মিত। এ লক্ষ্যে আমরা শিশুদের নিয়ে বছরের বিভিন্ন সময় নানারকম অনুষ্ঠান আয়োজন করে থাকি। তার অংশ হিসেবে বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে আমরা গত বছর আয়োজন করেছিলাম বাতিঘর চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা ও প্রদর্শনী’২০১৪। সেই ধারাবাহিকতায় এবার আরও বড় পরিসরে আমরা আয়োজন করতে যাচ্ছি ক্রিসেন্ট-বাতিঘর জাতীয় চিত্রাংকন উৎসব’২০১৫।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে এই প্রথম শিশুদের চিত্রাংকন নিয়ে এমন উৎসবের আয়োজন, যেখানে প্রতিযোগিতা ভাবনার বাইরে এসে শিশুরা মনের আনন্দে ছবি আঁকবে, অভিভাবকরাও অংশ নেবেন ছবি আঁকায়। জাতীয় পর্যায়ের একটি উৎসব আয়োজনের ঘোষণা দিয়ে আমরা শুধুমাত্র ঢাকায় (রাজধানীতে) একটি অনুষ্ঠান করার ভেতরে আটকে থাকতে চাইনি। আমরা চেয়েছি, যতোটা পারা যায়, আমাদের সামর্থ্যের ভেতরে থেকে সত্যিকার অর্থেই একটি জাতীয় উৎসবের আয়োজন করতে। সে লক্ষ্যে আমরা সারাদেশকে ৯টি অঞ্চলে ভাগ করে এবারের উৎসবের প্রস্তুতি নিয়েছি।

আমরা জানি, এতেও দেশের সব অঞ্চলের শিশুরা এখানে অংশ নেওয়ার সুযোগ হয়তো পাবে না, তবে কেন্দ্র থেকে প্রান্তের দিকে যাওয়ার শুরুটা করতে চাই আমরা। ভবিষ্যতে আরও বেশি অঞ্চলে পৌঁছানোর প্রত্যয়ও রাখি আমরা।

শুক্রবার (১৮ ডিসেম্বর) বাতিঘর সাংস্কৃতিক বিদ্যালয়ের কার্যালয়ে (লালমাটিয়া বি ব্লকের ১/৪নং বাসা) সংবাদ সম্মেলনে উৎসবের বিস্তারিত কর্মসূচি তুলে ধরা হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- চিত্রশিল্পী মুনিরুজ্জামান, বাতিঘর সাংস্কৃতিক বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ মেহেদী হাসান শোয়েব ও পরিচালক তামান্না সেতু এবং ক্রিসেন্টের মার্কেটিং ম্যানেজার জাভেদ হোসেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৫
এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।