অমর একুশে গ্রন্থমেলা থেকে: শিশুপ্রহরে তোমরা যারা শুক্র আর শনিবার বইমেলায় আসছো তাদের জন্য একটি সুখবর আছে। বই মেলার বাংলাএকাডেমি অংশে ঢুকে হাতের ডান দিকে একটু এগিয়ে গেলে ১০০ নম্বর স্টলটি তোমরা সহজেই খুঁজে পাবে।
ওটা সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই)’র স্টল। সেখানে গিয়ে দেখবে তোমাদের জন্য সাজিয়ে রাখা আছে কার্টুনের বই। বলতে পারো কার্টুন সেতো থাকতেই পারে! বই মেলায় কতই না কার্টুন বই রয়েছে!
কিন্তু এতো আর যেনোতেনো কার্টুন নয়। এ যে স্বয়ং জাতির জনকের ওপর কার্টুন। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কার্টুন। নাম ‘মুজিব’। আর এটি কিন্তু স্রেফ কার্টুন বইও নয়। এটি একটি গ্রাফিক নভেল। বলতে পারো চিত্রে চিত্রে তুলে ধরা একটি আস্ত উপন্যাস। যা আবার প্রকাশিত হচ্ছে খণ্ডে খন্ডে।
কান পেতে শুনে রাখো- শুক্রবার মেলায় গেলে পাচ্ছো কার্টুন বইটির প্রথম খণ্ড। আর শনিবার সকাল ১১টা থেকে পাওয়া যাবে দ্বিতীয় খণ্ডটিও। কারণ ওই দিনই দ্বিতীয় খণ্ডটি প্রকাশিত হয়ে মেলায় প্রথম আসবে।
সামান্য দামে তোমরা কিনে নিতে পারবে। আর মজালুটে পড়ে নিতে পারবে জাতির জনকের কথা। বই দুটি পড়লে দেখবে তোমাদেরই কারো কারো ঘটনার সঙ্গে মিলে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধুর ছেলেবেলার দিনগুলো। জানোইতো, জাতির জনক হলে কি হবে একসময় তিনিও ছিলেন তোমাদের মতো ছোট্ট খোকাটি। তারও ছিলো দুরন্ত সময়। খেলাধুলার শখ।
আরও আছে ছোট্ট মুজিবটি কিভাবে ধীরে ধীরে বড় হয়ে উঠলেন, কিভাবে দেশ ও জাতিকে তার চেতনায় ধারণ করলেন। আর কি করেই বা তিনি জড়িয়ে গেলেন রাজনীতির সঙ্গে সেসব নিয়ে ছবি আর কথা।
‘মুজিব’ যে একটি চেতনার নাম, তা শিশু বয়স থেকেই শিশুদের মাঝে প্রোথিত করে দিতে হবে। আর তার মধ্য দিয়েই গড়ে উঠবে আগামী দিনের যোগ্য নাগরিক, আগামী দিনের নেতৃত্ব, এটাই মত সিআরআই’র কর্তাব্যক্তিদের।
‘বঙ্গবন্ধু গ্রামের একজন সাধারণ ছেলে থেকে একটি জাতির আশা ও স্বপ্নের ধারক বাহক হয়ে উঠেছিলেন, অবশেষে মানুষের মুক্তি ও স্বাধীনতার পথপ্রদর্শক হয়েছিলেন। তাঁর কাহিনী থেকে শিশুরা এটাই জানবে যে, কঠোর পরিশ্রম, ত্যাগ এবং সত্যের প্রতি বিশ্বাস থাকলে যেকোন কিছু করা সম্ভব। ’
এ কথাটি বলেছেন রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক। তিনি কিন্তু এই গ্রাফিক নভেলের প্রকাশক। সঙ্গে রয়েছেন আমাদের দেশের বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদও।
তোমরা হয়তো আগে থেকেই জানো কে এই রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক! তাও বলে দিচ্ছি, তিনি হচ্ছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানে নাতি। বঙ্গবন্ধুর যে ছোট মেয়ে শেখ রেহানা, তারই ছেলে এই রাদওয়ান সিদ্দিক।
বললেন, আমরা আশা করি গ্রাফিক নভেল সিরিজ ‘মুজিব’র মাধ্যমে আমরা একটি প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুর জীবনের অসাধারণ কাহিনী জানাতে পারবো। প্রথম পর্বে আমরা দেখেছি কিভাবে তরুণ মুজিব গ্রামে খেলাধুলা, পড়াশোনা, ডাক্তারের কাছ থেকে পালিয়ে যাওয়ার মত দুঃসাহসিক, দুরন্তপনার কিছু কাজের মাধ্যমে গ্রামের বালকের জীবন যাপন করতেন।
তাঁর বিশ্বস্ততার প্রমাণ তরুণ বয়স থেকেই স্পষ্ট ছিল এবং তিনি নিজের বিশ্বাসের পক্ষে দাঁড়াতে কখনো কুন্ঠা বোধ করেননি। তিনি তাঁর বাবার অনেক প্রিয়পাত্র ছিলেন। তার বাবা একজন স্নেহশীল পিতার পাশাপাশি ছিলেন ন্যায় অন্যায় বোধসম্পন্ন একজন মানুষ। এত দুরন্তপনার মাঝেও তরুণ মুজিব নিজের কাজের দায়িত্ব নেবার ব্যাপারেও শিক্ষা লাভ করেছিলেন।
দ্বিতীয় পর্বে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক উত্থানের পাশাপাশি তাঁর রাজনৈতিক গুরু হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সাথে তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠা সম্পর্কে জানতে পারবে তোমরা। আরো দেখতে পাবে পিতা বনাম পুত্রের দলের মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ফুটবল ম্যাচের ঘটনাটিও।
তাহলে আর কথা নয়। বইমেলার শিশু প্রহরে তোমরা ছুটে যাও শুক্র-শনিবার আর লুফে নাও তোমার ‘মুজিব’ কপিটি।
বড়রাও কিনে পড়তে পারবেন এই বই। আর কেবল শুক্র-শনিবারেই নয়, যেকোনও দিন মেলায় গেলে সিআরআই’র ১০০ নং স্টল থেকে কেনা যাবে ‘মুজিব’ গ্রাফিক নভেলের প্রথম ও দ্বিতীয় খণ্ড। যা আরও অনেক খণ্ডে ধীরে ধীরে বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনী প্রকাশ করবে।
বাংলাদেশ সময় ১৫৪৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৬
এমএমকে