ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

ঐতিহ্যের বৈশাখী মেলা

মীম নোশিন নাওয়াল খান, নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০১৬
ঐতিহ্যের বৈশাখী মেলা ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বৈশাখ মানেই বাঙালির প্রাণের উৎসব। নতুন বর্ষকে বরণের পাশাপাশি উৎসবকে পরিপূর্ণতা দেয় বৈশাখী মেলা।

এই মেলা বাঙালির শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্য।
পহেলা বৈশাখ কেন্দ্র করে শহর-গ্রামের বিভিন্ন স্থানে আয়োজন করা হয় ‍এ মেলার। মেলা চলে মাসজুড়ে। সেখানে খই-বাতাসা, হাওয়াই মিঠাই, মাটির পুতুল পাওয়া যায়, থাকে নাগরদোলা। মেলায় আরও হরেক রকম জিনিসের পসরা সাজিয়ে বসেন দোকানিরা।

তবে আমরা যেমন বৈশাখী মেলা দেখি, এটা কিন্তু মোটেও এমন শহুরে ছিলো না। বৈশাখী মেলার প্রচলন শুরু হয়েছে গ্রাম থেকেই। সে মেলায় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বিক্রি হতো। খাবার, মিষ্টি, ফলমূল, শাকসবজি, কাপড়, রঙিন চুড়ি, খেলনা- সবই পাওয়া থাকতো মেলায়।
সঙ্গে থাকতো সার্কাস, পুতুলনাচ, যাত্রা, পালাগানসহ বিভিন্ন বিনোদনের ব্যবস্থা। নাগরদোলার আকর্ষণই ছিলো আলাদা। গ্রামের মানুষগুলো বছরের শুরুতে দৈনন্দিন প্রয়োজনের জিনিসপত্র কিনতো মেলা থেকেই। সেই সঙ্গে চলতো হৈচৈ-আনন্দ।

বৈশাখী মেলা তাদের জন্য ছিলো একটা মিলনমেলাও। সারা বছর যে মানুষগুলো দিন-রাত পরিশ্রম করে, মেলা তাদের জন্য ছিলো অনাবিল আনন্দের।

গ্রামীণ বৈশাখী মেলা ছিল এমনই। এরপর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ধীরে ধীরে বৈশাখী মেলা গ্রামের গণ্ডি পেরিয়ে শহুরে সংস্কৃতিতে স্থান করে নেয়। সেই সঙ্গে মেলায় আসে কিছু পরিবর্তন। শহরের মানুষের কাছে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসগুলো সহজলভ্য। সেগুলো কেনার জন্য তাদের মেলার উপর নির্ভর করে থাকতে হয় না। তাই শহুরে বৈশাখী মেলাটা হয়ে উঠলো অনেকটাই বিনোদননির্ভর।

শহুরে মানুষের ব্যস্ততা ও ক্লান্তির ফাঁকে একটুখানি আনন্দ পাওয়ার সুযোগ এনে দিলো এই মেলা। শহুরে বৈশাখী মেলায় তাই খেলনা, চুড়ি, বাঁশি, বেলুন- সব পাওয়া গেলেও শাকসবজি পাওয়া যায় না। এই মেলা শুধুই আনন্দের স্থান, ক্লান্তি কাটিয়ে নিজেকে চাঙা করে তোলার স্থান।

তবে শহুরে বৈশাখী মেলা মূল বৈশাখী মেলার চেয়ে অন্যরকম হলেও এটি শহুরে মানুষদের বাঙালির ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়। মেলায় থাকে নাগরদোলা, পুতুলনাচ, সার্কাসসহ বাঙালি সংস্কৃতির বিভিন্ন উপাদানের উপস্থিতি।

দিন দিন শহুরে বৈশাখী মেলার প্রচলন ও জনপ্রিয়তা বাড়ছে। আর এই মেলার মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। বৈশাখী মেলার মাধ্যমে বেঁচে থাকুক বাংলার ঐতিহ্য, বাংলার সংস্কৃতি।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০১৬
এএ

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।