একালের বীরপুরুষ
মা বলেছেন, খোকন তুমি ঘরের কোণে থাকবে না
জগৎটাকে দেখবে যদি মনকে বেঁধে রাখবে না।
পাহাড় সাগর বন পেরিয়ে
সকল বাধা যাও এড়িয়ে,
ছুটবে তুমি ছুটবে কেবল পেছন দিকে ফিরবে না।
পড়ো যদি সাগর-মাঝে
থাকবে যে মীনরাজের সাজে,
যতই পড় ঝড়ের মুখে তীরে কভু ভিড়বে না।
হাজার পাহাড় ঠেলে ঠেলে
ছুটবে তুমি হেসে খেলে,
মনে মনেও বলবে না যে ছুটতে তুমি পারবে না।
সামনে আবার দত্যি এসে
ভয় দেখাতে এলে শেষে-
হাতের মুঠোয় ভরবে তাকে ছল করলেও ছাড়বে না।
এই পৃথিবী দেখার শেষে
যেতে পার তারার দেশে,
উঠবে যখন উপর দিকে নিচের দিকে নামবে না,
ভয় দেখাতে বারেবারে
সূর্য আগুন ঢালতে পারে,
ছুটবে তুমি ছুটবে কেবল ঘামবে তবে থামবে না।
গ্রহে গ্রহে ঘুরে ঘুরে
হাজার তারা মুঠোয় পুরে-
নেবে যখন, তোমার পাশে ঠিকই ছুটে আসবে মা;
উজ্জ্বল আলোয় চোখটা রেখে
চমকাবে এক দৃশ্য দেখে,
বিশ্বটাকে জয় করা এই বীরকে দেখে হাসবে মা।
মায়ের কথামতো
ছোট্টকালে মা বলেছেন, ‘ছোটন, তুমি পড়োÑ
তোমাকে যে হতে হবে অনেক-অনেক বড়ো।
দুচোখ মেলে তাকিয়ে দেখো এই দিকে, সেই দিকে
ফুলপাখি আর প্রজাপতির নামগুলো নাও লিখে।
দুঃখটাকে পায়ে দলে মনের সুখে হাসবে
সবার আগে মাটি-মানুষ-দেশকে ভালোবাসবে। ’
মায়ের আদেশ মান্য করে এগিয়ে এলাম যেই
দেখি আমার অজানা-অচেনা কিছু নেই।
পথে ছিল মায়ের আশিস, মাথায় ছিল ছায়া,
এখন দেখি মায়ের মতো সবাই করে মায়া।
আমার বুকে আমার মা
নীল আকাশের হাজার তারায়
আমার দুচোখ নিত্য হারায়
এসব তারার মাঝে আমার
মাকে খুঁজি রোজ।
নীল সাগরের ঢেউয়ের মাঝে
তাই প্রতিদিন তাই প্রতিরাত
মাকে খুঁজি রোজ।
প্রজাপতির রঙিন ডানায়
আমার দুচোখ দিচ্ছে হানা
হাজার ফুলের পাঁপড়ি ছুঁয়ে
মাকে খুঁজি রোজ।
পাখির ঠোঁটের সুরে-সুরে
আমিও যাই অনেক দূরে
হোক বনে আর হোক পাহাড়ে
মাকে খুঁজি রোজ।
কিন্তু আমি পাই না মাকে
মা যে আমার লুকিয়ে থাকে
শেষে আমার নিজের মনে
জানালা খুলে দিলাম,
সাথে-সাথে মা ডেকে কন্,
‘কেন খুঁজিস তুই সারাক্ষণ-
আমি যে তোর বুকে আছি
তোর বুকেতেই ছিলাম। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, মে ০৭, ২০১৬
এএ