অনেক কাল আগে এক গ্রামে থাকতেন এক ব্রাহ্মণ। নাম- দেব শর্মা।
ব্রাহ্মণ আর তার বউ দু’জনে মিলে সন্তানের সঙ্গে বেজিটিকেও লালন-পালন করতে লাগলেন। কিন্তু বউ বেজিটিকে পুরোপুরি বিশ্বাস করে উঠতে পারছিলো না। বেজি ছেলের কোনো ক্ষতি করে বসতে পারে এই ভয়ে তিনি তার ছেলেকে কখনও বেজির কাছে একা রেখে যেতেন না।
একদিন ব্রাহ্মণ আর তার বউ ছেলেকে ঘরে রেখে বাইরে গেলেন। ব্রাহ্মণ বউকে নিশ্চিত করলেন, তাদের অবর্তমানে বেজি তাদের সন্তানের ভালোই দেখভাল করবে। বেজির দায়িত্বে ছেলেকে রেখে তারা চলে গেলেন। তারা যাওয়ার কিছুক্ষণ পর, ঘরে ঢুকলো এক কোবরা। কোবরাটি ছিলো শিশুর দোলনার কাছেই। আসন্ন বিপদ দেখে বেজি লাফিয়ে পড়লো কোবরার উপর। অনেকক্ষণ মারামারি করার পর কোবরাটিকে কামড়ে মেরে ফেললো বেজি।
এ ঘটনার কিছুক্ষণ পর বেজি ব্রাহ্মণ আর তার বউয়ের পায়ের আওয়াজ পেলো। তাড়াতাড়ি করে যখন বেজি দরজার কাছে গেলো, তখন ব্রাহ্মণের বউ চিৎকার করে উঠলেন। কারণ, বেজির মুখে রক্ত লেগে রয়েছে দেখে তিনি ভেবেছিলেন- তারা নেই, এই সুযোগে বেজি তাদের ছেলেকে মেরে ফেলেছে। দ্বিতীয়বার না ভেবেই বউ একটি ভারী কলসি তুলে বেজির উপর ছুঁড়ে মারলো। সেখানেই মারা গেলো বেজি।
এরপর দ্রুত ভেতরে গিয়ে ব্রাহ্মণের বউ তো অবাক! দেখলেন, তার ছেলে দোলনায় আরামে ঘুমাচ্ছে। তারপরই চোখ পড়লো দোলনার নিচে। সেখানে মৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে একটি সাপ। এতোক্ষণে ব্রাহ্মণের বউ উপলব্ধি করলেন, আসলে তার ছেলেকে বাঁচাতেই সাপটিকে মেরে ফেলেছে বেজি। আর তাই বেজির মুখে রক্ত লেগে ছিলো।
ব্রাহ্মণের বউ নিজের কৃতকর্মের জন্য কষ্টে ও অনুতাপে কাঁদতে লাগলেন। কারণ, বেজিটিকে তিনি বিশ্বাস করতে না পারলেও, সন্তানের মতোই লালন-পালন করেছিলেন। আর আজ নিজের হাতে তাকে হত্যা করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০১৬
এসএমএন/এসএনএস/এএ