বাঙালি
যাচ্ছি হেঁটে দৃপ্ত পায়ে
সামনে খোলা মাঠ
আজ হবে হাওয়ায় হাওয়ায়
নতুন দিনের পাঠ।
যতই আসুক বিঘ্ন-বাধা
সামনে পড়–ক গোলকধাঁধা
যার মাথাতে বীরের মুকুট
সে কি কভু থামে?
মুষ্ঠি-তোলা শপথ আছে
শেখ মুজিবের নামে।
বাদ্যি বাজুক তাকধিনাধিন
দেশ করেছি মুক্ত-স্বাধীন
হাজার বছর টিকে আছি
সঙ্কটে সংগ্রামে,
সামনে বিশাল মহাসড়ক
শেখ মুজিবের নামে।
দোয়েল পাখির গানে
টুঙ্গীপাড়ার একটি ছেলে
শেখ মুজিবুর নাম
এই দেশে সেই ছেলের এখন
অনেক অনেক দাম।
দাম কি শুধু, নামও আছে
দেশজুড়ে তার- কারণ?
এই কাহিনী বলতে এখন
নেই যে কোনো বারণ।
মুজিব নামের এই ছেলেকে
তোমরা সবাই চেনো,
ছন্দ-ছড়ায় আজ ছেলেটির
জীবনখানা যেনো।
ছোট্ট বেলায় ছিল সে যে
খুব সাহসী বালক,
চোখ দুটি তার ছিল যেন
প্রজাপতির পালক।
মন ছিল তার স্বপ্নে রাঙা
আবেগ ছিল প্রাণে,
আকুল হতো মুগ্ধ হতো
দোয়েল পাখির গানে।
মুক্তি মানে পাখি
মুজিব নামের একটি ছেলে হয়তো ছিল শান্ত,
মনে মনে নীল আকাশের তারা খুঁজে আনত।
পাগলপারা হাজার তারা বাসত তাকে ভালো,
এই ছেলেটার দুচোখ জুড়ে ঢেলেছিল আলো।
মুজিব নামের সেই ছেলেটি যখন হলো বড়,
সূর্য এসে বলল তাকে, ‘শরীর তপ্ত কর। ’
তপ্ত হয়ে মনে-প্রাণে তারপরে কী করে?
এই ছেলেকে আটকে রাখা গেল না আর ঘরে।
মুজিব নামের সেই ছেলেটি ঘর ছেড়েছে ঠিকই,
বুকের ভেতর আগুন যেন করল ধিকিধিকি।
আগুন কেবল তার বুকে নয় ছড়িয়ে গেল আগুন,
বাংলাদেশের আকাশ জুড়ে আসবে এবার ফাগুন।
ফাগুন মানে বাঙালিদের স্বপ্নে ওড়াউড়ি
নীল আকাশে উড়িয়ে দেওয়া হাজার রঙের ঘুড়ি।
হঠাৎ মুজিব একাত্তরে শ্যামল মাটির টানে
মুক্তি নামের একটি সোনার বাটি কিনে আনে।
মুক্তি মানে স্বাধীনতা মুক্তি মানে পাখি
এই পাখিকে সারা জীবন বুকে পুষে রাখি।
পঁচাত্তরের ভুলে
আকাশ কাঁদে বাতাস কাঁদে
কাঁদে নদীর জল
মুহুর্মুহু কাঁদতে থাকে
গাছ-পাখি, ফুল-ফল।
দূর সাগরের ঢেউরা কাঁদে
আছড়ে পড়ে কুলে
কাশের বাগান বিলাপ করে
পঁচাত্তরের ভুলে।
বাক-বাকুম পায়রাগুলোর
ভেঙে গেছে ডানা
ধান খুটে আর খায় না তারা
উঠোনে একটানা।
সবাই জানে কী এর কারণ
কারা যে এর মূলে
পায়রার খোপ শূন্য এখন
পঁচাত্তরের ভুলে।
খুকুর নূপুর গড়িয়ে গেছে
রক্ত মাটির কাদায়
জল টলমল খুকুর দুচোখ
বাঙালিদের কাঁদায়।
রাজপথে আজ হাজার শিশু
করছে হুলুস্থুল
সময় এবার শুধরে নেবার
পঁচাত্তরের ভুল।
তোমার ছবি
মাটির মানুষ শেখ মুজিবুর
কোথায় তুমি নেই
তোমার ছবি টাঙানো আছে
দেশজুড়ে সবখানেই।
পাখির কাছে গাছের কাছে
রুপোলি সব মাছের কাছে
বাংলাদেশের নদীর কাছে
তোমার একটা ছবি আছে।
তারার কাছে চাঁদের কাছে
রোদের আলোর বাঁধের কাছে
বাংলাদেশের কবির কাছে
তোমার একটা ছবি আছে।
সোনালি ধানক্ষেতের ওপর
ঢেউ খেলে যায় যখন
দিগন্তরে মুজিব তোমার
ছবি দেখি তখন।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০১৬
এএ