আটকবর (পর্ব-১) | আব্দুস সালাম
সময়টা মুক্তিযুদ্ধের মাঝামাঝি। ১৯৭১ সালের ৩ আগস্ট।
এদিকে নাটুদা আর্মি ক্যাম্পের পাকিস্তানি বাহিনী পূর্ব পরিকিল্পিতভাবে কাটিং এম্বুস করে এই মাঠের আখক্ষেত এবং পাটক্ষেতে অবস্থান নেয়। এখানে পাকবাহিনির সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের তুমুল সম্মুখ যুদ্ধ হয়। পাকবাহিনী আধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর ব্যবহার করতে থাকে। আটকা পড়েন অনেকেই। এই যুদ্ধে ৮ জন বীরমুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। বেশ কয়েকজন আহত অবস্থায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন।
অবশ্য এ সম্মুখ যুদ্ধে অনেক পাক আর্মিও হতাহত হয়। পাক আর্মির নির্দেশে রাজাকাররা ৮ শহীদ মুক্তিযোদ্ধাকে পাশাপাশি দু’টি গর্ত করে কবর দেয়। পরবর্তীতে এর নামাকরণ হয় ‘আটকবর’। আটজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধাগণ হচ্ছেন, হাসান জামান, বাড়ি- গোকুলখালি, চুয়াডাঙ্গা। খালেদ সাইফুদ্দিন তারেক, বাড়ি- পোড়াদহ, কুষ্টিয়া। রওশন আলম, বাড়ি- আলমডাঙ্গা, চুয়াডাঙ্গা। আলাউল ইসলাম খোকন, বাড়ি- চুয়াডাঙ্গা শহর। আবুল কাশেম, বাড়ি- চুয়াডাঙ্গা শহর। রবিউল ইসলাম, বাড়ি- মোমিনপুর, চুয়াডাঙ্গা। কিয়ামুদ্দিন, বাড়ি- আলমডাঙ্গা। আফাজ উদ্দিন চন্দ্রবাস, বাড়ি- দামুরহুদা।
নানার কাছ থেকে আটজন বীর মুক্তিযোদ্ধার শহীদ হওয়ার গল্প শুনে আনিকার চোখে জল চলে আসে। আর রাজাকারদের প্রতি তার মনে ঘৃণার জন্ম হয়। আনিকা বয়সে ছোট হলেও এইসব কুখ্যাত রাজাকারদের সে বিচার চায়। সে চায় তাদের ফাঁসি হোক। অবশেষে এই স্থান ত্যাগ করার পূর্বে নানা ও নাতনি আটজন বীর মুক্তিযোদ্ধার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করেন। এরপর তারা ‘মুক্তিযুদ্ধ সংগ্রহশালা’ পরিদর্শনের জন্য আটকবরের স্থানটি ত্যাগ করলো।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৬
আইএ