ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

ইচ্ছেঘুড়ি

রহস্য দ্বীপ (পর্ব-৩৩)

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৪৫ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০১৭
রহস্য দ্বীপ (পর্ব-৩৩) রহস্য দ্বীপ (পর্ব-৩৩)

নৌকাটা এসে বালি আর পাথরে ঘষা খায়। মাইক সেটাকে টেনে সৈকতে তুলে আনে, আর জ্যাক লাফিয়ে নামে। 
আমি এখানকার আমাদের জন্য কিছু একটা পেয়েছি! জ্যাক বলে এবং কথাটা বলার সময় দেঁতো হাসি হাসে, চাঁদের আলোয় ওরা ওর ধবল দাঁতগুলো দেখতে পায়। নৌকার এখানটাতে তোমার হাতটা রাখো, নোরা।

নোরা সেখানে হাত রাখে এবং চিৎকার করে ওঠে!
ওখানে গরম আর পালকের মতো নরম কিছু একটা! সে বলে। ওটা কী?
আমার ছয়টা মুরগি! জ্যাক বলে, ঝোপের আড়ালে ঝিঁমানো অবস্থায় খুঁজে পাই! ধরে বেঁধে ফেলি যেন নড়তে না পারে! কথা হলো গিয়ে, বয়ে আনার সময় ভারে কোমরটা ধরে গেছে! কিন্তু এবার আমরা প্রচুর ডিম খেতে পারবো! দ্বীপ ছেড়ে ওরা কোথাও পালাতে পারবে না!
হুররে! পেগি চেঁচিয়ে ওঠে।

সকালের নাস্তায়, দুপুরে আর চায়ের সঙ্গে আমরা ডিম খেতে পারবো! 
আর কী কী এনেছ? মাইক জিজ্ঞেস করে।  
মুরগির জন্য ভুট্টা, জ্যাক বলে। আর গোলা থেকে সব ধরনের বীজের প্যাকেট, কয়েক টিন দুধ এবং একতাল বাসী রুটি ও প্রচুর সবজি!
এবং এখানে সামান্য চেরি আছে, নৌকা থেকে একমুঠো লাল চেরি হাতে নিয়ে নোরা বলে। তুমি কি এগুলো পেড়ে আনলে, জ্যাক?
হুম, জ্যাক বলে। ওগুলো আমাদের বাগানের। এখন গাছ ভর্তি চেরি।
তুমি কি তোমার দাদাকে দেখেছো, জ্যাক? মাইক জিজ্ঞেস করে। হুম, জ্যাক দেঁতো হাসি হাসে। কিন্তু তিনি আমাকে দেখেননি! সে চলে যাচ্ছিল- আমার খালার সঙ্গে থাকতে। খামারটা বন্ধ করে দেওয়া হবে এবং বিক্রির আগ পর্যন্ত কেউ একজন পশুগুলোকে খাওয়াবে। তাই আমার মনে হচ্ছে আমাকে আমার গরুটা নিয়ে আসার চেষ্টা চালাতে হবে এবং লেকের ওপর দিয়ে সাঁতরিয়ে ওকে দ্বীপে আনতে হবে!
পাগলামো করতে যেও না, জ্যাক, পেগি বলে। তুমি তা কখনোই পারবে না!
তুমিও জানো না আমি কী করতে পারি! জ্যাক বলে। তাহলে, শোন- আমি শুনেছি আমার দাদা তার দু’জন বন্ধুর সঙ্গে কথা বলছিলেন, আর আমরা কোথায় গায়েব হয়ে গেছি তাই ভেবে সবাই খুব অবাক! ওরা আমাদের সব জায়গাতে খুঁজেছে- কাছাকাছি সব শহর আর গ্রামে, আর সারাদেশ জুড়ে!
ওহহহহ! ওরা তিন জন ভয়ে বলে ওঠে। তোমার কি ধারণা ওরা এখানেও আসবে?
আসতেও তো পারে, জ্যাক বলে। তেমন কিছু হলে টেরও পাবে না। আগুনের ধোঁয়ায় আমি সবসময়ই কম বেশি ভীত থাকি, যদি কেউ দেখে ফেলে। কিন্তু দেখে ফেলবার আগ পর্যন্ত ভয় পাওয়ার তেমন কিছু নেই।
পুলিশও কি আমাদের খুঁজছে? পেগি জিজ্ঞেস করে।  
আরে, হ্যাঁ, জ্যাক বলে। সবাই, যতটা বুঝতে পারছি। আমি দাদাকে বলতে শুনেছি কীভাবে তারা গোলাঘর, খড়ের গাদা আর খানা-খন্দ সব খুঁজে দেখেছে এবং লটারি জেতার আশায় বাড়ি থেকে ভেগেছি এই ভেবে আমাদের খুঁজতে, আশপাশের বিশ মাইলের মাঝে সব শহরে লোক পাঠানো হয়েছে। ওরা ধারণাই করতে পারেনি আমরা ওদের কতো কাছে!
হ্যারিয়েট খালা কি বিপর্যস্ত? পেগি জানতে চায়।  
খুব! জ্যাক দাঁত বের করে হাসে। রান্না করা আর ধোয়া-মোছার জন্য সে এখনও কাউকে খুঁজে পায়নি! তবে আমি আশা করছি এবার তার একটা শিক্ষা হবে! যাই হোক, দাদা খালার বাসায় থাকতে যাচ্ছে এটা একটা ভালো খবর। আমি যখন তখন এদিক সেদিক চলে যেতাম আর এখন তাকে সেটা দেখতে হবে না। কথা হলো গিয়ে, আমি আশা করেছিলাম এই মুরগিগুলো আনার সময় মাইক আমার সঙ্গে থাকবে। ঠুকরে, খামচে, ডানা ঝাঁপটিয়ে ওদের তোড়জোড়ে, ভয় হচ্ছিল কেউ না আবার শুনে ফেলে।
ওদের কোথায় রাখবো আমরা? সৈকত পর্যন্ত এনে, মাইক বলে।
আমার ইচ্ছে সকাল পর্যন্ত উইলো ঘরে রাখা, জ্যাক বলে। কিছু একটা দিয়ে আমরা দরজার দিকটা আটকে রাখতে পারবো।
ওরা তাই একত্রে আঁটি বাঁধা চেঁচাতে থাকা মুরগিগুলো নিয়ে উইলো ঘরে নিয়ে রাখে এবং লাঠি-সোটা আর ফার্ন দিয়ে দরজাটা আটকে দেয়। মুরগিগুলো ভয়ে চেঁচিয়ে কোণার দিকে ছুটে যায়। তারপর আর সাড়া-শব্দ করে না।
আমি ভয়ানক ক্লান্ত, জ্যাক বলে। চলো এবার কয়টা চেরি খেয়ে শুতে যাওয়া যাক।
ওরা পাকা চেরি চিবায় এবং নিজেদের সবুজ শোবার ঘরে ঢুকে। ওরা যে ফার্নগুলো এনে পাহাড়ের ঢালে শুকাতে দিয়েছিল বিকেলের মধ্যে সেগুলো শুকিয়ে একেবারে বাদামি হয়ে এসেছে। তাই মেয়েরা তাদের আর ছেলেদের বিছানায় সেগুলো পেতে দেয় এবং আজকে রাতে তাদের বিছানাগুলোকে আগের চেয়ে বেশি নরম আর মোলায়েম বলে মনে হয়। ওরা সবাই ক্লান্ত। মাইক আর জ্যাক কিছুক্ষণ কথা বলে, কিন্তু মেয়েরা তখনই ঘুমিয়ে পড়ে।  
পরদিন সকালে ওরা খুব বেলা পর্যন্ত ঘুমায়। পেগি প্রথমে জাগে এবং উঠে বসে, অস্বাভাবিক শব্দ শুনে অবাক হয়। তীব্র স্বরে কক্ কক্ ডাক।  
আরে! মুরগি না! সে ভাবে। সে গুল্ম-ফার্নের বিছানা ছেড়ে, ছেলে দু’টার ওপর দিয়ে লাফিয়ে উইলো ঘরের দিকে ছুটে। দরজার একপাশ ঠেলে ভেতরে ঢুকে পড়ে। তাকে দেখে মুরগিরা সব কোণার দিকে ছুটে যায়, তবে পেগি স্বাগত দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে।

চলবে...

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৯ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০১৭
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।