ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

ইচ্ছেঘুড়ি

রহস্য দ্বীপ (পর্ব-৩৫)

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২৮ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০১৭
রহস্য দ্বীপ (পর্ব-৩৫) রহস্য দ্বীপ (পর্ব-৩৫)

৭. গরু এলো দ্বীপে
দেখতে দেখতে একটা কি দু’টা দিন পেরিয়ে যায়। বাচ্চারা খুব ব্যস্ত সময় পার করতে থাকে, তাদের করার এখনও অনেক কিছু বাকি। উইলো ঘরে দরজাটা খসে পড়ে এবং আবারও সেটা খুব সতর্কতার সঙ্গে জুড়ে দিতে হয়। একটা মুরগি হারিয়ে যায়, এবং সেটার খোঁজে বাচ্চাদের আস্ত একটা সকাল খরচ হয়ে যায়। শেষে একটা হলদে ঝোঁপের নিচে জ্যাক সেটাকে খুঁজে পায়। সেখানে সে বাদামি বড় একটা ডিম পাড়ে। 

মুরগিরা লাফিয়ে বেরিয়ে যেতে পারছে ভেবে, ওরা মুরগির বেড়াটা আরও উঁচু করে। তবে মাইক বেড়ার এক জায়গায় একটা গর্ত দেখে নিশ্চিত হয় মুরগিটা সেটা গলেই বাইরে বেরিয়ে ছিল এবং দ্রুত ফার্ন পাতা ঠেসে সেটা আটকে দেওয়া হয়।

শুয়ে বসে থাকলেও মুরগিরা সারাদিনই কক্ কক্ করে চেঁচায় এবং নোরা দিনে দু’বার খাবার দিতে আসলে ওকে দেখে ছুটে আসে।
বড় একটা কামরার বদলে, উইলো ঘরের ভেতরটা দু’টা কামরায় ভাগ করার কথা ভাবে মাইক। সামনের অংশটাকে বসার ঘর হিসেবে ব্যবহার করা যাবে, কোনার দিকটা ভাঁড়ার হিসেবে কাজে আসবে এবং পেছনের অংশে ফার্ন আর লতা-গুল্ম বিছিয়ে তুলতুলে করে নিয়ে শোবার ঘর হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। তাই ওরা উইলো দিয়ে একটা বেড়া তৈরির কাজে লেগে যায় এবং সেটা কামরার মাখানে লাগায়। একটা প্রবেশ পথ রাখে, তবে তাতে কোনো দরজা লাগায় না। দুই কামরার একটা বাড়ি খুবই চমৎকার! 
একদিন সন্ধ্যায় ছোট্ট সৈকতের ওপর ক্যাম্প-ফায়ারের সময় জ্যাক অস্বাভাবিক কিছু একটা নিয়ে হাজির হয়।  
ও কী নিয়ে আসছে মাইক তাকিয়ে দেখতে থাকে।
তুমি দেখছি বেশ ক’টা খরগোশ ধরে এনেছো! সে বলে, আর চামড়াও দেখছি ছাড়িয়ে ফেলেছ, আর রান্নার জন্য তৈরি করে এনেছো!
ওহ, জ্যাক! নোরা বলে। তুমি কি শেষ পর্যন্ত সুন্দর খরগোশগুলোকে ধরেই ছাড়লে? আমি ওদের প্রচণ্ড ভালোবাসি, বিকেলে আমাদের ঘিরে ওদের খেলতে দেখতে খুব মজা লাগে।
আমি জানি, জ্যাক বলে, কিন্তু মাঝে মধ্যে আমাদের মাংস খাওয়া চাই, এ নিয়ে, আর বেশি চিন্তা করো না, নোরা-ওদের খুব বেশি ভুগে মরতে হয়নি আর ব্যথাও পায়নি, আর জানোই তো প্রায়ই তুমি বাড়িতে খরগোশের বড়া খেতে।  
খাবারে স্বাদ বদল হচ্ছে জানার পরও, বাচ্চাদের কেউই খরগোশ রান্না করাটা তেমন একটা উপভোগ করতে পারে না। মাছ খেতে খেতে ওরা এরই মধ্যে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। নোরা জানায় সেদিন সন্ধ্যা থেকে সে আর কোন খরগোশের চেহারার দিকে তাকাতে পারবে না!
অস্ট্রেলিয়াতে, আমাদের এখানকার ইঁদুরের মতোই খরগোশও একটা ক্ষতিকর প্রাণী ছাড়া বেশি কিছু নয়, সব জান্তার মতো, জ্যাক বলে। আমরা যদি অস্ট্রেলিয়াতে থাকতাম তাহলে কয়েকটা ক্ষতিকর প্রাণী মারাকে ভালো কাজ বলেই গণ্য করতাম।
কিন্তু এখন আমরা অস্ট্রেলিয়াতে নেই, পেগি বলে। কেউ আর কথা বাড়ায় না, সবাই চুপচাপ খেয়ে উঠে পড়ে। প্রতিদিনের মতো মেয়েরা ধোয়া-মোছা করে। সকালের জন্য সেদ্ধ করবার জল আনতে ছেলেরা ঝর্ণার দিকে রওনা হয়। তারপর ফিরে এসে সবাই হ্রদে ডুব দিতে যায়।
মনে হচ্ছে আজ রাতের মধ্যেই আমার গরুটাকে নিয়ে আসতে পারবো, সবাই কাপড় পড়ার সময়, জ্যাক বলে।  
পারবে না, জ্যাক! নোরা চেঁচিয়ে ওঠে। তুমি আগে কখনও এখানে ওমন একটা গরু নিয়ে আসোনি! 
আমি তোমার সঙ্গে যাবো, জ্যাক, মাইক বলে। তুমি চাইছিলে এ কাজে কেউ একজন তোমাকে সাহায্য করুক।
ঠিক ধরেছো! জ্যাক বলে। অন্ধকার নামার পরপরই আমরা রওনা হবো।
ওহ্, জ্যাক! গরু আসছে সেটা ভেবে উত্তেজিত হয়ে, মেয়েরা বলে। আমরা ওকে কোথায় রাখবো?
দ্বীপের অন্যপাশে ওকে রাখা যাবে, জ্যাক বলে। ওদিকটায় সুন্দর ঘাস জন্মেছে। ওটা লতা-গুল্ম খেতে পছন্দ করে না।
ওকে কীভাবে আনবে, জ্যাক? মাইক জানতে চায়। ওকে নৌকায় তুলতে ঝামেলা হবে, তাই না?
ধূর, ওকে নৌকায় তুলছি না! জ্যাক হেসে বলে। ওকে নৌকার পেছন পেছন সাঁতরে নিয়ে আসবো!
অন্য তিনজন অবাক হয়ে জ্যাকের দিকে তাকিয়ে থাকে। তারপর ওরা হাসতে শুরু করে। একটা গরু নৌকার পেছনে সাঁতরে রহস্য দ্বীপে আসছে ব্যপারটা খুবই মজার! 

চলবে...

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৮ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০১৭
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।