মাঠের মূল ফটক সংলগ্ন গ্যালারিতে স্কুলের শিক্ষার্থীদের আঁকা চিত্রকর্ম প্রদর্শিত হয়। নানা বিষয়ের ওপর সৃষ্টিশীল চিত্রকর্ম নিয়ে বিভিন্ন ক্লাসের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে ভিন্নধর্মী এ আয়োজনে।
আলোর ধারা স্কুলের এ চিত্রাঙ্কন উৎসবের বিশেষত্ব হলো, এখানে কোনো রকম প্রতিযোগিতামূলক ব্যাপার ছিল না। চেষ্টা করা হয়েছে অংশগ্রহণকারী সব শিক্ষার্থীকেই সমান গুরুত্ব দিতে। শিশুর কল্পনার জগতকে কোনো মাত্রায় আবদ্ধ না করে মনের রঙের ডানায় ভর দিয়ে পাখা মেলারই আয়োজন ছিল যেন এটা। প্রথম বা দ্বিতীয় স্থান নির্ধারণ করে সেই কল্পনার রঙকে খাঁচাবন্দি করতে চাননি এর আয়োজকরা।
আলোর ধারার প্রিন্সিপাল বন্দনা পাল এই ভিন্নধর্মী আয়োজন সম্পর্কে বলেন, ‘সব শিশুই প্রতিভাবান। কোনো প্রতিযোগিতায় জয়ী হলেই সে মেধাবী, আর একটুর জন্য পেছনে পড়ে গেলে সে মেধাবী নয়, এই ধারণায় আমরা বিশ্বাসী নই। আমাদের কাছে আমাদের প্রতিটি শিক্ষার্থীই সমান মেধাবী। সেটা পড়ালেখাই হোক আর চিত্রাঙ্কন হোক। যেকোনো ক্ষেত্রে আমরা প্রতিযোগিতার চেয়ে অংশগ্রহণকে বেশি উৎসাহিত করি’।
![আলোর ধারা স্কুলের আর্ট ফেস্টিভ্যালের গ্যালারি। ছবি: বাংলানিউজ](http://cdn.banglanews24.com/media/imgAll/2016October/bg/art-fest-120171104203411.jpg)
এমন ভিন্নধর্মী আয়োজনের প্রতিষ্ঠান আলোর ধারা স্কুল পরিচালিতও হচ্ছে রাজধানীর অন্য দশটা স্কুলের চেয়ে কিছুটা ভিন্নভাবে। তা জানা গেল স্কুলের শিক্ষক মুহাইমেনুল রাজিবের কাছ থেকেই। তিনি জানান, স্কুলের শিক্ষার্থীদের ক্লাসে কোনো রোল নাম্বার দেওয়া হয় না। সেখানে শিক্ষার্থীদের নামের আদ্যাক্ষর অনুযায়ী সিরিয়াল করা হয়। ক্লাসের শিক্ষার্থীদের মধ্যেও যেন কোনো প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব গড়ে উঠতে না পারে তাই এ প্রয়াস।
চিত্রাঙ্কন উৎসব উপলক্ষে আরও আয়োজন করা হয় শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এ অনুষ্ঠানের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সাজানো হয় ‘বায়ান্ন থেকে একাত্তর’ থিমের ওপর ভিত্তি করে।
![উপস্থাপনায় প্রীতি ও রোদেলা, তারা সবাইকে এদেশের বায়ান্ন থেকে একাত্তরের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়। ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম](http://cdn.banglanews24.com/media/imgAll/2016October/bg/art-fest-220171104203513.jpg)
আয়োজনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হয় রোদসী, বুশরা ও সাবার যৌথ নৃত্য পরিবেশনের মধ্য দিয়ে। এরপর পাহাড়ি নাচ পরিবেশন করে সুদিপ্তা। ‘ফাগুনেরও মোহনায়’ গানের সঙ্গে নাচের তালে তালে সুদিপ্তা পরিচয় করিয়ে দেয় বাঙালি ঐতিহ্যকে।
![যৌথ নৃত্যে রোদসী, বুশরা ও সুদিপ্তা/ আর পাহাড়ি নৃত্যে সুদিপ্তা। ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম](http://cdn.banglanews24.com/media/imgAll/2016October/bg/art-fest-320171104203622.jpg)
নাচ ও গানের ফাঁকে ফাঁকে প্রীতি ও রোদেলা যৌথভাবে শোনাতে থাকে ‘বায়ান্ন থেকে একাত্তরের গল্প’। কিভাবে ১৯৪৮ সালে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা ঘোষণার পর দেশের জনগণ আন্দোলনে নামলো এবং ১৯৫২ সালে রক্তের বিনিময়ে রাষ্ট্র ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হলো বাংলা, তা ফুটে উঠেছে প্রীতি ও রোদেলার বর্ণনায়।
বর্ণনার পাশাপাশি ১৯৫২ সালের ঢাকা মেডিকেল কলেজ প্রাঙ্গণে মাতৃভাষার জন্য আন্দোলনের মুহূর্তটা দৃশ্যায়ন করে মেঘদূত, সৌমেলী, ঋদ্ধ ও তাবিত।
![ভাষা আন্দোলন তুলে ধরছে মেঘদূত, সৌমেলী, ঋদ্ধ ও তাবিত। ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম](http://cdn.banglanews24.com/media/imgAll/2016October/bg/art-fest-420171104203743.jpg)
রাজাকার সেজে মঞ্চে উপস্থিত হয়ে ঋদ্ধ ও তাবিত সবাইকে স্মরণ করিয়ে দেয় একাত্তরে যুদ্ধাপরাধীদের ভয়াবহ ভূমিকার কথা।
![রাজাকারের সাজে ঋদ্ধ ও তাবিত। ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম](http://cdn.banglanews24.com/media/imgAll/2016October/bg/art-fest-520171104203836.jpg)
বাংলাদেশ সময়: ২০২৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৪, ২০১৭
এনএইচটি/এইচএ/