ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

প্রথমবার এক্সাইটিং বাংলাদেশ সফর 

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৮
প্রথমবার এক্সাইটিং বাংলাদেশ সফর  কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় স্বর্ণালী সরদার গুনগুন

এটাই আমার প্রথম বাংলাদেশ ভ্রমণ। তাই ফ্লাইটে ওঠার আগের দিন আমি খুবই এক্সাইটেড ছিলাম। প্রথমবার প্লেনে উঠে বাংলাদেশ যাবো। বাবার স্যার টিকিট অ্যারেঞ্জ করে দিয়েছিলেন। পরের দিন সকাল ৭টায় বাংলাদেশ ভ্রমণের জন্য বাসা থেকে বেরিয়ে গেলাম। এয়ারপোর্টে পাসপোর্ট আর টিকিট দেখাতেই আমাদের ভিতরে ঢোকালো। তারপর বাবা বললো, গুনগুন তুই নিজে গিয়ে বোর্ডিং পাস নে। বাবাকে বললাম তুমি হেল্প করো আমি পারবো।

আমি উইন্ডো সিট চাইতেই একজন লেডি আমাকে বললো তাহলে আলাদা আলাদা সিট পড়বে। আমি বললাম আমার ফার্স্টটাইম প্লেনে ওঠা।

একসঙ্গে সিট দিন। এরপর অনেকক্ষণ বসতে হয়েছিল আমাদের। বাবা বললো ফ্লাইট ডিলে আছে। আমি বসে বসে প্লেন দেখছি। পাখির মতো আকাশে উড়ে যাচ্ছে। বাবা বললো গুনগুন তুই চুপ কেন, ভয় করছে? আমি বললাম না তো। ফার্স্টটাইম তাই এক্সাইটেড!
 
শেষপর্যন্ত প্লেনে বসলাম উইন্ডো সিটে। বাবা বললো গুনগুন আমি তোকে কিছু বলবো না। এয়ারহোস্টেসরা যা যা বলবে সেরকম করবি। আমি সিট বেল্ট বেঁধেছি হেল্প ছাড়া। জানালা দিয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে দেখছিলাম ঘর-বাড়ি রাস্তাগুলো আমার ডল হাউসের মতো লাগছে। তারপর আকাশটা কখন আমার নিচে চলে গেলো। খুব ভালো লাগছিল।

বিমান জাদুঘরে গুনগুনপ্লেন থেকে নেমে এয়ারপোর্টে প্রয়োজনীয় কাজ সেরে বেরিয়ে দেখলাম একটি গাড়ি আমাদের রিসিভ করতে এসেছে। বাবার হাত থেকে কেড়ে মহিউদ্দিন আঙ্কেল আমাদের লাগেজগুলো গাড়িতে তুলে দিচ্ছিলেন।
 
গাড়িতে ওঠার কিছুক্ষণ পর হঠাৎ করে পিছন থেকে একটা আওয়াজ এলো। আমি আর মা ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। দেখলাম আমার সিমু পিপি ও হ্যাপি পিপি আমাদের সারপ্রাইজ রিসিভ করতে এসেছেন। আমার খুব মজা লেগেছিল।
 
গাড়ি থেকে নেমে বাবার অফিসে গেলাম। অফিসটা অনেক বড়। স্যারের রুমটাও অনেক বড়। আমি বাবা-মা, সিমু পিপি হ্যাপি পিপি স্যার একসঙ্গে লাঞ্চ করলাম। বাংলাদেশে যাওয়ার আগে আমি খুব টেনশনে ছিলাম খাওয়া নিয়ে। কারণ আমি মাছ খাই না। কিন্তু ওখানে গিয়ে আমার পছন্দের খাবারগুলো পেয়েছিলাম। স্যার আমাকে প্রতিদিন পিজ্জা, বাবা রাফি, চিকেন খাইয়েছেন। আমি ডিমের কুসুম খাই না কিন্তু আমি খেয়েছি।
 
পার্কে বেড়ানো আর যত্নে মজার খাবারপ্রথমদিন থেকে শুরু করে যে ক’দিন অফিসে ছিলাম স্যার আমাকে অফিসে একটা কম্পিউটার অ্যারেঞ্জ করে দিয়েছিলেন। তারপর আমরা চট্টগাম গিয়েছি। সেখানে ওয়ান নাইট স্টে করে কক্সবাজার গিয়েছিলাম। বাবার কাছ থেকে জানলাম এটা লার্জেস্ট বিচ ইন দ্য ওয়ার্ল্ড। আমি সমুদ্রে নেমেছি। আমি আর আইয়ান অনেকক্ষণ খেলেছি সমুদ্রের নোনা জলে। বাকি সবাই প্যারাসেইলিং করেছে। আমার খুব ইচ্ছা ছিল কিন্তু সাব্বির আঙ্কেল বললো এটা বাচ্চাদের জন্য নয়। ছোট বলে খুব মিস করলাম প্যারাসেইলিং। চট্টগ্রামে আমরা রোদেলা বিকেলে খেয়েছি। আমার সবচেয়ে ভালো লেগেছিল কুলফিটা।
 
তারপর আমরা আবার ঢাকায় আসি। নয়ন আঙ্কেল আমাকে ১৩০টি স্পট ঘুরিয়েছেন। নয়ন আঙ্কেল খুব ফানি পারসন আর আজাদ আঙ্কেল খুবই হেল্পফুল। তারপর আমি ফরিদপুর ঘুরেছি। সেখানে আমি থার্টিফাস্ট নাইট খুব এনজয় করেছি।  পিঠে খেয়েছি, দুধকদু খেয়েছি। পদ্মানদী দেখেছি।
 
বাংলাদেশে গিয়ে আমি আমার ফ্রেন্ড ও ফ্যামিলিকে কখনও মিস করিনি। বাবার অফিসের কলিগ, স্যার এবং সিমু পিপির বাড়ি সবাই খুব ফ্রেন্ডলি। আমি কখনই মনে করতে পারিনি কলকাতায় নেই। বাবা বলেছিলো আমার প্রথম ফরেন ট্যুর। বাট আই ডিড নট ফিল ফরেন। তবু আমার খুব ভালো লেগেছে।
 
আমার সিমু পিপি বলেছে যখন বাংলাদেশে যেতে ইচ্ছে করবে পিপিকেই বললে নিয়ে যাবে। আমি আবার যাবো। স্যার আমাকে লিখতে বলেছিলেন বাংলাদেশ নিয়ে। আমি কোনোদিন এসএ লিখিনি। তবু মনের তাগিদে সাহস করে লিখে ফেললাম।  

স্বর্ণালী সরদার গুনগুন
৫ম শ্রেণি, ইংরেজি মাধ্যম
মনসুর হাবিবউল্লা মেমোরিয়াল স্কুল (সাউথ এন্ড)
বয়স ১১ 

বাংলাদেশ সময়: ১৯২১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৮
এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।