ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

রহস্য দ্বীপ (পর্ব-৭৫)

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫০০ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০১৮
রহস্য দ্বীপ (পর্ব-৭৫) রহস্য দ্বীপ

[পূর্বপ্রকাশের পর]
আমাদের সবুজ ছোট্ট ঝাঁপিতে ওগুলো দেখতে খুব চমৎকার দেখাচ্ছে, তাই না? খুশিতে পেগি বলে। মেয়েরা তাদের কয়েকটা সাজিতে প্রথমেই স্ট্রবেরি পাতা দিয়ে গদি বানিয়ে নেয়। তারপর তার ভেতর আলতো করে পাকা স্ট্রবেরি সাজাতে থাকে। 

আমার ধারণা জ্যাক এর প্রতিটা ডালা ছয় পেন্স করে বেচে আসতে পারবে, পেগি বলে। চাইলে এখনই খাওয়া যায়।


মেয়েরা মোট বারোটি শনের ঝুঁড়ি ভরে এবং এরপর আগুন ধরাতে ক্যাম্পে ফিরে যায়। খুব তাড়াতাড়ি দাউ দাউ করে আগুন জ্বলে ওঠে, আর পেগি সিদ্ধ হতে ওর ওপর কেটলি ঝুলিয়ে দেয়। নোরা মুরগিদের খাবার দিতে চলে যায়।

আজ ডেইজির দুধ দোয়াবো, ভাবছি, পেগি বলে। দুধ দোয়াবার সময় প্রায় হয়ে এলো, আর আজ সকালে ছেলেরা সময় পাবে না। আগুনটা দেখো, নোরা, আর ফুটতে শুরু করলে কেটলিটা নামিয়ে রেখো।

রহস্য দ্বীপশিগগিরই ছেলেরা ফিরে আসে, খুশি মনে মেয়েদের ধবল মাশরুমের চমৎকার সংগ্রহ দেখায়। পেগি ডেইজির দুধ দোয়ানো শেষ করে এবং সবার জন্য গরম গরম চা বানায়। তাদের টিনভর্তি কোকা অনেক আগেই শেষ, তাই সেটাও তালিকায় যোগ করতে জ্যাক তার মনে গেঁথে নেয়।  

যে সময় ছেলেরা ডিমভাজা আর মাশরুমের সঙ্গে কয়েকটা বুনো স্ট্রবেরি আর মাখন দিয়ে নাস্তা করতে ব্যস্ত, মেয়ে দুটি তখন উইলো ঝুড়িতে চমৎকার সেই মাশরুম সাজিয়ে দেয়, উইলোর এই ঝুড়িগুলো শনের ঝুড়ির চেয়ে বড় আর মজবুত। ঝুড়ি সাজিয়ে আরো বেশকিছু বাকি থেকে যায়।  

পেগি আর নোরা সাবধানে ঝুড়িগুলো বয়ে নিয়ে নৌকায় রাখে। যাতে মাছি বসতে না পারে তাই ঝুড়ির ওপরটা এলডার পাতা দিয়ে ঢেকে দেয়। মাছিরা এলডার পাতার ঘ্রাণ একেবারেই সইতে পারে না।  

ছেলেরা নৌকা ছাড়ে। ভেতরে এমনভাবে গোছগাছ করা হয় যাতে ওরা দুজনে হ্রদের শেষপ্রান্ত পর্যন্ত যেতে পারে। তবে তাদের পণ্যগুলো বিক্রি করতে এবং দোকানে কেনাকাটা সারতে কেবল জ্যাকই যাবে। একা একটা ছেলে খুব একটা চোখে পড়ার মতো না। জ্যাকের ফিরে আসার আগপর্যন্ত লেকের তীরে কোথাও নৌকাসহ লুকিয়ে থেকে মাইক ওর জন্য অপেক্ষা করবে। মাইক সঙ্গে কিছুটা রান্না করা মাছ আর সামান্য দুধ এনেছে, কারণ জ্যাক ফিরে আসতে কম করে হলেও ঘণ্টা খানেক সময় লাগবে।  

এখানে নৌকা রাখার ভালো একটা জায়গা আছে, মাইক আর সে হ্রদের ওপর দিয়ে নৌকা বাইতে থাকে এবং দূরের গ্রামটা দেখেতে পাওয়ার পর, জ্যাক বলে। লেকের পাড়ে একটা এলডার গাছ নুয়ে পড়ে আছে, আর মাইক পথ দেখিয়ে নৌকাটিকে সেখানে নিয়ে যায়। নৌকাটি পড়ে থাকা গাছটার তলায় পিছলে ঢুকে যায় আর জ্যাক লাফিয়ে নামে।  

এখান থেকে আমি সহজেই গ্রামের পথ খুঁজে নিতে পারবো, সে বলে। আমি যতটা পারা যায় তাড়াতাড়ি ফিরবো, মাইক।
জ্যাক লম্বা দু’টি লাঠি এনেছে আর ওর সঙ্গে সে মাশরুম আর স্ট্রবেরির ঝুড়িগুলো বাঁধে। এভাবে কোনো কিছু না ফেলে সে খুব সহজেই ওগুলো বয়ে নিয়ে যেতে পারবে। মালামাল নিয়ে সে বনের ভেতর চলে যায় আর মাইক তার ফিরবার অপেক্ষায় নৌকায় বসে থাকে।  রহস্য দ্বীপ

ছোট সেই গ্রামের পথ খুঁজে পেতে জ্যাককে খুব একটা বেগ পোহাতে হয়নি এবং সেদিন গ্রামে হাট বসেতে দেখে সে খুবই খুশি হয়! ছোট এই বাজার প্রতি বুধবার বসে, আর ঘটনাক্রমে সেদিন ছিল বুধবার!
 
দারুণ! জ্যাক ভাবে। খুব একটা ভিড়-বাট্টা নেই বলে কেউ আমাকে দেখতেও পাবে না। তাই খুব সহজেই আমি আমার জিনিসগুলো বেচতে পারবো!

ছেলেটি ছোট্ট সেই বাজারে গিয়ে, ‘দারুণ মাশরুম! পাকা বুনো স্ট্রবেরি!’ বলে উঁচু স্বরে ডাকতে শুরু করে।  

মাশরুম আর স্ট্রবেরির পরিপাটি সুন্দর সুন্দর ঝুড়ি দেখতে পেয়ে লোকেরা থামে। সন্দেহ নেই জিনিসগুলো খুবই চমৎকার, এবং জ্যাক তার মালামাল খুব দ্রুত বিক্রি করে। তার পকেটে এখন পুরো এক সিলিং আর ছয় পেনি ঝনঝন করছে। এবং এতে জ্যাক খুব তৃপ্তবোধ করে। এবার সে অনেক অনেক জিনিস কিনতে পারবে! 

অবশেষে তার লাঠিতে আর একটি ঝুড়িও বাকি থাকে না। লোকেরা তার প্রশংসা করে তার পণ্য আর সুন্দর করে বোনা ঝুড়ির জন্য। তাকে আবার আসতে বলে। জ্যাকও ঠিক করে আবার আসবে। টাকা কামাবার খুব মজার একটা উপায়, আর কেবল টাকা হলেই সে তার দরকারি সব জিনিস কিনতে পারবে! 

চলবে.....

বাংলাদেশ সময়: ১০৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০১৮
এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।