ঢাকা, সোমবার, ১৫ পৌষ ১৪৩১, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

রহস্য দ্বীপ (পর্ব-৮৯)

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১২৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৮
রহস্য দ্বীপ (পর্ব-৮৯) রহস্য দ্বীপ

[পূর্বপ্রকাশের পর]
এবার এখানে তাকাও টম। এখন যদি এই দ্বীপে বাচ্চাগুলোকে খুঁজে পাওয়া যায়, তাহলে আমি আমার মাথার টুপিটা চিবিয়ে খাবো! প্রথমজন বলে। শুরুতেই কোনো নৌকা পাওয়া যায়নি। আর রানার শিম ছাড়া আমারা কোনো কিছু খুঁজেও পাইনি, সেটা এখানে পাখিও এনে ফেলতে পারে।

আর মজার একটা বালিময় পুঁচকে উঠানের মতো কিছু একটা- এসব দেখে তোমরা দাবি করতে পারো না বাচ্চাগুলো এখানে দিনের পর দিন বসবাস করবার মতো বুদ্ধিমান কেউ। আমাদের এখানে আসার পরপরই পেছনে কোনো চিহ্ন ফেলে না রেখে বেমালুম গায়েব হয়ে গেছে! না, না-কোনো বাচ্চাই এতোটা বুদ্ধিমান হতে পারে না!

আমার মনে হচ্ছে তোমার কথাই ঠিক, টম বলে।

চলো যাই। দ্বীপের অদ্ভুত সব শব্দে আমি ক্লান্ত। যত তাড়াতাড়ি বাড়ি ফেরা যাবে, তত শিগগিরই সুখ ফিরে পাবো। বাচ্চগুলো কোথায় গেলো এই চিন্তাটা আমাকে কেবলই পীড়া দিচ্ছে। আশা করছি আমরা ওদের খুঁজে পাবো। এখন কেবল ওদের দেখে চমকে ওঠার পালা!

লোকগুলো পাহাড় থেকে নেমে তাদের নৌকাটা যেখানে রেখে এসেছে সেই সৈকতের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সময়, তাদের গলার আওয়াজ একে একে দূরে সরে যেতে থাকে। জ্যাক নিচু সুড়ঙ্গ দিয়ে ছোট্টগুহার ক্ষুদ্র প্রবেশপথের কাছে এসে থামে। সে ভেতরে ঢুকবার পথে কান পাতে এবং শুনতে থাকে।  

কণ্ঠস্বরগুলো বাতাসে ভেসে ভেসে তার কানে আসে। সে বৈঠা নিয়ে তৈরি হওয়ার শব্দ শুনতে পায়। নৌকাটিকে ধাক্কা দেওয়ার শব্দ শুনতে পায়। তারপর পানি ছিটাবার ছলাৎ ছলাৎ শব্দ।  
ওরা চলে যাচ্ছে! সে বলে। ওরা সত্যিই চলে যাচ্ছে! 

অন্যরা জ্যাকের চারপাশে ভিড় করে। তারপর, যখন বুঝতে পারে কাজটা নিরাপদ, ওরা সবাই তখন ক্ষুদ্র গুহামুখ গলে বেরিয়ে এসে পাহাড়ের পাশ দিয়ে হামাগুঁড়ি খেয়ে এগোতে থাকে। লম্বা ফার্নের আড়ালে লুকিয়ে থেকে ওরা নৌকা ভর্তি লোকের বৈঠা বেয়ে দূরে চলে যাওয়া দেখে-দূরে-বহুদূরে! বৈঠার ছলাৎ ছলাৎ শব্দ, আর লোকগুলোর কথা বলার আওয়াজ, ওখানে দাঁড়িয়ে থাকার সময় স্পষ্ট বাচ্চাদের কানে আসে।

নোরা হঠাৎই কাঁদতে শুরু করে। উত্তেজনাটা ছিল খুবই প্রকট, আর সে তখন অসম সাহসের পরিচয় দিয়েছে, তাই এখন তার মনে হচ্ছে তাকে অবশ্যই কাঁদতে হবে, কাঁদতে হবে, কাঁদতে হবে। তারপর পেগিও কাঁদতে শুরু করে- এমনকি মাইক আর জ্যাকও টের পায় ওদের চোখ জোড়া ভিজে এসেছে! খুব ভয়ানক একটা অভিজ্ঞতা- কিন্তু ওহ্, এমন একটা অভিজ্ঞতা তাদের আগে হয়নি তা জানতে পারা সত্যিই এক গৌরবময় অনুভূতি। এবং তাদের প্রিয় ছোট্ট দ্বীপ, রহস্য দ্বীপ, এবার আবারও আরেকবার তাদের নিজেদের হলো।

পাহাড়ের ভেতর থেকে শোকাতুর একটা হাম্বা ডাক বেরিয়ে আসে- অসহায় দুষ্টু ডেইজির ডাক, গুহায় একা ফেলে আসায় তার খুব মন খারাপ হয়েছে।  

বাচ্চারা এবার না হেসে পারে না! মনে আছে ডেইজি কীভাবে লোকগুলোকে ভড়কে দিয়েছে! জ্যাক বলে।  

ও আমাকেও ভয় পাইয়ে দিয়ে ছিল, পেগি বলে। সত্যি, আমি একটু হলেই আমার ত্বক ছেড়ে বেরিয়ে আসছিলাম- যদি জামাকাপড়ে ভালোমতো বোতাম আঁটা না থাকতো আমার বিশ্বাস তাহলে আমি নিজের ভেতর থেকেই বেরিয়ে আসতাম! 
কথাটা শুনে সবাই আরো জোরে হেসে ওঠে। এবং আধোহাসি, আধোকান্না করতে করতে ওরা গিয়ে পাহাড়ের পাশে বসে বসে নৌকাটির অদৃশ্য হওয়ার অপেক্ষায় থাকে।  

চলবে…

বাংলাদেশ সময়: ২১২০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৮
এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।