ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

রহস্য দ্বীপ (পর্ব-৯২)

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১১৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৪, ২০১৮
রহস্য দ্বীপ (পর্ব-৯২) রহস্য দ্বীপ

১৯. গুহার দিনগুলি
শীতটা কেমন করে গুহার ভেতর কাটাবে তা ঠিক করতে সপ্তাহজুড়ে বাচ্চারা সব ধরনের আগাম আয়োজন শুরু করে দেয়। এরই মধ্যে তাদের জিনিসপত্র নিরাপদে ভেতরের গুহায় জমা করে রাখা হয়েছে। বাইরের গুহাটিকে ঘরের মতো আরামদায়ক করে তোলা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। এই কাজে পেগির জবাব নেই।

তোমরা ছেলেদের দু’জন মিলে অবশ্যই গুহাটা ঘিরে কয়েকটা তাক বানিয়ে দেবে, সে বলে। শক্ত ডাল বুনেই সেটা বানানো সম্ভব, তারপর কোনোভাবে জুড়ে দিলেই হলো।

আমরা আমাদের বই, খেলনা, আর টুকটাক জিনিসপত্র যা ইচ্ছে ওখানে রাখতে পারবো। ছাদের মাঝ বরাবর কোনোভাবে লণ্ঠনটা ঝুলিয়ে রাখার একটা ব্যবস্থা করতে হবে। তারপর এখানে এই কোণার দিকে আমাদের ফার্ন আর গুল্মের বিছানা পাতবো। তোমরা ছেলেরাই ওগুলো নিয়ে আসবে। আশপাশের ফার্ন এখন পরিণত ও শুকনো মচমচে- ওসব দিয়ে চমৎকার বিছানা হবে।

পেগি গুল্মের ডালে বানানো একটা ব্রাশ দিয়ে গুহার মেঝেটা ঝাট দেয়। তারপর সে এবং নোরা মিলে ওর ওপর সৈকত থেকে আনা বালি ছড়িয়ে দেয়। তখন একে খুব সুন্দর দেখায়। ছেলেরা বিছানার জন্য গুল্ম আর ফার্ন নিয়ে আসে। পেগি ওগুলো আয়েশি ভঙ্গিতে সাজিয়ে প্রতিটি বিছানার ওপর একটা করে কম্বল বিছিয়ে দেয়, কেবল একটা ছাড়া। ওদের কাছে এখন তিনটে মাত্র কম্বল- দু’টা নতুন আর একটা পুরাতন। তাই খালি বিছানাটা দেখে যে কেউ ভেবে বসতে পারে ওভাবেই তাতে শুতে যেতে হবে।  

চার নম্বর বিছানাটা কীভাবে একটা কম্বল পাবে? জ্যাক জিজ্ঞেস করে।  

এবং তার পরপরই পেগি ভীষণ অবাক করা একটা জিনিস বের করে আনে! খরগোশের লোমশ চামড়ার একটা চাদর। খুব সতর্কভাবে পরিষ্কার করে, শুকিয়ে তারপর সে ওগুলো একসঙ্গে জোড়া দিয়েছে! সবাই বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে থাকে! 
কিন্তু কত সুন্দর, পেগি! জ্যাক বলে। সবচেয়ে সুন্দর পশমি চাদর! সেঁকা পাউরুটির মতোই গরম। রাতে আমরা এটা পালা করে ব্যবহার করবো।

অন্যদের মুখে তার পশমি চাদরের এতো প্রশংসা শুনে, সে খুশি হয়ে বলে। হ্যাঁ, আমিও সেটাই ভাবছিলাম। চমড়া সেলাই করা খুব কঠিন কাজ, তবে শেষ পর্যন্ত আমি সেটা পেরেছি। ভেবেছিলাম শীত নামার পর এটা সবার জন্য দারুণ একটা চমক হবে! 

শিগগিরই গুহাটিতে একটা ঘরোয়া ভাব চলে আসে। তাকগুলো বই আর খেলনার ভারে নুয়ে পড়ে। গুহার মাঝ বরাবর একটা লণ্ঠন ঝুলানো হয় এবং অভ্যস্ত হয়ে ওঠার আগপর্যন্ত ওর সঙ্গে সবার মাথা টোকা লাগে! পেছনের কোণায় কম্বল আর খরগোশের চাদরে মোড়া খুব পরিপাটি চারটে বিছানা পাতা। আরেক কোনে কেটলি, সসপ্যানসহ গৃহস্থালির টুকটাক সব জিনিসপত্র রাখা হয়েছে, যেগুলো সব সময়ই পেগির কাজে লাগে।  

তারপর জ্যাকও একটা চমক হাজির করে- তার বানানো ছোট্ট চমৎকার একটা টেবিল! বাচ্চাদের নিয়ে প্রথমবার দ্বীপে আসার মাসখানেক আগে সে পুরাতন এই গাছের তক্তাটা খুঁজে পায়। পেগির জন্য সুন্দর আর ছোট্ট একটা টেবিল বানাবে বলে বাজারে সদাই কেনার ফাঁকে একটা করাতও জোগাড় করে!

টেবিলটা খানিকটা নড়বড়ে। জ্যাক যতটা সোজা পারা যায় গাছের ওরকম শাখা দিয়ে টেবিলের চারটে পায়া বানায়, কিন্তু ঠিকমতো জুড়ে দেওয়া কষ্টকর হয়। সে তক্তাটাকে টুকরো করে কাটে এবং তারকাঁটা মেরে জোড়া দিয়ে টেবিলের ওপরের চারকোণা অংশটা বানায়, আর সেটা দেখতে খুবই সুন্দর। পেগি খুশি হয়!

এবার আমরা টেবিলে বসে খেতে পারবো! সে চিৎকার করে বলে। আহ্, ভালোই হবে! টেবিলের পাশে বসে আমি আমার সেলাইয়ের কাজও করতে পারবো। মেঝেতে ঝুঁকে থাকার চেয়ে অনেক সহজ হবে! 

চলবে…

বাংলাদেশ সময়: ২১১৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০১৮
এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।