কুয়েত থেকে: কুয়েতের প্রাণকেন্দ্র কুয়েত সিটির মুরগাব। সেখানে লিবারেশন টাওয়ারের সামনেই কয়েকটি শব্দ দৃষ্টি কেড়ে নেয়।
কৌতুহল নিয়ে "ঢু" মারতেই দেখা মিললো এক খণ্ড বাংলাদেশের। কাজ শেষে সবাই ব্যস্ত নিজেদের মধ্যে আলাপচারিতায়। কেউ চায়ের কাপে ঠোঁট ভিজিয়েছেন, কেউ আবার মুখে তুলেছেন ভাত। এদের মধ্যেই হাত বাড়িয়ে এগিয়ে এলেন একজন।
"আমার নাম জাফর আহমেদ চৌধুরী, আপনি বাংলানিউজের পক্ষ থেকে এসেছেন। আপনাকে স্বাগতম"।
বেশ কয়েকজন স্বদেশির উপস্থিতিতে এই সাদর অভ্যর্থনা নিঃসন্দেহে অবাক করার মতো। বুঝতে বাকি থাকার কথা নয়, বাংলানিউজ সরাসরি কুয়েতে, পাঠকের মুখোমুখি-এ খবর আর অজানা নেই কমিউনিটির!
তবে তার চেয়ে বেশি অবাক করে রেস্তোরাঁর কমিউনিটির আড্ডার সঙ্গে গরম গরম রসগোল্লা।
আড্ডা প্রিয় বাঙালির কর্মমুখর সপ্তাহের শেষে এই রেস্তোরাঁই যেন পরিণত হয়েছে প্রাণের মিলন মেলায়।
কবে এ দেশে এলেন? কীভাবেই বা ছড়িয়ে পড়লো "গুলশানের"নাম?
উত্তরে জাফর আহমেদ চৌধুরী বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরেই প্রবাসী। আবুধাবী, ওমান আর কাতার ঘুরে অবশেষে এ দেশেই শেকড় গাড়লাম। এসেছিলাম প্রফেশনাল ভিসায়। একাউনটেন্ট হিসেবে। পাশাপাশি নানা সেক্টরে ব্যবসা করে আজকের এই অবস্থানে। -যোগ করেন জাফর আহমেদ চৌধুরী।
বন্দরনগরী চট্টগ্রামের বাদুরতলা চক বাজারের হাজি ফয়েজ আহমেদের ছেলে জাফর আহমেদ চৌধুরী।
কমিউনিটির কাছে তার পরিচয় প্রিয় স্বজন। ভিনদেশে গুলশানের নামে হোটেলের নামকরণের কারণ হিসেবে তিনি বলেন, গুলিস্তান, গার্ডেন প্রভৃতি নামে রেস্তোরাঁর পর "জি" আদ্যাক্ষরের গুলশান নাম দিয়েছি এই রেস্তোরাঁর।
রেস্তোরাঁয় খেতে আসা সিলেটের আবুল হাসেম এনাম বাংলানিউজকে বলেন, গুলশান হোটেলের দেশি খাবারের স্বাদের জুড়ি নেই। পাশাপাশি টাটকা ছানার তৈরি টসটসে গরম রসগোল্লা মুখে দিতেই জুড়িয়ে যায় মন।
তিনি বলেন, এখানকার খাবার খেলে মনে হয় প্রবাসে নই, মাতৃভূমিতেই অাছি।
একই এলাকার আরেক প্রবাসী কমিউনিটির নেতা আব্দুস সালাম বাংলানিউজকে বলেন, সত্যিই এখানে এলে ভালো লাগে। তাই একটু অবসর পেলেই ছুটে আসি এখানে।
খুলনার মনিরুল ইসলাম মারুফ বাংলানিউজকে বলেন, হঠাৎ কাউকে ফোন করলাম, বললো গুলশানে আছি। তখন রসিকতা করে বলি, ভাই দেশে গেলেন কবে!
ফেনীর মো. আলী জিন্নাহ বাংলানিউজকে জানান, কমিউনিটির সভা, রাজনৈতিক দলের নানা কর্মসূচি সবকিছু মিলেমিশে থাকে রেস্তোরাঁর কেন্দ্রে।
জাফর আহমেদ চৌধুরী বলেন, লাভের জন্য আমি এই রেস্তোরাঁ খুলিনি। দেশের মানুষ এক চিলতে অবসর পেলেই সবান্ধব এখানে সমবেত হন। ভাগাভাগি করে নেন নিজেদের সুখ-দুঃখ। এটাই আমার আনন্দ। বলতে পারেন প্রাপ্তি।
আর এভাবেই বিগত ১৫টি বছর ধরে প্রবাসীদের হাসি, আনন্দ আর প্রেরণার স্বাক্ষী হয়ে আছে "গুলশান"।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৫৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৪, ২০১৫
** কুয়েতের অ্যাম্বাসেডর!
** জন্ম কুয়েতে, হৃদয় বাংলাদেশের
** সূর্য ওঠার আগেই ঘুম ভাঙে চট্টগ্রামের শাহজাহানের
** ধূসর মরুভূমিতে সবুজ স্বপ্ন!
** ফেসবুক বন্ধ, খুললো জুতা!
** লেট বিমান!